একটি জাতির উন্নতির চাবিকাঠি হচ্ছে সে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা। আর সেই শিক্ষাব্যবস্থার পূর্ণাঙ্গ রূপদান করেন শিক্ষকেরা। একটি শিশুর সুন্দরভাবে বেড়ে উঠতে প্রয়োজন সুন্দর পরিবেশ। সেই সঙ্গে উন্নত শিক্ষাব্যবস্থা। শিক্ষার প্রাথমিক স্তর হচ্ছে প্রাথমিক বিদ্যালয়। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক মনের মাধুরী মিশিয়ে মনোরম পরিবেশে শিক্ষা দিয়ে থাকেন। অথচ আমার সোনার বাংলায় প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকেরা আজও তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী। এটা শিক্ষকদের জন্য একটি লজ্জাজনক অধ্যায়।
প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের নিয়োগ যোগ্যতা স্নাতক। যোগ্যতানুযায়ী সহকারী শিক্ষকেরা ১০ম গ্রেডের অধিকার রাখে অথচ শিক্ষকদের ১৩তম গ্রেডে রাখা হয়েছে। দ্রব্যমূল্যের দাম হু হু করে বাড়ছে অথচ শিক্ষকদের বেতনের পরিমাণ ছোটই রয়েছে।
স্নাতক যোগ্যতায় সরকারের অন্যান্য ডিপার্টমেন্ট এর কর্মচারীরা ১০ম গ্রেডে বেতন ভাতা পাচ্ছেন। তাহলে শিক্ষকদের বেলায় বৈষম্য কেনো? সম্প্রতি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষকদের বেতন গ্রেড একধাপ উন্নীতকরণের প্রস্তাব করেছেন এবং বলা হয়েছে শিক্ষকদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে এটি খুবই প্রয়োজন। বর্তমানে সহকারী শিক্ষকদের ১৩তম গ্রেডে মূলবেতন ১১ হাজার টাকা, অন্যদিকে প্রস্তাবিত ১২তম গ্রেডে মূলবেতন ১১ হাজার ৩০০ টাকা। এতে বৃদ্ধি পাবে মাত্র ৩০০ টাকা। এই ৩০০ টাকা বৃদ্ধি পেলেই সহকারী শিক্ষকদের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে?
উন্নত রাষ্ট্রে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ভিআইপি মর্যাদা দেয়া হয় এমনকি তাদের বেতনও অনেক। এমন সুবিধা পেলে শিক্ষার মান অবশ্যই উন্নত হবে। উন্নত জাতি গড়তে হলে শিক্ষকদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে হবে। তবেই মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা সফল হবে। তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীর নিকট থেকে প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা তৈরি করবেন অথচ প্রাপ্য যোগ্যতা অনুযায়ী বেতন গ্রেড দিবেন না, এটা বৈষম্য ছাড়া আর কিছু নয়। প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের নিয়োগ যোগ্যতা অনুযায়ী ১০ম গ্রেড পেতে কোনো বাঁধা থাকার কথা নয়।
প্রধান উপদেষ্টা ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা একটু দৃষ্টি দিলেই বৈষম্যের অবসান হবে। আমরা দেশ গড়ার কাজে সবসময় প্রস্তুত। নিয়োগ যোগ্যতা অনুযায়ী সহকারী শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড দিন, লেখাপড়ার মান পাল্টে যাবে ইনশাআল্লাহ। সহকারী শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড দাবি নয়, আমাদের অধিকার।
লেখক: শিক্ষক, মমিনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়