দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক: বই কাউকে দুর্নীতি শেখায় না। প্রতিটি বই কোনো না কোনোভাবে আলো দেয়। কিন্তু বই পড়ার চর্চা মানুষ ভুলে যাচ্ছে। ক্রমাগত বই থেকে আলাদা হয়ে যাচ্ছে। যে কারণে সমাজে অসহিষ্ণুতা এবং উগ্রতা বেড়েছে। মানুষ মানুষকে সহ্য করতে পারছে না। যে মানুষ বই পড়ে, তার ভেতরটা পরিশীলিত হয়। তাই গ্রন্থাগারগুলোকে সব সময় জীবিত রাখতে হবে। এক্ষেত্রে পরিবার ও প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসতে হবে।
মঙ্গলবার (২৪ এপ্রিল) বিকেলে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র আয়োজিত বিশ্ব গ্রন্থকেন্দ্র ও গ্রন্থস্বত্ব দিবস-২০২৪ উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনাসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচকের বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম এসব কথা বলেন।
আমাদের সময়ে মানুষের হাতে বেশি টাকা ছিল না। বইয়ের দোকানও কম ছিল। তারপরও মানুষের হাতে হাতে বই ছিল এমন স্মৃতিচারণ করে সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, পরিবারগুলোতে এখন বইয়ের চর্চা নেই। আগে প্রত্যেক পরিবারে আলমারি ভর্তি বই ছিল। জন্মদিনে বাচ্চাদের বই কিনে দেওয়া হতো। এখন জন্মদিনে বাচ্চাদের খেলনা বন্দুক কিনে দেওয়া হয়। অথচ শিশুদের একটা বই দিলে নিশ্চিত থাকা যায়, সে বিপথে যাবে না। বইটা এমন এক জিনিস, যা শিশুদের ধরে রাখে।
তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় আসা ছাত্রদের পাঁচটি প্রশ্ন করলে একটার উত্তর পাওয়া যায়। কারণ তারা বই না, নোট বই পড়ে। পাবলিক লাইব্রেরিতে গিয়ে দেখা যায়, বিসিএস গাইড পড়ছে। যেন বিসিএস বইই পৃথিবীর একমাত্র পড়ার বই। এমন অবস্থা থেকে পরিত্রাণের পথ নেই। প্রতিটি পরিবার যদি বইবান্ধব না হয়, তাহলে কোনো গ্রন্থাগার সম্পূর্ণ কাজ করতে পারবে না।
ঘরে ঘরে পাড়ায় পাড়ায় লাইব্রেরি গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে খলিল আহমেদ বলেন, মানুষের মধ্যে শুদ্ধাচার এবং সদাচারের অভাব রয়েছে। বই পড়ার মধ্য দিয়ে তার দূর হবে। মিনার মনসুর বলেন, সমাজে রিডিং সোসাইটি গড়ে তুলতে হলে পরিবার থেকেই বই পড়ার চর্চা শুরু করতে হবে। অনুষ্ঠানের শুরুতে ৯টি বেসরকারি গ্রন্থাগার ও পাঠাগারের আয়োজনে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি সচিব খলিল আহমেদ। জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক কবি মিনার মনসুরের সভাপতিত্বে সভায় আলোচক ছিলেন দি ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী মাহরুখ মহিউদ্দিন। বেসরকারি গ্রন্থাগারের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন আনিসুল হোসেন তাজ ও খুদে পাঠক তেহেজিব মান্না।