প্রত্যয় স্কিম নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাখ্যা প্রত্যাখ্যান করলেন শিক্ষকরা - দৈনিকশিক্ষা

প্রত্যয় স্কিম নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাখ্যা প্রত্যাখ্যান করলেন শিক্ষকরা

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

প্রত্যয় স্কিম সংক্রান্ত অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাখ্যা প্রত্যাখান করেছেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের মূল ফটকে অবস্থান কর্মসূচিতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের মহাসচিব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক নিজামুল হক ভূইয়া এ ঘোষণা দিয়েছেন।  

তিনি বলেছেন, ‘প্রত্যয় স্কিম প্রত্যাহার করে আগামী বছর সেবক নামে যে স্কিম হচ্ছে ওখানে সবার জন্য যে সুযোগ-সুবিধা হবে আমরা সেখানে যাব। কোনো অসুবিধা তো নাই। দেশের স্বার্থে সবার জন্য যা হবে আমাদের জন্য তা হবে।’ পাশাপাশি তাদেরকে সুপার গ্রেডও দিতে হবে জানান তিনি।

এর আগে প্রত্যয় স্কিম নিয়ে ‘সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা’ দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ৬৫ বছরে অবসর সুবিধা, পদোন্নতির ক্ষেত্রে সার্ভিস প্রটেকশন ও পে প্রটেকশন সুবিধা, পিআরএল ছুটি বহালের কথা জানানো হয়।

এ ব্যাখ্যার প্রতিক্রিয়া জানিয়ে অধ্যাপক নিজামুল হক ভূইয়া বলেন, এতদিন কোথায় ছিল। আমরা এতদিন বিবৃতি-স্মারকলিপি দিয়েছি, সংবাদ সম্মেলন করেছি। সাড়ে তিন মাস আগে যদি আমরা জানতাম বয়সসীমা ঠিকই আছে তাহলে শিক্ষকরা এত ক্ষুব্ধ হত না। এখন আন্দোলন স্তিমিত করার জন্য একটা একটা ব্যবস্থা করছে।

তিনি বলেন, সরকারি কর্মকর্তাদের আমরা বিশ্বাস করি না। ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে যেভাবে তারা আমাদের রাস্তায় নামিয়েছে। সুপার গ্রেড আমাদের দেয়নি। সেসময় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমরা কথা বলেছি, একটি কমিটিও হয়েছে। তবে নয় বছরেও আমরা সুপার গ্রেড পাইনি। তখনও আশ্বাস দিয়েছে। সুতরাং আশ্বাস দিলে হবে না। প্রধানমন্ত্রী আমাদের নিয়ে বসতে হবে। আমাদের সুপার গ্রেড দিতেই হবে।

তিনি আরও বলেন, আপনারা আগামী বছর সেবক আনবেন সেবকে কী সুযোগ সুবিধা আছে। সুযোগ সুবিধা আমরা দেখব। সর্বজনীন হলে আমরা কেন যাব না। কিন্তু আমাদের আলাদাভাবে যাব না সেখানে।

এ সময় শিক্ষার্থীদের স্পেশাল ক্লাস-পরীক্ষার মাধ্যমে ক্ষতি পুষিয়ে দেয়া হবে বলে জানান অধ্যাপক নিজামুল। তিনি আরও বলেন, এটা দুঃখজনক। শিক্ষার্থীদের ক্লাসে না নিয়ে আমরা আন্দোলন করছি। তবে যে ক্ষতি হবে স্পেশাল ক্লাস-পরীক্ষা নিয়ে পুষিয়ে দেয়া হবে।

শিক্ষার্থীদের চরম ভোগান্তি

এদিকে প্রত্যয় স্কিম প্রত্যাহারের দাবিতে সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে রয়েছেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সকল দাপ্তরিক কাজে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়, অধিভুক্ত-উপাদানকল্প ১৯৮ টি কলেজের শিক্ষার্থী ও সেবাপ্রার্থীরা। এমন পরিস্থিতিতে অন্তত মার্কশিট, সনদ, ট্রান্সক্রিপ্ট শাখা খুলে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা। এ দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিও বন্ধ রয়েছে।

আজ মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন ঘুরে দেখা গেছে, দ্বিতীয় তলায় কেন্দ্রীয় ভর্তি অফিস রুম সহ প্রায় সকল রুমেই তালা ঝুলানো। কিছু কিছু রুম খোলা থাকলেও নেই কোন কর্মকর্তা-কর্মচারী। প্রশাসনিক ভবনের তৃতীয় তলায় একই চিত্র দেখা দিয়েছে। প্রশাসনিক ভবনের তিন তলায় মার্কশিট, সনদ, ট্রান্সক্রিপ্ট শাখার রুমগুলোতেও নেই কোন জরুরি সেবা। অনেক শিক্ষার্থী এসে ফিরে যাচ্ছেন।

ট্রান্সক্রিপ্ট শাখার সামনে দাড়িয়ে থাকতে দেখা যায় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে। ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান এসেছেন ট্রান্সক্রিপ্ট তুলতে তবে তিনি জানতেন না কর্মবিরতির কথা। তিনি বলেন, আমি একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করি। অফিস থেকে ছুটি নিয়ে এসেছি ট্রান্সক্রিপ্ট তুলতে। কিন্তু এখানে সবগুলো রুমেই তালা লাগানো। কোন কর্মকর্তাকেও দেখতে পাচ্ছিনা। এমন পরিস্থিতিতে তিনি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জরুরি কিছু সেবা চালুর আহ্বান জানিয়েছেন।

আসলাম হোসেন নামে আরেক সেবাপ্রার্থী বলেন, আজকেসহ তিনদিন এসে দ্বারে দ্বারে ঘুরছি, তবুও সনদ তুলতে পারিনি। আমার ৪ জুলাই ভাইভা রয়েছে চাকরির, আমার সনদ খুবই প্রয়োজন। খুব বিপদে আছি।

এ সব বিষয়ে জানতে চাইলে কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক ও ঢাবি অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুল মোতালেব বলেন, মার্কশিট সনদ ইত্যাদি সেবা চালুর বিষয়ে আমরা বসে একটি সিদ্ধান্ত দিব। তবে আমাদের সর্বাত্মক কর্মবিরতি চলছে। তারই অংশ হিসেবে দাপ্তরিক সেবা বন্ধ রয়েছে। সরকার দাবি মেনে নিলে আমরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নিব।

এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারিক অধ্যাপক নাসির উদ্দীন মুন্সী বলেন, লাইব্রেরি খোলার কোনো নির্দেশনা শিক্ষক সমিতি থেকে পাইনি। কর্মবিরতি বন্ধ হলে লাইব্রেরি খুলে দেয়া হবে।

শিক্ষক নিয়োগ গতিশীল করতে এনটিআরসিএকে নির্দেশ - dainik shiksha শিক্ষক নিয়োগ গতিশীল করতে এনটিআরসিএকে নির্দেশ মূল্যায়নের প্রশ্নপত্র ছড়ালে ব্যবস্থা - dainik shiksha মূল্যায়নের প্রশ্নপত্র ছড়ালে ব্যবস্থা কোটা নিয়ে এতো কীসের আন্দোলন: প্রধান বিচারপতি - dainik shiksha কোটা নিয়ে এতো কীসের আন্দোলন: প্রধান বিচারপতি কোটা আন্দোলন: বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ডাক - dainik shiksha কোটা আন্দোলন: বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ডাক সর্বজনীন পেনশন বাতিল দাবিতে শিক্ষকদের চতুর্থ দিনের কর্মবিরতি চলছে - dainik shiksha সর্বজনীন পেনশন বাতিল দাবিতে শিক্ষকদের চতুর্থ দিনের কর্মবিরতি চলছে সিলেটের ৮৭ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ষাণ্মাসিক মূল্যায়ন স্থগিত - dainik shiksha সিলেটের ৮৭ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ষাণ্মাসিক মূল্যায়ন স্থগিত কোটা আন্দোলনকারীদের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা - dainik shiksha কোটা আন্দোলনকারীদের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা এইচএসসির ইংরেজি প্রথম পত্র পরীক্ষায় অনুপস্থিত সাড়ে ১২ হাজার, বহিষ্কার ৪৩ - dainik shiksha এইচএসসির ইংরেজি প্রথম পত্র পরীক্ষায় অনুপস্থিত সাড়ে ১২ হাজার, বহিষ্কার ৪৩ কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে র‌্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকা কলেজগুলোর নাম এক নজরে - dainik shiksha র‌্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকা কলেজগুলোর নাম এক নজরে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0053520202636719