নীলফামারীর ডিমলায় বখাটের ভয়ে সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রী দেড় মাসের বেশি সময় ধরে বিদ্যালয়ে যাচ্ছে না বলে জানা গেছে। নিজ বাড়ির চার দেয়ালে বন্দী জীবন কাটছে তার।
পরিবারটির অভিযোগ, এ ঘটনায় মেয়েটির বাবা চারজনের নাম উল্লেখ করে লিখিত অভিযোগ করলেও মামলা নেয়নি ডিমলা থানা-পুলিশ। মামলার জন্য এক উপপরিদর্শক (এসআই) ঘুষ দাবি করেন। পরে নীলফামারী আদালতের দ্বারস্থ হন তাঁরা।
অভিযুক্ত চারজন হলেন নুর আলম, নাসিরুল ইসলাম, আবু তৈয়ব আলী ও আবু সায়েদ। তাঁরা সবাই উপজেলার ছাতনাই এলাকার বাসিন্দা। তাঁদের মধ্যে নুর বেকার, নাসিরুল পশ্চিম ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের ছোট ভাই, তৈয়ব দলিল লেখক এবং সায়েদ সাবেক ইউপি সদস্য।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, নুর আলম ২৬ আগস্ট বিকেলে ঠাকুরগঞ্জ এলাকায় ওই শিক্ষার্থীকে লাঞ্ছিত করেন। এ সময় মেয়েটির চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এসে নুরকে আটক করে। পরে অভিযুক্ত অন্যরা এসে তাঁর পক্ষ নিয়ে এ বিষয়ে বাড়াবাড়ি না করার জন্য ভুক্তভোগীকে হুমকি দেন।
এ ঘটনায় ওই দিন সন্ধ্যায় চারজনের বিরুদ্ধে ডিমলা থানায় লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবা। অভিযোগ তদন্তের দায়িত্ব পান থানার এসআই নিসার আলী। মেয়ের বাবার অভিযোগ, এসআই নিসার তাঁদের অনেক ঘুরিয়ে পরে মামলা না করার জন্য চাপ দেন। দুই লাখ টাকার বিনিময়ে বিষয়টি আপস করতে বলেন। এতে রাজি না হলে মামলার খরচ বাবদ ২০ হাজার টাকা দাবি করেন এবং আসামিকে ধরিয়ে দিতে বলেন। এমন অবস্থায় তিনি ১০ সেপ্টেম্বর নীলফামারী আদালতে অভিযোগ দেন। এ বিষয়েও পুলিশ কোনো তদন্তে আসেনি। বরং আদালতে মামলা করায় এসআই নিসারসহ আসামিরা তাঁকে হুমকি দিচ্ছেন। ঘটনার পর থেকে ভয়ে বিদ্যালয়ে যাওয়া ছেড়ে দিয়েছে মেয়েটি।
তবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে এসআই নিসার আলী বলেন, ‘শিক্ষার্থীর পরিবারের অভিযোগ মিথ্যা। অভিযোগ তদন্তের পর মামলা করার জন্য আমিই তাঁদের থানায় আসতে বলেছি; কিন্তু তাঁরা আসেননি।’
যোগাযোগ করা হলে ডিমলা থানার ওসি লাইছুর রহমান বলেন, ‘ওই শিক্ষার্থীর পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পাওয়া যায়। অভিযোগ তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছিলাম। পরবর্তী সময়ে তদন্ত অফিসার আমাকে জানায় তাঁরা মামলা করবেন না।’