কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে মাদকাসক্ত বখাটের বিরুদ্ধে দুই কলেজছাত্রীর উপর অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়ে একজন ছাত্রী বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। অপর ছাত্রীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। রবিবার সকালে উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের মাজগ্রাম জোরালপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
হাসপাতালে ভর্তি ওই ছাত্রীর নাম মোছা. শরিফা আক্তার শোভা (১৮)। তিনি ওই এলাকার কৃষক মো. শরিফুল ইসলামের মেয়ে। অপর ছাত্রী শেফালি খাতুন (১৮) একই এলাকার বজলুর রহমানের মেয়ে। তারা শিলাদহ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির (মানবিক) ছাত্রী। আর ওই বখাটের নাম মো.আশিক শেখ (২৫)। তিনি একই এলাকার মো. সলেমান শেখ ওরফে সলের ছেলে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কলেজ ছাত্রী শোভা ও শেফালীসহ ৮ -১০ জন ছাত্রী একটি কোচিং সেন্টারে পড়তে যাচ্ছিলেন। সে সময় বখাটে আশিক একটি দেশীয় অস্ত্র (সোল) হাতে নিয়ে তাদের পিছন থেকে তাড়া করে। ছাত্রীরা দৌড়ে পালানোর সময় দৌড়ানো অবস্থায় ওই বখাটে ছাত্রী শোভার মাথা লক্ষ্য করে আঘাত করে। তখন ওই ছাত্রী হাত দিয়ে ঠেকাতে গেলে তার ডান হাতের কয়েকটি আঙ্গুল কেটে আহত হয়।
ঘটনার সময় আহত শোভাকে উদ্ধার করতে গেলে ওই বখাটে শেফালীকেও আঘাত করে। এতে তিনি নীলাফোলা জখম হন। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক শোভার ডান হাতের আঙ্গুলে সাতটি সেলাই দিয়ে ভর্তি রেখেছেন। আর শেফালীকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ছেড়ে দেওয়া হয়।
সকাল ১১টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, মহিলা ওয়ার্ডের ৩ নং বেডে বসে আছেন আহত ছাত্রী শোভা। এসময় কথা হয় তার সাথে। তিনি বলেন, ৮-১০ জন বান্ধবী একসাথে কোচিং সেন্টারে যাচ্ছিলেন। সে সময় আশিক ধারালো সোল নিয়ে পিছন থেকে তাড়া করে। তাড়া খেয়ে তারা দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে তার মাথায় সোল দিয়ে কোপ মারলে তিনি হাত দিয়ে ঠেকাতে গেলে তার হাতের আঙ্গুল কেটে যায়।
আহত ওই ছাত্রীর পিতা শরিফুল ইসলাম বলেন, তার মেয়েকে হত্যার উদ্দেশ্যে বখাটে আশিক হামলা করেছে। তিনি থানায় মামলা করবেন বলে জানান।
হামলার শিকার আরেক ছাত্রী শেফালী বলেন, তার ডান হাতে সোল দিয়ে আঘাত করেছে ওই বখাটে। তিনি এঘটনার সুষ্ঠু বিচার প্রত্যাশা করছেন।
জানা গেছে, ঘটনার পর থেকেই ওই বখাটে পালিয়েছে। তবে তার বাবা সলেমান বলেন, তার ছেলে মাদকাসক্ত ও মানসিক ভারসাম্যহীন। দুর্ঘটনাবশত ঘটে গেছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. আকুল উদ্দিন বলেন, আহত ছাত্রীর হাতের আঙ্গুলে সাতটি সেলাই দেওয়া হয়েছে। তাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। তবে তিনি বিপদমুক্ত বলে জানান এই চিকিৎসক।
কুমারখালী থানার ওসি মো. মোহসীন হোসাইন বলেন, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।