দৈনিক শিক্ষাডটকম, কুবি: কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষক সমিতির নবনির্বাচিত কমিটি গঠনের পর উপাচার্য কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাতে গেলে উপাচার্যের সাথে উচ্চবাচ্য বিনিময় হয় শিক্ষকদের। এ ঘটনায় কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। এরপর থেকেই গত দুইদিন যাবৎ অস্থিরতা বিরাজ করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষকদের মধ্যে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ধারণকৃত ভিডিওর মাধ্যমে জানা যায়, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বিকাল চারটার দিকে উপাচার্য দপ্তরে নতুন কমিটির সদস্যরা দেখা করতে গেলে সেখানে উপাচার্যের সাথে উচ্চবাচ্য বিনিময় হয় শিক্ষকদের। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি-রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ জাকির হোসেন ওই কক্ষে প্রবেশ করেন ও শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. মোকাদ্দেস উস ইসলামের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। পরবর্তীতে উপাচার্য কার্যালয়ে অতর্কিত এসে উচ্চবাচ্য শুরু করেন বেশ কিছু সাবেক ছাত্র ও শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মী।
পরবর্তীতে উপাচার্য তার কক্ষ ত্যাগ করলেও প্রায় সাত ঘণ্টা অবস্থানের পর শিক্ষকদের পক্ষে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের নিরাপত্তাহীনতার কারণ দেখিয়ে রাত একটার দিকে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। জিডিতে ওই কর্মকর্তা, সাবেক শিক্ষার্থীসহ নয় জন ছাড়াও অজ্ঞাতনামা আরও ২০ থেকে ৩০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
ইতোমধ্যেই প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনা, প্রক্টর ও প্রভোস্টের প্রতি অনাস্থা দেখিয়ে বিভিন্ন পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গণমাধ্যম উপদেষ্টা, বঙ্গবন্ধু হলের প্রভোস্ট, শেখ হাসিনা হলের হাউস টিউটর এবং দুই সহকারী প্রক্টর।
এ সব ঘটনা নিয়ে গত ২০ ফেব্রুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলনে কুবি শিক্ষক সমিতির নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক জানান, সমিতির পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দৃশ্যমান নিরাপত্তা বিধান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার জাকির হোসেনসহ অন্য উচ্ছৃঙ্খল কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠনের মাধ্যমে যথাযথ শাস্তি নিশ্চিতকরণ, নিরাপত্তা বিধানে ব্যর্থ প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকীর অপসারণ ও তদন্তপূর্বক বিচারের ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ক্যাম্পাস থেকে বহিরাগত সন্ত্রাসী ও অছাত্রদের চিহ্নিত করে তাদের গ্রেপ্তারপূর্বক বিচার নিশ্চিত করার জোর দাবি জানাচ্ছি।
এর সূত্র ধরে ২১ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) প্রথম প্রহরে শিক্ষক সমিতির নেতৃত্বে শহীদ মিনারে মৌন মানববন্ধন করেন শিক্ষকরা।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন গণমাধ্যমকে বলেন, ঘটনার শুরুতে সৌজন্য সাক্ষাতে এসে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অসৌজন্যমূলক আচরণ করছিলেন, রাজনৈতিক বক্তব্য দিচ্ছিলেন। যা খুবই অসম্মানের বিষয় আমার জন্য। তাই আমি উঠে চলে আসি। এমন উচ্চবাচ্য শুনেই বাইরে থেকে কয়েক কর্মকর্তা-কর্মচারী রুমে ঢুকলে প্রক্টরিয়াল বডির মাধ্যমে তাদের বের করে দেই। শিক্ষকদের কোনো দাবি থাকলে আমরা অবশ্যই আলোচনায় বসব, নিয়মের মধ্যে যতটুকু করা যায় করব। তাই বলে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি তারা করতে পারেন না।