দৈনিক শিক্ষাডটকম, রৌমারী (কুড়িগ্রাম) : দুর্নীতি, অনিয়ম, অনুপস্থিতি, স্বেচ্ছাচারিতা, অসদাচরণ, যৌন হয়রানি ও অর্থ আত্মসাতসহ নানা অভিযোগের কারণে খেরুয়ারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মসিহুর রহমানের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মঙ্গলবার সকালে কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার নয়ারহাট ইউনিয়নের খেরুয়ার চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও সচেতন নাগরিক সমাজের উদ্যোগে ঘন্টাব্যাপী এ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে গচ্ছগ্রাম থেকে এলাকাবাসীসহ শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও সচেতন নাগরিক সমাজের লোকজন প্রধান শিক্ষক মসিহুর রহমানের অপসারণের দাবিতে মিছিল করে খেরুয়ারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এসে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভায় অংশগ্রহণ করে প্রধান শিক্ষকের নানা অভিযোগ তুলে ধরে বক্তব্য প্রদান করেন।
প্রতিবাদ সভায় বক্তারা বলেন, খেরুয়ার চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদানের পর থেকে তিনি সীমাহীন দুর্নীতি, অনিয়ম করে যাচ্ছেন। এসবের অভিযোগ দিলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এক মাসে বিদ্যালয়ে দুই থেকে তিনদিন উপস্থিত থাকলেও বাকি ২৭ দিন অনুপস্থিত থাকেন অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও সহকারী শিক্ষকদের সাথে খারাপ আচরণ, খারাপ ভাষায় গালিগালাজ করেন তিনি। তাছাড়া প্রধান শিক্ষক মসিহুর রহমান সরকারি বিভিন্ন উন্নয়নমূলক বরাদ্দের টাকা কাজ না করে তিনি আত্মসাত করেন এবং বিদ্যালয়ের সোলার, ব্যাটারি, পানির ট্যাঙ্ক, পানির পাম্প (মোটর), শিক্ষার্থীদের বসার ব্রেঞ্চসহ নানা আসবাবপত্র তিনি নিজ বাড়িতে ব্যবহার করছেন এবং কিছু জিনিসপত্র বিক্রি করে দিয়েছেন।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের সভাপতি মোনছুর আহমেদ দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, আমার স্বাক্ষর জাল করে সরকারি বরাদ্দের টাকা উত্তোলন করেন প্রধান শিক্ষক। অভিযোগ দিলেও কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয়নি। তিনি কোমলমতি শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানি করেন। সরকারের কাছে আকুল আবেদন এ প্রধান শিক্ষককে কঠোর শাস্তির মাধ্যমে বিদ্যালয় থেকে সরিয়ে দিলে লেখাপড়াসহ নানা সমস্যার সমাধান হবে। তা না হলে দিন দিন আরো খারাপ পর্যায়ে যাবে।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মসিহুর রহমান বলেন, আমার সহকারী তিনজন শিক্ষকের কারসাজিতে এলাকাবাসী, শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের ব্যবহার করছেন। আমি কোনো শিক্ষিকাকে যৌন হয়রানি করিনি। তিনি (শিক্ষিকা) আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দেয়ায় পরে কর্তৃপক্ষ তাকে (শিক্ষিকা) সরিয়ে দিয়েছে। আর বরাদ্দকৃত টাকা আত্মসাত করিনি। তবে আসবাবপত্রের বিষয় জানতে চাইলে তিনি প্রশ্নটি এড়িয়ে যান।
এ ব্যাপারে চিলমারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (টিও) আবু সালেহকে একাধিকবার ফোন দিলেও রিসিভ করেননি। পরে পরিচয় দিয়ে বক্তব্য জানতে তার হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে মেসেজ দিলেও কোনো উত্তর দেননি।
এ প্রসঙ্গে চিলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মিনহাজুল ইসলাম বলেন, মানববন্ধনের বিষয়ে শুনেছি, এ ঘটনায় তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি।