বিএনপির সঙ্গে সংলাপের সম্ভাবনা ফের নাকচ করলেন প্রধানমন্ত্রী - দৈনিকশিক্ষা

বিএনপির সঙ্গে সংলাপের সম্ভাবনা ফের নাকচ করলেন প্রধানমন্ত্রী

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

বিএনপির সঙ্গে সংলাপের সম্ভাবনাকে আবারো নাকচ করে দিয়ে দলটিকে উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এই সন্ত্রাসী, জঙ্গী,এ অমানুষগুলো, এদের সঙ্গে কারা থাকে, আর তাদের সঙ্গে বসা? এই জানোয়ারদের সঙ্গে বসার কথা কারা বলে? আমার কথা হচ্ছে জানোয়ারদেরও একটা ধর্ম আছে। ওদের সে ধর্মও নাই। ওদের মধ্যে কোন মনুষত্ববোধ নেই। ওরা চুরি, লুণ্ঠন, দুর্নীতি, দুর্বৃত্তায়ন ছাড়া কিছুই জানে না।

বৃহস্পতিবার একদশ জাতীয় সংসদের শেষ অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় বিএনপির সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও দুর্বৃত্তপনা রুখে দিতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, বাংলাদেশটাকে নিয়ে কেউ যেন খেলতে না পারে- এজন্য দেশবাসীর কাছে সহায়তা চাই। দেশবাসীকে বলবো অগ্নি সন্ত্রাস ও দুর্বৃত্তদের ধরিয়ে দিন। আপনার গাড়ি পোড়ালে এদের ধরে ওই আগুনে ফেলুন। যে হাত দিয়ে গাড়ি পোড়ব সেই হাত পুড়িয়ে দিন। তাহলে ওরা থামবে। তা না হলে ওরা থামবে না। এটা দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে করতে হবে। দেশের মানুষের সহযোগিতা পেলে এদের দুর্বৃত্তপনা কমানো যাবে। মানুষকে বলবো ভয়ের কিছু নেই। এরা মুষ্ঠিমেয়। এদের বিরুদ্ধে সকলকে হয়ে রুখে দাড়ানো আহ্বান জানাচ্ছি। 

বিএনপির চলমান আন্দোলনের কঠোর সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা থেকে শুরু করে সব ধরনের ব্যবস্থা যখন আমরা করে যাচ্ছি তখন কী দেখলাম? কথা নেই, বার্তা নেই-নির্বাচন হতে দেবে না। আর আমাকে পদত্যাগ করাবে। ক্ষমতা থেকে হটাবে। ঘোষণা দিয়ে ২৮ অক্টোবর বিএনপি যে তাণ্ডব করছে সারা বাংলাদেশে..। এই দৃশ্যগুলো সহ্য করা যায় না। সাংবাদিকরা কী অপরাধ করেছে? আর এরাও বিএনপিরই কাজ করতো। তাদেরকে যেভাবে মেরেছে! যারা ক্ষতিগ্রস্ত তার পাশে আছি। সাধ্যমত সাহায্য করে যাচ্ছি।  

দেশবাসীর সহযোগিতা চেয়ে তিনি আরো বলেন, এই দুর্বৃত্তরা সাধারণ মানুষের ওপর যারা আক্রমণ করছে। সাংবাদিক পুলিশ থেকে শুরু করে সাধারণ জনগণ যাদের পুড়িয়ে হত্যা করছে। যাদের সম্পদ নষ্ট করছে। শেষ অধিবেশনে আমার বক্তব্যে শেষে এইটুকু আহ্বান জানাবো-জনগণ হচ্ছে শক্তির উৎস। আমার একমত্র শক্তি বাংলাদেশের জনগণ। জনগনের শক্তি নিয়েই আমরা চলছি।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী ২৮ অক্টোবের বিএনপির সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের একটি ভিডিওচিত্র সংসদে প্রদর্শন করেন।

সংসদ নেতা বলেন, জিয়াউর রহমান তো আমার বাবা মা ভাইবোন সব হত্যার সঙ্গে জড়িত। আর খালেদা-জিয়া তারেক জিয়া তো আমাকে হত্যার চেষ্টা করছে। আওয়ামী লীগের ২১ হাজার নেতাকর্মী হত্যা করেছে। সাধারণ মানুষ। আজকে কোন অবস্থায় দেশকে নিতে চায়।

তাঁকে বিদেশে হত্যার চেষ্টা হয়েছে সেই অভিযোগ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বার বার আমার ওপর আঘাত হেনেছে। তারপর আমি বেঁচে গেছি। এখনো বার বার আমার ওপর হামলা হচ্ছে। এমনকি দেশে না, বিদেশেও আমার ওপর হামলার প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে। আমি বিস্তারিত বলবে না। শুধু এইটুকুই জানিয়ে রাখলাম। আমি যখন বিদেশ যাই সেখানেও কিলার হায়ার করে আমাকে মারার চেষ্টা.. সে চেষ্টাও ওই খালেদা জিয়ার ছেলে যেটা লন্ডনে বসে আছে। সেসহ তাদের যারা সন্ত্রাসী তারাই.। তবে আমি কখনো এ ব্যাপারে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত না। জন্মালে তো মরতে হবে। কিন্তু যতক্ষণ শ্বাস আছে এদেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাবো।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দ থেকে এ পর্যন্ত ধারাবাহিক গণতান্ত্রিক বিধিব্যবস্থা ছিলো বলেই দেশ এগিয়ে গেছে। আর সেটাকেই ধ্বংস করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। দেশবাসীর কাছে আমি আহ্বান জানাই তারা কোন বাংলাদেশ চায়। এই ধ্বংসস্তুপ? নাকি উন্নত বাংলাদেশ।  তাদের জীবন মান যে উন্নতি হয়েছে সেটা ধরে রাখতে চান? সেটা ধরে রাখতে হলে একমাত্র আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে সেটা থাকবে। নৌকা মার্কা স্বাধীনতা দিয়েছে। নৌকা মার্কাই পারে উন্নত জীবন দিতে। এরা ধ্বংসই দিতে পারব। এরা স্বাধীনতাও চায় না, উন্নতিও চায় না।

তিনি বলেন, মুল্যস্ফীতি কমাতে আমরা চেষ্টা করছি। এটা করতে পারবো। বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাক সেটা আমরা উন্নয়নের অগ্রগতি অব্যাহত থাকুক। অধিকার সুরক্ষিত থাকুক সেটা আমরা চাই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোন বাংলাদেশ আমরা চাই? দিনরাত পরিশ্রম করে মাত্র ১৪ বছরের মধ্যে যে বাংলাদেশ আমরা উন্নত করেছি। বলেছিলাম দিনবদলের সনদ। আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। আর তখন এ ধরণের ধ্বংসযজ্ঞ। আমার আজ বক্তব্য দেওয়ার মানসিকতা নেই।

তিনি বলেন, এরকম দৃশ্য। যারা জাজের বাড়িতে আক্রমণ করে। এটা তাদের অভ্যাস। এর আগে প্রধান বিচারপতির অফিসে লাথিও মেরেছে বিএনপি নেতারা। পুলিশের ওপর হামলা, অ্যাম্বুলেন্সে রোগী যাচ্ছে সেখানেও আক্রমণ। আর কি বিভৎস দৃশ্য। পুড়িয়ে মানুষ হত্যা না শুধু না মনেহচ্ছে এরা পুরো দেশটাকে ধ্বংস করবে।

তিনি বলেন, মানুষের কল্যাণে কাজ করতে গিয়ে কে কোন দল করে সেটা আমি দেখিনি। মানুষকে মানুষ হিসেবে দেখেছি। তাদের জন্য কাজ করেছি। তাদের সেবা দেয়ার চেষ্টা করেছি।

তিনি বলেন, আমরা যখন দেশের মানুষের উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। তখন বিএনপি জামাত জোট বার বার অগ্নি সন্ত্রাস, সংঘাত মানুষ হত্যা, মামলা নানাভাবে মানুষকে ব্যতিব্যস্ত করে তুলেছে। একদিকে আমরা দেশের জন্য কাজ করি। দেশের উন্নতি করি অন্যদিকে তারা ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়। ধ্বংস করাটাও তাদের চরিত্র। ২৮ তারিখে যেভাবে পুলিশকে ফেলে দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে। কোন মানুষ এরকম করতে পারে? ২০১৩, ১৪ ও ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে তারা একইভাবে করেছে। মাঝখানে একটু থেমেছিল তারপর আবার ভয়ংকর রূপ জাতি দেখছে।

বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারর উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ফিরিস্তি তুলে করেন। এ সংক্রান্ত ছোট একটি পুস্তক সংসদ সদস্যদের কাছে সরবরাহ করা হয়। মুল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, বৈদেশিক মু্দ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি, স্বাস্থ্যখাত, বাজেট বৃদ্ধি, জিডিপির আকার বৃদ্ধি, শিক্ষাখাত, এডিপি,  দারিদ্র বিমোচন, শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরী বৃদ্ধি, গড় আয়ু বৃদ্ধি, সুপেয় পানির ব্যবস্থা, শিশু ও মাতৃ মৃত্যুর হার কমানো, বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি, কারিগরি শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব প্রদান, খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি, দুধ উৎপাদন বৃদ্ধি, ইন্টারনেট ব্যবহারের হার বৃদ্ধি, সরকারি সেবা সহজীকরণ, সামাজিক সুরক্ষা, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির কথা জানান।

রিজার্ভ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রিজার্ভ সময় সময়ে বাড়ে কমে। এটা স্বাভাবিক ব্যাপার। এটা নিয়ে দুঃশ্চিন্তার কিছু নেই। কারণ আমরা খাদ্য উৎপাদন থেকে শুরু করে অন্যান্যা কাজগুলো করে যাচ্ছি। আমরা সবসময় খুব সতর্কভাবে পদক্ষেপ নিচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরি ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দে ছিলো মাত্র এক হাজার ৪৬২ টাকা।  আমরা তিন দফায় বৃদ্ধি করে ৮ হাজার ৩০০ টাকায় উন্নীত করেছি।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি জানি জিনিসপত্রের দাম নিয়ে অনেকে হা-হুতোশ করছেন। কিন্তু আমরা এই যে উৎপাদন বাড়ালাম। জনসংখ্যা কিন্তু এতগুণ বাড়েনি। তাহলে এগুলো গেল কোথায়? মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে। অর্থনৈতিক উন্নতি হয়েছে। খাদ্যগুণ বেড়েছে। সেটাই হলো বড় কথা। দেশের অগ্রযাত্রা কেউ থামাতে পারবে না। ইনশাল্লাহ আবার দেখা হবে।

যেসব চাকরির পরীক্ষা স্থগিত - dainik shiksha যেসব চাকরির পরীক্ষা স্থগিত কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে সরকার - dainik shiksha কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে সরকার উত্তরায় গুলিতে ২ শিক্ষার্থী নিহত - dainik shiksha উত্তরায় গুলিতে ২ শিক্ষার্থী নিহত ছাত্রলীগ আক্রমণ করেনি, গণমাধ্যমে ভুল শিরোনাম হয়েছে - dainik shiksha ছাত্রলীগ আক্রমণ করেনি, গণমাধ্যমে ভুল শিরোনাম হয়েছে সহিংসতার দায় নেবে না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন - dainik shiksha সহিংসতার দায় নেবে না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জবিতে আজীবনের জন্য ছাত্র রাজনীতি বন্ধের আশ্বাস প্রশাসনের - dainik shiksha জবিতে আজীবনের জন্য ছাত্র রাজনীতি বন্ধের আশ্বাস প্রশাসনের মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের কারণ জানালেন পলক - dainik shiksha মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের কারণ জানালেন পলক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.010288000106812