বাংলাদেশের দাপুটে জয় - দৈনিকশিক্ষা

বাংলাদেশের দাপুটে জয়

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

একদিকে মাঠের পারফরম্যান্সে সাম্প্রতিক সময়টা ভালো কাটেনি বাংলাদেশের। অন্যদিকে, দুই সিনিয়র ক্রিকেটারের দ্বন্দ্বে টালমাটাল অবস্থা। আগে থেকেই বিশ্বকাপ স্কোয়াডে নেই তামিম ইকবাল, চোটের কারণে প্রস্তুতি ম্যাচে নামা হলো না সাকিব আল হাসানেরও। দুজনের অনুপস্থিতিতে টাইগারদের সবচেয়ে বড় স্বস্তির বিষয় ওপেনিংয়ে দারুণ কিছুর ইঙ্গিত পাওয়া। লিটন দাস ও তরুণ তানজিদ হাসান তামিমই যে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়ের ভিত গড়ে দিয়েছেন। এরপর মেহেদী মিরাজ ও মুশফিকুর রহিমরা বাকি কাজ সেরেছেন, ফলে বাংলাদেশ ৭ উইকেটের দাপুটে এক জয় পেয়েছে। 

সর্বশেষ এশিয়া কাপে দুবারের মুখোমুখি দেখায় লঙ্কানদের হারাতে পারেনি বাংলাদেশ। বিশ্বকাপের আগে নিজেদের শেষবারের মতো ঝালিয়ে নিতে এসে কাঙ্ক্ষিত জয় তুলে নিয়েছে। সাকিববিহীন ম্যাচে অধিনায়কত্ব পাওয়া মিরাজ আজ ব্যাটে-বলে দারুণ অবদান রেখেছেন। নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের (৩২/১) পর ব্যাট হাতেও পেয়েছেন ব্যক্তিগত অর্ধশতক। তার আগে প্রতিভা দেখিয়ে জাতীয় দলে ডাক পাওয়া তানজিদ তামিম ম্যাচটিতে সেঞ্চুরির আশাও জাগিয়েছিলেন। একইসঙ্গে রানে ফিরেছেন আরেক ওপেনার লিটন দাস। তিনিও দীর্ঘ সময় পর ফিফটি পেয়েছেন, যা মূল ম্যাচের আগে অনেকটা ফুরফুরে রাখবে বাংলাদেশকে।

ভারতের গুয়াহাটিতে লঙ্কানদের দেওয়া ২৬৪ রানের জবাবে শুরু থেকেই দারুণ বোঝাপড়া দেখিয়েছেন লিটন-তামিম। দুজনের ওপেনিং কেমন করবে, সর্বত্র যখন এই আলোচনা চলছিল তখন তারা জবাবটা দিলেন মাঠে। যা বিশ্বকাপের মতো মূল আয়োজনেও নিশ্চয়ই তারা ধরে রাখতে চাইবেন। কাসুন রাজিথা ও মাথিশা পাথিরানাদের এশিয়া কাপে খেলতে বেশ বেগ পেতে হয়েছিল টাইগার ব্যাটারদের। তাদের সঙ্গে লাহিরু ‍কুমারা ও দিলশান মাদুশাঙ্কা যোগ দিলেও লিটন-তামিমদের ভড়কে দিতে পারেননি।

প্রথম পাওয়ার-প্লের ১০ ওভারে এই ওপেনিং জুটি ৫৪ রান এনে দেয়। লঙ্কান পেসারদের একের পর এক সীমানাছাড়া করে সেটি টিকে থাকে দলীয় ১৩১ রান পর্যন্ত। এরপর স্পিনার দুশান হেমন্থের বলে লেগে উড়িয়ে মারতে গিয়ে বাউন্ডারিতে ধরা পড়েন লিটন। ব্যাট হাতে সাম্প্রতি সময়ে নড়বড়ে দেখানো এই ক্রিকেটার এদিন প্রায় সবদিকে বাউন্ডারি খেলেছেন, ১০ চারের মারে করেছেন ৬১ রান।

অন্যদিকে, তামিম ইকবালের অনুপস্থিতিতে তার মতোই ক্ল্যাসিকাল সব শট খেলেছেন তাকে আইডল মানা তানজিদ তামিম। জাতীয় দলে প্রথমবারের মতো নিজের আত্মবিশ্বাস অর্জনের ম্যাচে তিনি থেমেছেন ৮৪ রানে। ৮৮ বলের ইনিংসটি তিনি ১০টি চার ও দুটি ছক্কায় সাজিয়েছেন। লিটনের বিদায়ের পর এদিন ওয়ানডাউনে নেমে যান অধিনায়ক মিরাজ। অবশ্য তার প্রতিদানও দিয়েছেন তিনি। মুশফিকের সঙ্গে ৭৬ রানের জুটিতে তিনি দলের জয় নিশ্চিত করেছেন। এদিন কেবল রান পাননি তরুণ ব্যাটার তাওহীদ হৃদয়। প্রথম বলেই রাউন্ড দ্য উইকেটে অনেক দূর এগিয়ে গিয়ে তিনি আউট হয়েছেন।

ম্যাচে নামার আগে তামিমের বাদ পড়া নিয়ে চলমান উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ে হাসান মাহমুদ বলেছিলেন, ‘দলের বাইরে কী ঘটছে না ঘটছে, সেটা নিয়ে আমরা ভাবি না। ভালো পারফরম্যান্সের জন্য আমরা রুটিন মেনে অনুশীলন করি যেন নিজেদের সেরাটা দিতে পারি। ব্যক্তিগতভাবে আমি (তামিমের বাদ পড়া) এটা নিয়ে বেশি ভাবি না, কারণ, আমি এখানে নিজের ভূমিকা পালন করতে এসেছি।’

সেটাই প্রমাণের যেন সর্বোচ্চ চেষ্টা ছিল ক্রিকেটারদের নিবেদনে। বোলিংয়ের পর ব্যাটেও মিরাজকেও প্রবল আত্মবিশ্বাসী দেখা গেছে লঙ্কানদের বিপক্ষে। ৫টি চার ও দুটি চারে তিনি ৬৭ রানের (৬৪ বল) ইনিংস খেলেছেন। আরেক অপরাজিত ব্যাটার মুশফিক করেছেন ৩৫ রান (৪৩ বল)। ফলে বাংলাদেশ ৮ ওভার হাতে রেখেই ৭ উইকেটের বড় জয় পেয়েছে।

এর আগে আজ (শুক্রবার) দুপুর আড়াইটায় গুয়াহাটিতে প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামে শ্রীলঙ্কা। শুরু থেকেই লঙ্কান ব্যাটাররা টাইগার বোলারদের ওপর বেশ চড়ি ঘুরিয়েছেন। ফলে মাত্র ১৪ ওভারেই তারা দলীয় একশ রানের সংগ্রহ পেয়ে যায়। রানের গতি দেখে মনে হয়েছিল, অনায়াসে-ই তিনশ পার করবে দাসুন শানাকার দল।

এদিন বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে খরুচে ছিলেন পেসার হাসান মাহমুদ। তিনি আক্রমণে আসলেই যেন বাউন্ডারির নেশা পেয়ে বসত লঙ্কান ব্যাটারদের। লঙ্কান ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা ও কুশল পেরেরা ৯.১ ওভারেই ৬৪ রান তোলেন। এরপর হাতের পেশীতে অস্বস্তি নিয়ে মাঠ ছাড়েন পেরেরা। তার আগে আক্রমণাত্মক মেজাজে এই বাঁ-হাতি ব্যাটার করেন ৩৪ রান (২৪ বল)। এরপর ক্রিজে আসা কুশল মেন্ডিসের সঙ্গে ওপেনার নিশাঙ্কা জুটি গড়েন ৪০ রানের। মেন্ডিসকে ফিরিয়ে বাংলাদেশের হয়ে প্রথম উইকেটের সূচনা করেন নাসুম আহমেদ। নাজমুল হোসেন শান্ত’র হাতে ক্যাচ দেওয়ার আগে এই ডানহাতি ব্যাটার ২০ রান করেন।

অন্যপ্রান্তে থাকা ইনফর্ম ব্যাটার নিশাঙ্কা ব্যক্তিগত অর্ধশতক তুলে নেন এরই মধ্যে। শেখ মেহেদীর বলে তারই হাতে ক্যাচ দেওয়ার আগে তার ব্যাটে আসে ৬৮ রান (৬৪ বল)। তার আউটের পরই নিয়মিত বিরতিতে আরও দুই উইকেট হারায় লঙ্কানরা। সাম্প্রতিক সময়ে বেশ ধারাবাহিক সাদিরা সামারাবিক্রমা এদিন মাত্র ২ রানেই ফিরেন, তিনি মেহেদীর শিকার। টাইগার এই স্পিনারের বলে এরপর চারিথ আসালাঙ্কাও ফেরেন ১৪ রানে। ফলে তাদের রানের চাকা ধীরগতির হয়ে পড়ে।

সাকিবের অনুপস্থিতিতে ম্যাচে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। পুরো ম্যাচজুড়ে তার বলে অস্বস্তিতে ছিলেন লঙ্কান ব্যাটাররা। যে কারণে চাপে পড়ে তাদের উইকেট পড়েছে নিয়মিত বিরতিতে। সর্বশেষ এশিয়া কাপেও রানখরায় ভোগা লঙ্কান অধিনায়ক শানাকা এদিন মাত্র ৩ রানে শরীফুলের বলে ক্যাচ আউট হয়েছেন। এরপর ইনিংস বড় করার চেষ্টা চালান ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ও দিমুথ করুণারত্নে। করুণারত্নে (১৮ রান) আউট হতেই ২১৮ রানে ৬ উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা।

এরপর ডি সিলভার অর্ধশতকের সুবাদে আড়াইশ রান পেরোয় তারা। মাঝে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ দুটি রান-আউটে বড় অবদান রাখেন। করুণারত্নকে তিনি আউট করেন সরাসরি থ্রোতে স্টাম্প ভেঙে দিয়ে। এরপর আর কোনো লঙ্কান ব্যাটার বলার মতো রান পাননি। পেরেরা আগেই রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়ায় ৪৯.১ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে গুটিয়ে যায় তাদের ইনিংস। 

বাংলাদেশের হয়ে ৯ ওভারে ৩৪ রানে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নিয়েছেন শেখ মেহেদী। সবচেয়ে সাশ্রয়ী বোলিং করা মিরাজ ১০ ওভারে ৩২ রানে নেন এক উইকেট। এছাড়া শরীফুল, নাসুম ও তানজিম সাকিব একটি করে শিকার করেছেন।

যেসব চাকরির পরীক্ষা স্থগিত - dainik shiksha যেসব চাকরির পরীক্ষা স্থগিত কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে সরকার - dainik shiksha কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে সরকার উত্তরায় গুলিতে ২ শিক্ষার্থী নিহত - dainik shiksha উত্তরায় গুলিতে ২ শিক্ষার্থী নিহত ছাত্রলীগ আক্রমণ করেনি, গণমাধ্যমে ভুল শিরোনাম হয়েছে - dainik shiksha ছাত্রলীগ আক্রমণ করেনি, গণমাধ্যমে ভুল শিরোনাম হয়েছে সহিংসতার দায় নেবে না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন - dainik shiksha সহিংসতার দায় নেবে না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জবিতে আজীবনের জন্য ছাত্র রাজনীতি বন্ধের আশ্বাস প্রশাসনের - dainik shiksha জবিতে আজীবনের জন্য ছাত্র রাজনীতি বন্ধের আশ্বাস প্রশাসনের মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের কারণ জানালেন পলক - dainik shiksha মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের কারণ জানালেন পলক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0063669681549072