বাংলাদেশ থেকে দূর হোক স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থা - দৈনিকশিক্ষা

বাংলাদেশ থেকে দূর হোক স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থা

শামিম ওসমান, দৈনিক শিক্ষাডটকম |

একবিংশ শতাব্দীতে বাংলাদেশের ২৪ এর গণঅভ্যুত্থান অন্যায়, অবিচার, জুলুম নির্যাতন ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াকু সৈনিকদের প্রেরণা জোগাবে অনাদিকাল। বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য দুঃখের বিষয় স্বাধীনতার ৫৩ বছরে ১৯৭৫ এ আওয়ামীলীগের একনায়কতন্ত্রের কালো ছায়া, নব্বইয়ের এরশাদের স্বৈরাচারী রাজ কায়েম, ২০০৯ হতে ২০২৪ পর্যন্ত আওয়ামীলীগ ও শেখ হাসিনার  স্বৈরশাসকের কবলে বন্দি ছিলো পুরো বাংলাদেশ ও দেশপ্রেমিক নাগরিক। দেখুন, আওয়ামী লীগ যতবার ক্ষমতায় গেছে ততবারই স্বৈরাচারী চরিত্র দেখিয়েছে । শোষণ, বঞ্চনা, লাঞ্ছনা, বিনাবিচারে হত্যা, গুম খুনের শিকার হতে হতে মানুষের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। 

অবশেষে ৫ আগস্ট বাংলার আকাশে দ্বিতীয় স্বাধীনতার নতুন সূর্য উদিত হয়েছে। আনন্দে উল্লাসে মানুষ একে অপরের সঙ্গে মন খুলে কথা বলছে। স্বাধীনতার আসল সুখ পাওয়ার  আকাঙ্ক্ষা পূরণে মানুষ আজ দেশ পুনর্গঠনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। মনের আনন্দে জনগণ রাষ্ট্র সংস্কারে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে ভবিষ্যতেও করার মনোভাব দেখা যাচ্ছে। ছাত্র জনতা আরো একবার ঘর ছেড়ে রাষ্ট্র মেরামতের কাজে নিজেকে নিয়োজিত করেছে। একদল ট্রাফিকের শৃঙ্খলা রক্ষায় ভূমিকা পালন করেছে। একদল লেগে গেছে বাজার ঘাট শহর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ময়লা আবর্জনা পরিষ্কারের কাজে। কেউ যেনো ষড়যন্ত্র করে সংখ্যালঘুদের ঘরবাড়িতে হামলা করে ছাত্র জনতার আন্দোলনের ওপর কালিমা লেপন করতে না পারে সেজন্য ছাত্র জনতা প্রতিরক্ষার প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ কাজে মাদরাসার ছাত্র, মসজিদের ইমাম, আলেম সমাজের উপস্থিতি ছিলো চোখে পড়ার মতো। বাংলাদেশের সব শ্রেণির মানুষ এসব কাজের প্রশংসা করছে।

বিশ্বের ইতিহাসে সাম্প্রদায়িক সম্প্রতির এক অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে বাংলাদেশ। শুধু মাত্র ভারতীয় অতিউৎসাহী গণমাধ্যম গুলো সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন,ঘর বাড়িতে আগুন, মন্দিরে আগুন,ভাঙচুর এসব ভুয়া খবর ছড়িয়েছে। তারা বাংলাদেশকে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হিসেবে উপস্থাপন করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে। অথচ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসি প্রতিবেদনে এসব কে ভুয়া খবর হিসেবে প্রমাণ করেছে। প্রশ্ন হলো প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে ভারত কি বাংলাদেশে স্থিতিশীল পরিবেশ চায় না? ভারতের সঙ্গে আমাদের পুরনো সম্পর্ক। তাদের সঙ্গে সম্পর্ক আছে থাকবে এটাই স্বাভাবিক। সেটা হবে ন্যায় ও মর্যাদার ভিত্তিতে। বাংলাদেশের নাগরিকরা যখন দীর্ঘ সময় ধরে মৌলিক মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত, মুক্ত বাকস্বাধীনতা নেই, ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত সেখানে এসব সমস্যা এড়িয়ে স্বৈরাচারী ব্যবস্থা কে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সমর্থন দেয়া এ কেমন সম্পর্ক! বাংলাদেশের নাগরিকদের নিজেদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার  অধিকার কেনো থাকবে না? ভারতের প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় ১৫ আগস্ট তাদের স্বাধীনতা দিবসে বাংলাদেশের গণঅভ্যুত্থান নিয়ে যথার্থ বলেছেন ‘বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে  যা ঘটছে তা আমাদের পরিষ্কারভাবে স্বাধীনতা আমাদের জন্য, কতটুকু মূল্যবান  তা মনে করিয়ে দিচ্ছে ।’

আসলে বাংলাদেশের নাগরিকরা সত্যিকারের স্বাধীনতার সুখ নিয়ে দেশ গড়তে করতে চায়। উন্নত বিশ্ব সব সময় গণতন্ত্র কে প্রোমট করে থাকে। সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণে জোর দিয়ে থাকেন। একটি রাষ্ট্র বহির্বিশ্বের সঙ্গে অংশীদারিত্বমূলক ও বাণিজ্যিক প্রতিযোগিতা করতে হলে গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচিত সরকার প্রয়োজন হয়। জনগণকে বল প্রয়োগ করে, বন্দুকের নল ঠেকিয়ে, জীবন নাশের হুমকি দিয়ে, বিরোধী দলকে জেল, নির্যাতন, গুম, খুনের মাধ্যমে দুর্বল করে ভোটাধিকার থেকে জনগণকে বঞ্চিত করে ক্ষমতা দখল করা বিশেষ স্বার্থান্বেষী ছাড়া বড় বিনিয়োগকারী রাষ্ট্রগুলো ভালো ভাবে গ্রহণ করে না। রাষ্ট্রের প্রধান যখন স্বৈরাচারী হয়ে উঠে জনগণের কোনো অধিকার তার কাছে গুরুত্ব পায় না। রাষ্ট্রের চালিকা শক্তি সকল নির্বাহী বিভাগ, তাদের কর্তাব্যক্তিরা এমনকি কর্মচারীরাও স্বচ্ছতার তোয়াক্কা না করে ক্ষমতার অপব্যবহার করেন। বিনা বিচারে হত্যা, বিনা বিচারে দীর্ঘদিন কারাবরণ, অমানবিক নির্যাতনের আয়না ঘর তৈরি, বিচার ব্যবস্থায় অনাস্থা যেনো স্বাভাবিক ঘটনা। 

স্বাধীন দেশে গণহত্যা চালিয়ে তারা পৃথিবীর কোনো সার্বভৌম দেশে অবস্থান অথবা আশ্রয় নেয়ার অধিকার কীভাবে পায়? গণহত্যার প্রায় দুমাস পার হতে চললেও তারা কোনো ধরণের অনুশোচনা, অনুতপ্ত হওয়া, গণহত্যার দায় স্বীকার করে বক্তব্য বা বিবৃতি কোনো কিছুই দেয়নি। কি নির্লজ্জ, নিষ্ঠুর হায়েনার দল! বাংলাদেশের ছাত্র জনতার কাছে বিনয়ের সঙ্গে প্রশ্ন করতে চাই এদেশে কি আর কোনো ফ্যাসিবাদ মেনে নিবেন? ফ্যাসিবাদ মুক্ত হোক আমাদের রক্তের শিরা উপশিরা।

লেখক: শিক্ষার্থী,  ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

 

এইচএসসি ও সমমানে গড় পাস ৭৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ - dainik shiksha এইচএসসি ও সমমানে গড় পাস ৭৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ ১ লাখ ৪৫ হাজার ৯১১ জিপিএ-৫ এইচএসসি ও সমমানে - dainik shiksha ১ লাখ ৪৫ হাজার ৯১১ জিপিএ-৫ এইচএসসি ও সমমানে কাদির মোল্লা কলেজের জিপিএ ফাইভ ব্যবসা - dainik shiksha কাদির মোল্লা কলেজের জিপিএ ফাইভ ব্যবসা ঢাকা বোর্ডে পাসের হার ৭৯ দশমিক ২১ শতাংশ - dainik shiksha ঢাকা বোর্ডে পাসের হার ৭৯ দশমিক ২১ শতাংশ আলিমে ৯ হাজার ৬১৩ জিপিএ-৫ - dainik shiksha আলিমে ৯ হাজার ৬১৩ জিপিএ-৫ এইচএসসিতে এ বছরও এগিয়ে মেয়েরা - dainik shiksha এইচএসসিতে এ বছরও এগিয়ে মেয়েরা এইচএসসিতে এবার জিপিএ-৫ বেড়েছে ৫৩ হাজার ৩১৬ - dainik shiksha এইচএসসিতে এবার জিপিএ-৫ বেড়েছে ৫৩ হাজার ৩১৬ ৬৫ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কেউ পাস করেননি - dainik shiksha ৬৫ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কেউ পাস করেননি শতভাগ পাস ১৩ হাজার ৮৮ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে - dainik shiksha শতভাগ পাস ১৩ হাজার ৮৮ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0033268928527832