চলমান কোটা আন্দোলন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
রোববার (৭ জুলাই) সকালে বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দেয়া বক্তব্যে কোটা আন্দোলন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থীরা পড়ালেখায় মনোযোগী না হয়ে আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলনের কোনো যৌক্তিকতা দেখি না।
এ বিষয়ে কোটা আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র মাহিন সরকার বলেন, ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে কোটা সংস্কারের আন্দোলনে আমরা কোটা বাতিল চাইনি। সেসময় সংসদকে তোয়াক্কা না করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় যখন পরিপত্র জারি করে তখন সংসদের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠেছিল। আজকে প্রধানমন্ত্রীর এধরণের বক্তব্য আমাদের কাছে আকস্মিক লেগেছে। আমরা এই বক্তব্যকে প্রত্যাখ্যান করছি।
কোটাবিরোধী আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, আমার মনে হয় প্রধানমন্ত্রীর আরেকটু ভেবে এ ধরণের কথা বলা উচিৎ ছিলো। আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মান করছি না। আমরা পৌষ্য কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি। প্রতিবন্ধী, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য কোটা আমরা চাই কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের পরে তাদের সন্তান, নাতি- নাতনিদের জন্য এত বেশি কোটা আশাব্যঞ্জক নয়। আমরা এর যৌক্তিক সংস্কার চাই। প্রধানমন্ত্রী যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন আমরা চাই সেটা মেধাবীদেরকে দিয়েই হোক।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী বাংলা বিভাগের মোসাদ্দেক বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে আশারবাণী শুনতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে ছাত্রসমাজ দারুণভাবে আশাহত হয়েছে। আমরা দৃঢ়তার সাথে বলতে চাই, শিক্ষার্থীরা অযৌক্তিক কোন আন্দোলন করছেন না। বাংলাদেশের ইতিহাস বলে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় ছাত্রজনতার আন্দোলনের মুখেই বঙ্গবন্ধুসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়েছিল। সুতরাং আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা অযৌক্তিক কোন কিছু নয়। ছাত্র-জনতার জন্যই আইন, আইনের জন্য ছাত্রজনতা নয়।
তিনি আরো বলেন, আদালত যে রায় দিয়েছে তা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। সংবিধানের কোথাও কোটা শব্দটির উল্লেখ নেই। সংবিধান সব সরকারি চাকরি ক্ষেত্রে সুযোগের সমতার কথা বলেছে। সেখানে দাঁড়িয়ে আদালতের এই রায় কোনভাবেই ন্যায়বিচার হতে পারে না। তাই ছাত্রসমাজ রাজপথে আন্দোলন করার মাধ্যমেই কোটা পদ্ধতি সংস্কার করে সব ধরনের বৈষম্য দূর করবে।