দৈনিক শিক্ষাডটকম, মাদারীপুর: মাদারীপুরের ডাসারে অর্থের বিনিময়ে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ উঠেছে চলবল উচ্চবিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বিমল মল্লিকের বিরুদ্ধে।
রোববার (১৯ মে) বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্যসহ স্থানীয়রা।
লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে জানা গেছে, ডাসার উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়নের চলবল উচ্চবিদ্যালয়ে গত ১৭ মে (শুক্রবার) প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ওই পরীক্ষায় বিদ্যালয়ের সভাপতি তার পছন্দের প্রার্থীকে চাকরি দিতে টাকার বিনিময়ে প্রশ্নপত্র ফাঁস করে লোক দেখানো লিখিত ও ভাইভা পরীক্ষা নিয়ে জুয়েল রায় নামে একজনকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেন।
বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয়ভাবে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। এতে চাকরিপ্রার্থী নয়জনের পরিবর্তে মাত্র চারজন পরীক্ষায় অংশ নেন।
অভিযোগপত্র থেকে আরও জানা যায়, চলবল উচ্চবিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বিমল মল্লিক ৭ লাখ টাকার বিনিময়ে পরীক্ষার আগের রাতে জুয়েল রায়কে প্রশ্ন সরবরাহ করেন।
প্রধান শিক্ষক প্রার্থী দীপংকর হালদার বলেন, ‘গত ১৬ মে (বৃহস্পতিবার) রাতে শশিকর কলেজের পশ্চিম পাশে নির্জন জায়গায় উত্তম হালদারের উপস্থিতিতে বিমল মল্লিক আমার কাছে ৫ লাখ টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেওয়ার প্রস্তাব দেন। আমি তা নাকচ করে দিই। টাকার বিনিময়ে চাকরি নিতে আমি অস্বীকার করি।’
এই বিষয়ে স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য অরুন মল্লিক বলেন, ‘চলবল স্কুলের প্রধান শিক্ষক পদে নয়জন প্রার্থী আবেদন করেছিলেন। নিয়োগ পরীক্ষায় অনিয়মের তথ্য ছড়িয়ে পড়লে পাঁচজন প্রার্থী নিয়োগ বোর্ডের ওপর আস্থা হারিয়ে পরীক্ষায় অংশ নেননি। এতেই প্রমাণ হয়, এই নিয়োগে অনিয়ম হয়েছে। এই নিয়োগের অনিয়মগুলো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি রক্ষা করবে।’
স্থানীয় বাসিন্দা শচীন্দ্র নাথ বাড়ৈ বলেন, ‘স্কুলটি দীর্ঘদিন ধরেই অনিয়ম চলছে। বর্তমান সভাপতি তিনি তার নিজের ইচ্ছেমতো এই প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন। কখন কী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন, তা ম্যানেজিং কমিটির অনেক সদস্যকে জানান না। আমি মনে করি, এই স্কুলের শিক্ষক নিয়োগে অর্থের বিনিময়ে প্রশ্নপত্র ফাঁস করে পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগের অভিযোগের সত্যতা তদন্ত করলেই বেরিয়ে আসবে।’
অভিযোগের বিষয়ে চলবল উচ্চবিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বিমল মল্লিক বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’
এই বিষয়ে মাদারীপুর জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. হাবিব উল্লাহ খান বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। কেউ যদি লিখিত অভিযোগ আমার কাছে দেয়, তাহলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আর সত্যতা পাওয়া গেলে নিয়োগ বাতিলের সুপারিশ করা হবে।’