সব ধরনের প্রভাবমুক্ত শিক্ষক নিয়োগের জন্য শিক্ষক নির্বাচন কমিশন গঠনসহ একগুচ্ছ প্রস্তাব দিয়েছে বৈষম্য নিরসনে প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠন সমন্বয়ক পরিষদের নেতারা। তারা বলছেন, স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটি বিলুপ্ত করতে হবে। একইসঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষক হবার যোগ্যতাও নির্ধারণ করতে হবে।
শুক্রবার সকালে ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটিতে এক সেমিনারে এসব প্রস্তাব তুলে ধরেন তারা।
সেমিনারে প্রাথমিক শিক্ষার বর্তমান অবস্থা ও করণীয়, পরিসংখ্যান, বিদ্যালয় সময়সূচি, ভর্তির হার ও ঝরে পড়ারোধ, প্রাথমিক শিক্ষক হবার যোগ্যতা, পদোন্নতি, গ্রেডেশন, শিক্ষা বাজেট, ছুটি, বেতন-ভাতা বৈষম্যে দূর করার ওপর আলোচনা করেন অতিথিরা।
সেমিনারে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, আমাদের কাছে শিক্ষাটা এমনভাবে দাঁড়িয়েছে, আমরা শিক্ষা বলতে বুঝি একটা হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে কাগজের একটা সনদ অর্জন। যার মাধ্যমে নিজেকে কোনো প্রতিষ্ঠানে অর্থ যোগে নিয়োগ করা যায়। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাটা হলো সসীম, নির্দিষ্টতা আছে, পরিমাপযোগ্য। কারিকুলামে এমন কিছু বিষয় সংযোজন করা দরকার যেনো এই সসীমের মধ্যে অসীমের সন্ধান মেলে। আমাদের শিক্ষার্থীরা যেনো স্বশিক্ষার আলোর সন্ধানে ছুটে যায়। এই নির্দিষ্টতা যেনো জ্ঞান সমুদ্রে প্রবেশের পথ নির্দেশক হয়।
আরো পড়ুন:শিক্ষাব্যবস্থা সংস্কার নিয়ে যা বললেন ঢাবির সাবেক অধ্যাপক এম এম আকাশ
বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমাজের সভাপতি শাহিনুর আলম বলেন, আজকের শিশু আগামীর দেশ ও জাতির উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির সোপান। দেশ ও জাতির আগামীর প্রয়োজনেই এদেরকে দক্ষ, যোগ্য, অভিজ্ঞ, দেশপ্রেমিক, দায়িত্বশীল, বিজ্ঞানমনস্ক, অসাম্প্রদায়িক এবং বিশ্বায়নের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্ষম করে গড়ে তোলা জরুরি।
তিনি আরো বলেন, আমাদের দেশে প্রাক প্রাথমিক থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষা স্তর। কুদরাত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশন ও ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে শিক্ষানীতি অনুসারে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষা স্তর করা হয়েছে। যার ফলে প্রতি বছর কিছু কিছু প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পর্যায়ক্রমে ৮ম শ্রেণি চালু হচ্ছে। কিন্তু বিভিন্ন জটিলতায় বাস্তবায়নের অগ্রগতির পদক্ষেপ বড়ই ধীর।
আরো পড়ুন:বৈষম্য দূর করতে গিয়ে ৭১-এর চেতনাকেই ভুলে যাচ্ছেন: অধ্যাপক আজিজুর
ঢাকা বিশ্ববিধ্যালয়ের আর্ন্তজাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক তানজিমউদ্দিন খান বলেন, শিক্ষায় বিরাজমান বৈষম্য দূর করে দেশের সার্বিক বৈষম্য দূরীকরণের সুফলকে টেকসই করতে হবে। তাই শিক্ষাব্যবস্থার পুরো কাঠামোর যুগোপযোগী রূপান্তর ঘটাতে হবে। শিক্ষার সব স্তর নিয়ে একটি নিরবচ্ছিন্ন শিক্ষাকাঠামো তৈরি করতে হবে। আমি আশাকরি দেশের সব প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠন প্রাথমিক শিক্ষায় সংস্কার ও বৈষম্য দূর করার লক্ষে ঐক্যবন্ধভাবে কাজ করবেন।
আয়োজিত সেমিনারে আরো বক্তব্য দেন, বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. আবুল কাসেম, বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমাজের সভাপতি শাহিনুর আল-আমীন, বাপ্রা সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি অজিতপাল, ঢাকা বিশ্ববিধ্যালয়ের আর্ন্তজাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক তানজিমউদ্দিন খান, বাংলাদেশ সপ্রাবি প্রধান শিক্ষক সমিতির নেতা মো. বদরুল আলম, বাপ্রা সহকারী শিক্ষক সমিতির মো হাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ সভাপতি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক প্রফেসর খোরশেদ আলম ভূঞাসহ আরো অনেকে।