ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য মহারাষ্ট্রের মুম্বাইয়ে ব্যাপক বৃষ্টিপাত হয়েছে। প্রবল এই বৃষ্টির জেরে শহরটিতে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। তবে শহরেরও কোথাও বড় ধরনের জলাবদ্ধতার কোনো খবর পাওয়া যায়নি। অবশ্য বৃষ্টির জেরে মুম্বাইয়ের স্কুল ও কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় মুম্বাই ও এর শহরতলিতে ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে এবং কিছু এলাকায় অতি ভারী বর্ষণ হয়েছে বলে কর্মকর্তারা বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন। এছাড়া আজ সকাল থেকেও শহরে অবিরাম বৃষ্টিপাত হচ্ছে। তবে বৃষ্টির জেরে নিচু এলাকায় বড় ধরনের জলাবদ্ধতার কোনো খবর পাওয়া যায়নি বলে তারা বলেছেন।
ভারতের আবহাওয়া দপ্তরের (আইএমডি) মুম্বাই কেন্দ্র বৃহস্পতিবার শহরটিতে ‘ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির’ পূর্বাভাস দিয়েছে। এছাড়া মুম্বাই মহানগরের জন্য ‘রেড অ্যালার্ট’ সতর্কতা জারি করে আইএমডি।
এদিকে আইএমডি মহানগরের জন্য ‘লাল সতর্কতা’ জারি করার পরে বৃহস্পতিবার শহরের সমস্ত সরকারি এবং বেসরকারি স্কুল ও কলেজে ছুটি ঘোষণা করেছে বৃহন্মুম্বাই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন (বিএমসি)।
মুম্বাই সিভিক কমিশনার এবং প্রশাসক ইকবাল সিং চাহাল বলেছেন, ‘বিএমসি সমস্ত নাগরিককে সতর্ক থাকার, বাড়ির ভেতরে থাকার এবং প্রশাসনের নির্দেশাবলী অনুসরণ করার অনুরোধ করছে।’
মুম্বাইয়ের কোলাবা অবজারভেটরি ‘অত্যন্ত ভারী’ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে। যার পরিমাণ ২২৩.২ মিমি। এছাড়া ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ টার্মিনাসে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৫৩.৫ মিমি, রাম মন্দির এলাকায় ১৬১ মিমি, বাইকুলায় ১১৯ মিমি, সায়নে ১১২ মিমি এবং বান্দ্রায় ১০৬ মিমি বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে বলে আইএমডি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
একজন সিভিক কর্মকর্তা বলেছেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ‘শহর এবং শহরতলিতে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া ব্যুরো। এসময় দমকা হাওয়া ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৫৫ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে’।
অন্য এক কর্মকর্তা বলেছেন, মুম্বাই শহরে সকাল থেকে অবিরাম বৃষ্টিপাত হয়েছে। তবে নিচু এলাকায় কোনও বড় জলাবদ্ধতার খবর পাওয়া যায়নি। তবে বৃষ্টি ও সড়কে খানাখন্দের কারণে যানবাহন চলাচল কমে গেছে।
এদিকে দিল্লিতেও ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছে ভারতের আবহাওয়া দপ্তর। ফলে যমুনা নদীর পানির স্তর আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। বুধবার ভারী বৃষ্টির জেরে ভারতের এই জাতীয় রাজধানীর বহু এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। সেই সঙ্গে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজটের।
অন্যদিকে উত্তরপ্রদেশের নয়ডা এবং গ্রেটার নয়ডার পরিস্থিতিরও অবনতি হয়েছে। যমুনা এবং হিন্দন নদীর পানি বিপৎসীমা ছাড়িয়ে যাওয়ায় ১৭টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ৩১ হাজার বাসিন্দাকে ইতোমধ্যেই অন্যত্র সরানো হয়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে ১৬০০ হেক্টর জমি।
এছাড়া উত্তরাখণ্ড এবং হিমাচল প্রদেশের পরিস্থিতিও এখনও একই রয়েছে। বৃষ্টি আর ভূমিধসের জেরে বিপর্যস্ত ভারতের এই দুই রাজ্য। রাজধানী দেহরাদুনসহ উত্তরাখণ্ডের বেশ কিছু জেলায় হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
আর হিমাচল প্রদেশের ৯টি জেলায় কমলা সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া দপ্তর। এই নয়টি জেলা হচ্ছে- শিমলা, সোলান, মান্ডি, সিরমুর, বিলাসপুর, কাংড়া, চম্বা, হামিরপুর এবং উনা। আগামী তিন দিন এই জেলাগুলোতে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।