পরীক্ষায় নকল করা এবং শিক্ষকের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ছাত্র যাদব কুমার ঘোষের ছাত্রত্ব বাতিল করে প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু এভাবে বহিষ্কারের পেছনে বিভাগের শিক্ষক রাজনীতি জড়িত দাবি করে বুধবার সকালে আমরণ অনশনে বসেন তিনি। পরে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে উপাচার্যের (ভিসি) আশ্বাসে অনশন ভঙ্গ করেন যাদব কুমার।
জানা যায়, অভিযুক্ত শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-১৯ ভর্তি শিক্ষাবর্ষের স্নাতক পর্যায়ের ছাত্র এবং শ্রেণি প্রতিনিধি (সিআর)। ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ৪০১ ও ৪০২ নং কোর্সের পরপর দুটি মিডটার্ম পরীক্ষায় নকল করেন তিনি। প্রথম দিন ধরা পরার পর তাকে সতর্ক করা হলেও দ্বিতীয়দিন একইভাবে নকল করার সময় পরীক্ষক তাকে হাতেনাতে ধরেন।
এসময় নকলের কাগজ জব্দ করার সময় পরীক্ষকের দায়িত্ব পালন করা বিভাগের শিক্ষক মো. সাকিবুল হাসানের সঙ্গে ধ্বস্তাধস্তি করেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে তদন্তের সময় সব দোষ স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন অভিযুক্ত যাদব কুমার। তবে পরীক্ষা সংক্রান্ত শৃঙ্খলা কমিটি তার ছাত্রত্ব বাতিল করে।
অনশনকালে যাদব কুমার দৈনিক শিক্ষা আমাদের বার্তাকে জানান, আমার বিভাগের চেয়ারম্যান উন্মেষ রয় এবং সহযোগী অধ্যাপক মো. সাকিবুল হাসানের সঙ্গে পেশাগত বৈরীতা রয়েছে। সিআর হিসেবে চেয়ারম্যানের সঙ্গে আমাকে কাজ করতে হতো বিধায় সাকিব স্যার আমাকে তার শত্রু মনে করতেন। এর প্রেক্ষিতে আমি লঘু অপরাধ করলেও তিনি তার ব্যক্তিগত ক্ষমতাবলে আমাকে আজীবন বহিষ্কার করিয়েছেন।
অভিযোগের বিষয়ে বাংলা বিভাগের শিক্ষক মো. সাকিবুল হাসান দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, ঐ শিক্ষার্থী পরপর দুদিন পরীক্ষায় নকল করেছিলো। তার অপরাধের প্রমাণসহ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণক কমিটির কাছে পাঠানো হয়। এছাড়া তার নকলের কাগজ উদ্ধারের সময় আমার সঙ্গে যে অসদাচরণ করা হয় তার সাক্ষী ছিলো গোটা হলের পরীক্ষার্থীরা। তাদের স্বাক্ষ্য নিয়ে পরীক্ষা কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়েছে সেখানে আমার বিন্দুমাত্র প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ সম্পূর্ণ অমূলক।
পরে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে গ্রাউন্ড ফ্লোরে অনশনরত শিক্ষার্থীর কাছে যান ভিসি ড. মো. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া। তিনি যাদব কুমারকে নিজ কার্যালয়ে নিয়ে যান এবং সেখানে তার আশ্বাসে অনশন ভঙ্গ করেছেন বলে দাবি করেন তিনি।
ভিসি ড. মো. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া বিকেলে দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের গতিধারা সুষ্ঠু রাখতে যেকোনো অপরাধের বিচার প্রয়োজন। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের প্রতি মানবিক আচরণ এবং তাদের কল্যাণের কথা চিন্তা করাও শিক্ষক হিসেবে আমাদের দায়িত্বের মধ্যে পরে। অভিযুক্ত ছাত্রের সঙ্গে আমি কথা বলেছি এবং সে আমার কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করে আবেদন করেছে। বিষয়টি নিয়ে কি করা যায় সেটি দেখছি।