নতুন ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটকে গণমুখী ও গরিববান্ধব বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, বাজেটের সমালোচনা গৎবাঁধা ও গতানুগতিক। অনেকে বাজেট ভালোভাবে না দেখে, না জেনেই তাড়াহুড়া করে সমালোচনায় ব্যস্ত।
শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডের নিজ সরকারি বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের টানা ১৫তম এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০তম এ বাজেট ২০০৮-০৯ অর্থবছরের তুলনায় প্রায় নয়গুণ বড়। পিপিপিতে (পারচেজিং পাওয়ার প্যারিটি) ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দের একশ বিলিয়ন ডলার জিডিপির তুলনায় এখনকার জিডিপি এক ট্রিলিয়ন ডলার প্লাস, অর্থাৎ প্রায় দশগুণ বড়, যা নিঃসন্দেহে দেশের অগ্রগতি সমৃদ্ধির পরিচায়ক।
তিনি বলেন, বিশ্বময় মন্দা, ইউক্রেন যুদ্ধ, ডলার সংকটের কারণে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে শৈথিল্য আসায় বাজেট প্রণয়ন বড় চ্যালেঞ্জ ছিলো। তারপরও এবারের বাজেট গত বছরের তুলনায় প্রায় ১ লাখ হাজার কোটি টাকা বেশি।
প্রস্তাবিত এ বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রম বৃদ্ধি করা হয়েছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা খাতে মোট বাজেটের ১৬ দশমিক ১৮ শতাংশ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। আরো মানুষকে সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ে আনা এবং এ খাতে বিভিন্ন ভাতার পরিমাণ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করার পাশাপাশি হাছান মাহমুদ বলেন, এই বাজেটের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে, এ অর্থবছরেই প্রথম সার্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে, যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চিন্তাপ্রসূত।
আয়কর নিয়ে প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশের কর ও জিডিপির অনুপাত দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বনিম্ন। গত ১৪ বছরে দেশের জিডিপি প্রায় দশগুণ, বাজেট প্রায় নয়গুণ বৃদ্ধি পেলেও আয়কর দেয়ার হার বেড়েছে মাত্র ৩ গুণ। ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে ১১ লাখ মানুষ আয়কর দিতো, গত বছর ২৯ লাখ মানুষ আয়কর দিয়েছে। অথচ দেশে অন্তত ২ কোটি মানুষ আয়কর দিতে সক্ষম। কিন্তু মানুষ কর দেয় না। তাই করের আওতা বাড়ানো অযৌক্তিক নয়।
আইএমএফের প্রেসক্রিপশনে লুটপাট করতে এ বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে বলে বিএনপি নেতাদের করা সমালোচনা জবাবে মন্ত্রী বলেন, বিএনপির অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান আইএমএফের প্রেসক্রিপশনে বাজেট ঘোষণার আগে প্যারিস কনসোর্টিয়ামে যেতেন। বর্তমানে বাংলাদেশের বাজেট কোনোভাবেই বিদেশি সাহায্যনির্ভর নয়।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) বাজেটকে বাস্তববিবর্জিত বলেছে। এ নিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, গত ১৪ বছরে সিপিডি বাজেটের প্রশংসা করতে পারেনি। এ বছর তো বাজেট প্রস্তাব অধিবেশন চলমান থাকা অবস্থায়ই তারা বলেছে, এই বাজেট উচ্চাভিলাষী, বাজেট বাস্তবায়ন হবে না। অথচ দেশের বাজেট বাস্তবায়নের গড় হার ৯৭ শতাংশ।
ওয়ার্কাস পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননের চলতি বাজেট নিয়ে সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রী বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা থাকবে, ইতিবাচক সমালোচনাকে আমরা সবসময় স্বাগত জানাই।