জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান বলেছেন, রাজনীতির সঙ্গে অপরাজনীতির সমঝোতা হয় না। অপরাজনীতিকে দেশ থেকে চিরতরে নির্মূল করা অপরিহার্য।
গতকাল শনিবার লায়ন্স ক্লাব ইন্টারন্যাশনাল আয়োজিত রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ লায়ন্স ফাউন্ডেশনের মিলনায়তনে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ‘শোকে নয় চেতনায় মুজিব’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
উপাচার্য বলেন, শোক দিবসের আলোচনা সভায় দাঁড়িয়ে আত্মজিজ্ঞাসা- আমরা ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দের ঘৃণ্য খুনিদের বিরুদ্ধে কতোটুকু সোচ্চার হতে পেরেছি? পরিপূর্ণভাবে পারিনি। তা না হলে আজকে জিয়ার আদর্শ বাংলাদেশের রাজনৈতিক ধারা হতে পারে না। এটা হয়েছে এ কারণে যে, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ বিরোধী একটি চক্র কাজ করেছে। এই ষড়যন্ত্র ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে করেছে, ২১ আগস্টে একইভাবে করেছে। একই রক্তের ঋণ। সেদিন মুজিব হত্যায় জিয়া সক্রিয় ছিলো। ২১ আগস্টের হত্যা পরিকল্পনায় তারই রক্ত প্রবাহ তারেক জিয়ার পরিকল্পনা ছিলো। ভেবে দেখুন, একদিকে আত্মোৎসর্গের রক্ত মুজিব এবং শেখ হাসিনার মধ্যে, অন্যদিকে জিয়া এবং তারেক জিয়া হত্যার পরিকল্পনা করে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে যে বিভেদের রাজনীতি তাতে আমি মনে করি রাজনীতির সঙ্গে অপরাজনীতির সমঝোতা হয় না। অপরাজনীতির একমাত্র পথ বিলুপ্ত হওয়া।
তিনি আরো বলেন, আসুন ১৫ আগস্টে শোককে যারা শক্তিতে পরিণত করতে চাই তাদের প্রবল আকাঙ্ক্ষা, কাঙিক্ষত জায়গায় বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছে। সেই জায়গায় মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশ বিরোধী যে চেতনা তা সম্পূর্ণ বিলোপ এবং নির্মূল করাই হচ্ছে মুক্তির একমাত্র পথ। আগামীর পথ চলা নিশ্চয়ই আমাদের আত্মমর্যাদার হবে। বাংলাদেশ এক ব্যতিক্রমী রাষ্ট্রব্যবস্থা আমাদের মুজিব চার মূলনীতির যে দর্শন দিয়ে গেছেন তার সামনে দাঁড়িয়ে আমরা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলি- এই দেশ চাইলেই শ্রীলঙ্কা হবে না, নেপাল হবে না, মিয়ানমার হবে না। বাংলাদেশ বাংলাদেশ হবে। সেটি আমরা সাড়ে সাতকোটি বাঙালি মিলে ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে ২ লাখ মা-বোনের নির্যাতন সয়ে যাওয়ার মধ্যদিয়ে ওই মানচিত্রে সেটি আমরা নিশ্চিত করেছি।
উপাচার্য ড. মশিউর রহমান বলেন, আমাদের ভীতসন্ত্রস্ত হওয়ার কিছু নেই। বঙ্গবন্ধু মুজিবের রেখে যাওয়া আদর্শ আমাদের আগামীর পথ চলায় রুটিনাইজেশন অব ক্যারিশমা। এই বাংলাদেশ এবং বিশ্বব্যবস্থা যতোবেশি যৌক্তিক হবে, আধুনিক হবে, অগ্রসর হবে বঙ্গবন্ধু ততোবেশি প্রাণবন্ত হবেন, সজিব হবেন, গ্রহণযোগ্য হবেন। কেনোনা মুজিব দর্শন আধুনিকতায় ভরপুর। মুজিব দর্শন শোষিতের মুক্তির পক্ষে, গণতন্ত্র উত্থানের পক্ষে। আগামী দিনে মুজিব হবে অর্থনৈতিক মুক্তির দর্শনের নতুন রূপকার। আমি বিশ্বাস করি, বাংলাদেশ অপূর্ব শক্তিতে ভরে উঠবে। বাংলাদেশে মুজিব অপরিহার্য থাকবে আরও শতবর্ষ, হাজার বছর।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী লায়ন কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন লায়ন মোসলেম আলী খান, সম্মানিত অতিথি ছিলেন লায়ন মো. আবদুল ওহাব, বাংলাদেশ লায়ন্স ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান লায়ন এ কে এম রেজাউল হক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মারুফা আক্তার পপি। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন লায়ন এ কে এম গোলাম ফারুক।