শিগগিরই বাংলাদেশ বিশ্বের শিল্পোন্নত ও বিকাশমান অর্থনীতির জোট জি-২০- এর সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
জি-২০ প্রক্রিয়ায় অংশ নেয়া বাংলাদেশের জন্য বৈশ্বিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ার অংশ হওয়ার এক অনন্য সুযোগ জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাপী চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট তৈরি হয়েছে।
এ বিষয়ে আমাদের অধিকতর সচেতন হতে হবে। এ সংকট নিরসনে আমাদের সবাইকে আন্তরিক হয়ে সমাধান করতে হবে। যেখানে জি-২০ জোটের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। আগামী ৯-১০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠেয় জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনেও ‘গেস্ট কান্ট্রি’ হিসেবে অংশ নেবে বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, যা চলতি বছরের ৯-১০ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হবে।
সোমবার (১৭ জুলাই) ভারতের গুজরাটের গান্ধীনগরে জি-২০ দেশগুলোর অর্থমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরদের দুই দিনের সম্মেলনে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদারসহ বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন। এ সম্মেলনের এবারের স্লোগান ‘এক পৃথিবী, এক পরিবার, এক ভবিষ্যৎ’।
আশা প্রকাশ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, শিগগিরই বাংলাদেশ জি-২০ জোটে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হবে। জি-২০ জোটে বাংলাদেশ সদস্য নয়, তবে শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজক দেশ ভারত সদস্য দেশগুলোর বাইরেও বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের নয়টি দেশকে ‘গেস্ট কান্ট্রি’ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছে। এসব দেশের প্রতিনিধিরা জি-২০ সম্মেলনের বিভিন্ন বৈঠকে অংশ নেবেন। দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে ‘গেস্ট কান্ট্রি’র মর্যাদা পেয়েছে বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, বিশ্বের শিল্পোন্নত ২০ দেশের সমন্বয়ে গঠিত জি-২০ হচ্ছে আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক জোট। বৈশ্বিক অর্থনীতির মূল বিষয়গুলোর ওপর আলোচনার জন্য বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ শিল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোকে একত্রিত করার উদ্দেশ্যেই এ জোট গঠিত হয়। আয়োজক দেশ ভারত দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে একমাত্র বাংলাদেশকেই ‘গেস্ট কান্ট্রি’ হিসেবে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। প্রতিবেশী বন্ধু দেশের কাছ থেকে পাওয়া এ আমন্ত্রণ অবশ্যই আমাদের জন্য অনেক সম্মানের।
সম্মেলনে বাংলাদেশের ধারাবাহিক অগ্রগতি উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে আমাদের জিডিপি ছিল ৬ দশমিক ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আমাদের জিডিপি এখন ৪৬০ বিলিয়ন ডলার। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদূরপ্রাসারী ও দৃঢ় নেতৃত্বে সারা বিশ্বে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ, ২০৩৬ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে বাংলাদেশ ২৪তম অর্থনীতির দেশে পরিণত হবে। আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য হলো ২০৩১ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে একটি উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে এবং ২০৪১ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে একটি স্মার্ট উন্নত দেশে পরিণত হওয়া।