বাতিল কারিকুলামে শিক্ষার্থীরা আরও একবছর ভুগবেন কেন? - দৈনিকশিক্ষা

বাতিল কারিকুলামে শিক্ষার্থীরা আরও একবছর ভুগবেন কেন?

মাছুম বিল্লাহ, দৈনিক শিক্ষাডটকম |

পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সরকারের জগাখিচুড়ি মার্কা কারিকুলাম যা সব শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবকসহ সব স্টেকহোল্ডার চাননি, বিরোধিতা করেছেন, আন্দোলন করেছেন কিন্তু বিশেষ কিছু কারণে সরকার সেটিকে বাস্তবায়ন করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছিল। তারা জনদাবীকে চরমভাবে উপেক্ষা করেছেন। শিক্ষকদের মুখে তালা মেরে দেয়া হয়েছিল যাতে তারা কারিকুলামের বিরুদ্ধে কোন ধরনের কথা বলতে না পারেন। তারা বলতে পারেন নি, সইতেও পারেননি। সংবাদপত্রকে চাপে রেখেছিলো।   

সেই দু:সহনীয় অবস্থা কেটে গেছে। জাতির সামনে হাজির হয়েছে এক নব প্রভাত। সব প্রভাতে মাননীয় শিক্ষা উপদেষ্টা যখনই ঘোষণা করলেন যে, নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নযোগ্য নয় তখনই লাখ লাখ শিক্ষার্থী, শিক্ষক, শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা আনন্দে ফেটে পড়েছেন। কারণ যেকথা তারা প্রায় দুই বছর ধরে শোনাতে পারেননি আগের সরকারকে সেই কথা  অন্তর্বর্তী সরকার এসেই অনুধাবন করতে পেরেছে। কিন্তু তারপরে মাননীয় উপদেষ্টা আবার যখন বললেন,  এই কারিকুলামের যেসব অংশ রাখা সম্ভব হবে সেইসব অংশ রেখে বই পরিমার্জন করা হবে এবং সেই বই জানুয়ারী -২০২৫  শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ করা হবে। এ ঘোষণাটি সংশ্লিষ্টদের অনেকটা হতাশ করেছে! কারণ যে কারিকুলাম বাস্তবায়নযোগ্য নয় এবং বাতিল  সেটির কিয়দংশ রাখা মানে চরমভাবে বিতর্কিত কারিকুলামকে আংশিক স্বীকৃতি দেয়া। যা সমস্ত শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবকসহ শিক্ষাসংশ্লিষ্টদের ভীষণভাবে আহত করবে। নতুন সরকারের কাছে এবং এনসিটিবির নতুন কর্মকর্তাদের কাছে শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা সেটি আশা করেননা। এই বিতর্কিত কারিকুলাম হচেছ অভিজ্ঞতাভিত্তিক এবং বইও সেভাবে করা হয়েছে। এখান থেকে ২০১২ খ্রিষ্টাব্দের কারিকুলামের মতো প্রশ্ন করা যায়না বললেই চলে। তারপরেও সময় স্বল্পতার জন্য বলেছি যে, ডিসেম্বরে যেহেতু বার্ষিক পরীক্ষা গ্রহন করতে হবে , তাই বর্তমানের বইয়ের ওপর কিভাবে প্রশ্ন করা যায় তার একটি নমুনা এনসিটিবি বিষয় শিক্ষক ও বিশেষজ্ঞদের সাথে বসে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রস্তত করে  বিতরণ করবে। কিন্তু এই বই বা এই বইয়ের কিয়দংশ রেখে ২০২৫খিষ্টাব্দের জন্য শিক্ষার্থীদের বিশেষ করে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম পর্যন্ত দেয়া মানে হচেছ বাতিল কারিকুলামের বইয়ের ওপর তাদের আরও এক বছর সময় নষ্ট করা। তারা প্রকৃতঅর্থে গত দেড় বছরে কিছুই শিখতে পারেনি, শুধু গা ভাসিয়ে বেড়িয়েছে যা তাদের দোষ নয়। তাদেরকে আর সময় নষ্ট করতে দেয়ার অবকাশ ও সুযোগ কোনটিই আমাদের নেই। নবম শ্রেণিতে যারা পড়েন তারা দশম শ্রেণিতে এই কারিকুলাম অনুযায়ী লিখিত বা পরিমার্জিত বই যদি  পড়েন তার  মানে হচেছ তারা বাতিল কারিকুলামে ওপর  দুই বছর সময় নষ্ট করবেন যা আমরা হতে দিতে পারিনা।

কাজেই ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দে শিক্ষার্থীদের পুরাতন কারিকুলামের বই-ই দিতে হবে, বর্তমানের তথাকথিত নতুন কারিকুলামের বই সংশোধন বা পরিমার্জন করে নয়। এজন্য হতে পারে যে, জানুয়ারির প্রথম দিন বা প্রথম সপ্তাহে বই বিতরণ করা যাবেনা। এমনকি এক দুই মাস বিলম্ব হতে পারে। তাতেও শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক ও সংশ্লিষ্টরা রাগান্বিত হবেন না বরং মেনে নেবেন। কিন্তু সংশোধন করে বা পরিমার্জন করে তথাকথিত অভিজ্ঞাতভিত্তিক কারিকুলামের বইয়ের কিছু অংশ নিয়ে পুরাতন কারিকুলামের সাথে মিশিয়ে না করার পক্ষাপাতী সবাই। 

উল্লেখ্য, পুরনো কারিকুলামের বই এনসিটিরিব ওয়েবসাইটে এখনও দেয়া আছে। নতুন বই পেতে বিলম্ব হলে স্কুল, শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা সেই বই   ডাউনলোড করে পড়ানো শুরু করতে পারেন। তাতে হয়তো দু চারশ টাকা খরচ হবে । বর্তমানে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের পেছনে প্রজেক্ট ওয়ার্ক আর এডুকেশন সমাগ্রী কিনতে মাসে হাজার টাকার বেশি খরচ করছেন সেটিতো আর লাগবে না। তারপরেও আমরা ২০২৫ খিষ্টাব্দে  শিক্ষার্থীদের মাঝে সম্পূর্ন নতুন বই বিতরণের অনুরোধ করছি, মেশানো কন্টেন্ট দিয়ে তৈরি বই নয়। শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা যে আশায় বুক বেধে ছিলেন এবং এনসিটিবি তথা বর্তমান সরকারের কাছে তাদের যে বিরাট আশা তাতে যাতে ছেদ না পড়ে সে বিষয়টিতে বিশেষভাবে দৃষ্টি দেয়ার অনুরোধ করছি মাননীয় শিক্ষা উপদেষ্টাকে। 

লেখক : লিড রিসার্স, দৈনিক শিক্ষাডটকম ও দৈনিক আমাদের বার্তা। 

ফল পরিবর্তনের আশ্বাসে আর্থিক প্রতারণা, সতর্ক করলো কারিগরি বোর্ড - dainik shiksha ফল পরিবর্তনের আশ্বাসে আর্থিক প্রতারণা, সতর্ক করলো কারিগরি বোর্ড সচিবদের একগুচ্ছ নির্দেশনা প্রধান উপদেষ্টার - dainik shiksha সচিবদের একগুচ্ছ নির্দেশনা প্রধান উপদেষ্টার অধ্যাপক পদকে তৃতীয় গ্রেডে উন্নীত করার দাবি মর্যাদা রক্ষা কমিটির - dainik shiksha অধ্যাপক পদকে তৃতীয় গ্রেডে উন্নীত করার দাবি মর্যাদা রক্ষা কমিটির নবীন সরকারি কর্মকর্তাদের সৎ থাকার আহ্বান জানালেন শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha নবীন সরকারি কর্মকর্তাদের সৎ থাকার আহ্বান জানালেন শিক্ষা উপদেষ্টা প্রাথমিকে স্বতন্ত্র ক্যাডার সার্ভিস চালুর দাবি - dainik shiksha প্রাথমিকে স্বতন্ত্র ক্যাডার সার্ভিস চালুর দাবি জ্যেষ্ঠ শিক্ষকরা পাচ্ছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার দায়িত্ব - dainik shiksha জ্যেষ্ঠ শিক্ষকরা পাচ্ছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার দায়িত্ব সংযুক্ত ইবতেদায়ি শিক্ষকদের কপাল খুলছে - dainik shiksha সংযুক্ত ইবতেদায়ি শিক্ষকদের কপাল খুলছে মধ্যরাতে ববি-বিএম কলেজ শিক্ষার্থীদের সংঘ*র্ষ, আহত ২৫ - dainik shiksha মধ্যরাতে ববি-বিএম কলেজ শিক্ষার্থীদের সংঘ*র্ষ, আহত ২৫ এইচএসসি ফল তৈরি: পরীক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় তথ্য চেয়েছে বোর্ড - dainik shiksha এইচএসসি ফল তৈরি: পরীক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় তথ্য চেয়েছে বোর্ড শিক্ষকদের পদত্যাগে বাধ্য ও হেনস্তা নয়: শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha শিক্ষকদের পদত্যাগে বাধ্য ও হেনস্তা নয়: শিক্ষা উপদেষ্টা দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0038959980010986