কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে রায়গঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে হাজিরা খাতা কেড়ে নিয়ে স্বাক্ষর করা এবং অফিসের গ্লাস ভাংচুরের অভিযোগে দুই সহকারী শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্তের পর তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়েছে।
বুধবার তাদের বিরুদ্ধে এ মামলা করা হয়। এর আগে মঙ্গলবার তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলাম।
অভিযুক্তরা হলেন রায়গঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রতন কুমার সরকার ও ওয়াহিদা ইয়াসমিন গোলাপী।
জানা গেছে, গত ২১ ও ২২ ফেব্রুয়ারি অনুপস্থিত থাকায় হাজিরা খাতায় তাদের অনুপস্থিত দেখান প্রধান শিক্ষক আবু হানিফা। পরে সহকারী শিক্ষক রতন কুমার প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে হাজিরা খাতা কেড়ে নিয়ে ফ্লুট ( (হোয়াইট কারেকশন পেন) দিয়ে লেখা মুছে উপস্থিত স্বাক্ষর করে অপর শিক্ষক ওয়াহিদা ইয়াসমিনকে খাতা এগিয়ে দিলে তিনিও স্বাক্ষর করেন।
এ নিয়ে তর্কে জড়িয়ে অফিসের টেবিলের গ্লাস ভাঙচুর করেন শিক্ষক রতন। শিক্ষক ওয়াহিদা প্রধান শিক্ষকের সাথে অকথ্য ভাষা ব্যবহার করেন। পরে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা চেয়ারম্যান রোববার দুপুরে ঘটনাস্থলে যান। এ সময় বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে এলাকাবাসী, সাবেক ছাত্র ও অভিভাবকসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা আসলে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। অভিভাবক ও এলাকাবাসি অভিযুক্ত দুই শিক্ষকের বদলির দাবিতে বিক্ষোভ করেন। পরে বিষয়টি সুরাহার চেষ্টা করেন উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা জামান। মঙ্গলবার তিনি বিদ্যালয়ে গিয়ে ভুল বুঝাবুঝি হয়েছে জানিয়ে শিক্ষক ও এলাকাবাসীদের সমঝোতা করার চেষ্টা চালান। কিন্তু তখন বিদ্যালয় প্রাঙ্গন আবারও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এদিকে মঙ্গলবার বিকেলে দুই সহকারি শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘প্রধান শিক্ষকের প্রতিবেদনের আলোকে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আমাকে একটি প্রতিবেদন দিয়েছেন। প্রতিবেদনের আলোকে মঙ্গলবার তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সময় না থাকায় মঙ্গলবার মামলা করা যায়নি। বুধবার তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়েছে।’
এ কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘শিক্ষকদের কাছে মানুষ শিখবে। সেখানে শিক্ষকদের এমন আচরণ দুঃখজনক। মামলা হয়েছে। এখন অধিকতর তদন্ত হবে। মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তারা ক্লাসে ফিরতে পারবেন না।’