বিদেশি শ্রমিকের ওপর নির্ভরশীল দেশ মালদ্বীপ। চার বছর বন্ধ থাকার পর নতুন করে চালু হয়েছে বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারগুলির একটি মালদ্বীপ। দেশটিতে নতুন করে বাংলাদেশি কর্মী নেয়ার বিষয়ে মালদ্বীপের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি অ্যান্ড টেকনোলজি মন্ত্রণালয় স্থানীয় গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন।
গত শনিবার (১৭ ডিসেম্বর) স্থানীয় গণমাধ্যমেকে দেয়া এক বিবৃতিতে, মালদ্বীপের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি অ্যান্ড টেকনোলজি মন্ত্রণালয় জানান এখন থেকে বাংলাদেশি শ্রমিক নিয়োগে কোনো বাধা নেই। তবে, যেসকল দেশ থেকে শ্রমি নিয়োগ দেওয়া হতো, সেসকল দেশের অদক্ষ শ্রমিক নিয়োগ আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। শুধু বাংলাদেশিদের ডকুমেন্টস অনলাইন সিস্টেমে আপলোড করা নথিগুলি আজ থেকে প্রক্রিয়া করন শুরু হয়েছে।
এ বিষয়ে মালদ্বীপের বাংলাদেশ হাইকমিশন এর শ্রম কাউন্সেলর মো. সোহেল পারভেজ সময় সংবাদকে বলেন, মালদ্বীপের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ও টেকনোলজি মন্ত্রণালয় হতে পুনরায় বাংলাদেশের কর্মীদের জন্য ভিসা প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিষয়টি মন্ত্রণালয় আমাদের নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, গত কয়েক বছর যাবত হাইকমিশনের পক্ষ হতে মালদ্বীপ সরকারের সাথে বাংলাদেশের শ্রম বাজার পুনরায় চালুর বিষয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে অনুরোধ জানানো হয়েছিল। তবে, গত ১৩ ডিসেম্বর মালদ্বীপের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি মন্ত্রীর সাথে হাইকমিশনের বৈঠকে এ বিষয়ে অনুরোধ জানানো হলে ইতিবাচক আশ্বাস প্রদান করা হয়। এরপর বাংলাদেশের কর্মী নিয়োগের জন্য ভিসা প্রদানের আজকের এই নতুন ঘোষনা এলো।
গত ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের সেপ্টেম্বর থেকে মালদ্বীপে বাংলাদেশি শ্রমিক নেয়া বন্ধ রয়েছে। এরপর অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে দেশটির সরকার অবস্থান নেয়ায় অনেক প্রবাসী বিপাকে পড়ে যায়। আলোচনা চলতে থাকে দুই দেশের সরকারের উচ্চ পর্যায়ে। অবশেষে তার ইতিবাচক ফল মিলেছে। আজ থেকে বাংলাদেশি শ্রমিক নেয়া শুরু করেছেন বলে জানিয়েছেন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি অ্যান্ড টেকনোলজি মন্ত্রণালয়। তবে, কতজন বা কোন প্রক্রিয়ায় শ্রমিক নেয়া হবে তা চূড়ান্ত করে জানায়নি কিছু মন্ত্রণালয়।
প্রাথমিকভাবে ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের সেপ্টেম্বরে এক বছরের জন্য বাংলাদেশি শ্রমিক নিয়োগ নিষিদ্ধ করার পর প্রতি বছর এর মেয়াদ বাড়ানো হতো।তবে নতুন প্রেসিডেন্ট ড. মুইজ এর প্রশাসন ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দে নিষেধাজ্ঞা নবায়ন না করে বাংলাদেশি কর্মী প্রবেশে উন্মুক্ত করে দেয়। বাংলাদেশি শ্রমিক নিয়োগ নিষেধাজ্ঞার ফলে ভারত, শ্রীলঙ্কা, নেপাল ও অন্যান্য দেশ থেকে দেশটিতে শ্রমিক নিয়োগ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে যায়।
প্রসঙ্গে, নতুন কর্মী নিয়োগের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিলেও দেশটিতে বসবাসরত অবৈধ প্রবাসীদের সমস্যা মোকাবেলায় ইমিগ্রেশন এখন বড় ধরনের অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দেশটিতে অবৈধ প্রবাসীদের সমস্যার দ্রুত সমাধান খুঁজতে অভিযান শুরু করেছেন বলেও জানান মালদ্বীপ ইমিগ্রেশন।