ফ্রান্সে পুলিশের গুলিতে কিশোর নিহত হওয়ার জেরে শুরু হওয়া দাঙ্গার পঞ্চম দিনে মার্সেই শহরে ব্যাপক সহিংসতা হয়েছে।
রোববার বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণাঞ্চলীয় শহরটিতে অন্তত ৫৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
তবে রাজধানী প্যারিসে ভারী পুলিশের উপস্থিতির ফলে বিক্ষোভ কিছুটা কমে এসেছে বলে মনে হচ্ছে।
পুলিশের গুলিতে নিহত ১৭ বছর বয়সী কিশোর নাহেলের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার জন্য শনিবার প্যারিসে ব্যাপক জনসমাগম ঘটে।
প্যারিসের শহরতলি নানতেরে এই হত্যাকাণ্ডের পর মঙ্গলবার থেকে অনেক ফরাসি শহরে বিশৃঙ্খলা নেমে এসেছে।
একটি টুইট বার্তায়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড ডারমানিন আইন প্রয়োগকারীদের ‘সংকল্পবদ্ধ পদক্ষেপ’ এর প্রশংসা করেছেন যা একটি ‘শান্ত রাত্রি’ নিয়ে এসেছে।
শনিবার রাতে সারাদেশে প্রায় ৪৫ হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এদিন স্থানীয় সময় ভোর সাড়ে তিনটা পর্যন্ত ৪৮৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
এর আগে, শুক্রবার রাতে ১৩০০ এবং বৃহস্পতিবার ৯০০ জনেরও বেশি লোককে গ্রেফতার করা হয়।
অনলাইনে প্রচারিত ফুটেজে পুলিশকে শহরের লোকজনের বিরুদ্ধে কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করতে দেখা যায়। ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে মার্সেইয়ের কেন্দ্রস্থলে লা ক্যানেবিয়েরে সংঘর্ষ চলছে।
ফরাসি সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ওই এলাকায় এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে দাঙ্গাবাজ এবং অফিসারদের একটি বড় দলের মধ্যে লড়াই হয়েছে।
প্যারিসের আইকনিক শ্যাম্প-এলিসি বরাবর বিপুল সংখ্যক পুলিশ দেখা গেছে। বিক্ষোভকারীদের সেখানে জড়ো হওয়ার জন্য সোশ্যাল মিডিয়াতে আহ্বান জানানো হয়েছিল, কিন্তু পুলিশের উপস্থিতি তাদের বেশিরভাগকে দূরে রেখেছে বলে মনে হচ্ছে।
রাজধানীর পুলিশ জানিয়েছে, তারা ১২৬ জনকে গ্রেফতার করেছে। প্যারিস অঞ্চলে রাত ৯টার পর থেকে দ্বিতীয় রাতের জন্য সমস্ত বাস এবং ট্রাম বন্ধ করে দেয়া হয়।
ফরাসী প্রধানমন্ত্রী এলিজাবেথ বোর্ন শৃঙ্খলা বজায় রাখার প্রচেষ্টা পর্যবেক্ষণ করতে প্যারিসে জাতীয় পুলিশের কমান্ড কক্ষে উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে।
উত্তরাঞ্চলীয় শহর লিলে পুলিশের বিশেষ বাহিনীকে রাস্তায় নামতে দেখা গেছে। বিভিন্ন ছবিতে দমকলকর্মীদের গাড়িতে লাগা আগুন নেভাতে দেখা গেছে।
কর্মকর্তারা স্থানীয় মিডিয়াকে জানিয়েছেন, লিওঁ শহরে ২১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নিস এবং স্ট্রাসবার্গেও সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে।
ট্রাফিক চেকের জন্য থামতে অস্বীকার করার পরে নাহেল গুলিবিদ্ধ হন এবং জরুরি পরিষেবা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়ার পরে মারা যান।
নাহেলের মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা পর অনলাইনে শেয়ার করা একটি ভিডিওতে দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে গাড়ি থামানোর চেষ্টা করতে এবং একজন চালকের দিকে অস্ত্র তাক করতে দেখা গেছে।