ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) পরিচালক অধ্যাপক ড. ওয়াহিদুজ্জামান চাঁন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শিক্ষকদের নিয়ে যা বলেন তার উল্টো হয়। প্রধানমন্ত্রী চীন সফরের আগেও বলেছেন, যেনো কাউকে বঞ্চিত করা না হয়। অথচ শিক্ষকদের পেনশন কেটে নেয়া হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) টানা ১১তম দিনের সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি৷
তিনি বলেন, শিক্ষকদের সঙ্গে তামাশা হচ্ছে। একবার বলছেন, শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন আবার বলছেন বসবেন না৷ প্রধানমন্ত্রী চীন সফরের আগে বলেছেন, কেউ যেনো বঞ্চিত না হন। সার্বজনীন পেনশন স্কিম করা হয়েছে, কিন্তু যেনো কেউ বঞ্চিত না হন।
এ সময় অধ্যাপক ড. আব্দুর রহিম বলেন, শিক্ষকেরা জয় লাভ করেলে সরকার পরাজিত হবে না। শিক্ষকেরা জয় লাভ করলে আমলাতন্ত্রও পরাজিত হবে না। আমাদের আন্দোলন কাউকে পরাজিত করতে নয়৷
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ফেডারেশনের সভাপতি আখতারুল ইসলাম বলেন, কারা জাতিকে মেধাশূন্যের কাজে নির্লিপ্ত করছে। শিক্ষকেরা যেহেতু শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছেন, তাই তারা পার পেয়ে যাচ্ছেন। আর তারা শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চাচ্ছেন না। কেউ শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করার প্রয়োজনই মনেই করছেন না৷ আলোচনা করলে এক দিনেই সমস্যার সমাধান হওয়া সম্ভব। আমরা চাই আপনারা শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন। একদিন প্রকাশ্যে আলোচনায় বসবেন।
ঢাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিনাত হুদা বলেন, এই যে চল্লিশটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে আছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে গেলে কার কতো লাভ। যারা এ ধরনের কুটচাল করছেন তাদের সন্তানরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়েই পড়ে না। আমি পরিসংখ্যান দিয়ে দেখিয়ে দেবো কার কার সন্তান কোনো কোনো দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন।
তিনি আরো বলেন, আমাদের অর্বাচীন মনে করেছেন তারা। শিক্ষকেরা কোনো কাজ করেন না। শুধু বেতন তোলেন। তাহলে কাজ করেন কারা। অনেকে বলেন, কয়টা ক্লাস নেন? শুধু ক্লাস নেয়াই কি শিক্ষকদের কাজ।
নামের আগে ড. আর ব্যারিস্টার লাগিয়ে বড় বড় কথা বলছেন৷ খালি কলসি বাজে বেশি। বিলেত আর অ্যামেরিকা আমাদের চেনা আছে। এ আন্দোলন সামগ্রিকভাবে সব শিক্ষকদের। শিক্ষকদের মাথা কখনো কোনোভাবে অবনত হবে না কোনো অপশক্তির কাছে, যোগ করেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ফেডারেশনের মহাসচিব অধ্যাপক ড. নিজামুল হল ভূইয়া বলেন, আমাদের অনেকের সঙ্গে টকশোতে গিয়ে তারা আর যুক্তি দেখাতে পারেন না। আপনাদের উচিত ছিলো বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বসার। আপনারা নিজেরা প্রধানমন্ত্রীকে বুঝিয়ে ছিলেন যে এটা করলে এটা হবে। আর কতোকাল প্রধানমন্ত্রীকে কষ্ট দেবেন? আমাদের দাবি মেনে না নেয়া পর্যন্ত আন্দোলন থেকে একপাও পিছু হটবো না।