বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নিলে গণতন্ত্র অনেক শক্তিশালী হয় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে সিটি করপোরেশন নির্বাচনগুলো খুবই প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হয়েছে। বিএনপি মানুষকে আহ্বান জানিয়ে ছিল ভোট না দেওয়ার জন্য, এরপরেও কোনো কোনো জায়গায় ৫০ শতাংশ ভোট কাস্ট হয়েছে। বিএনপি না এলেই জনগণ অংশগ্রহণ করবে না, সেটি যে সঠিক নয়, তা প্রমাণ হয়েছে। অবশ্যই বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নিলে নির্বাচন বা গণতন্ত্র অনেক শক্তিশালী হয়।
সোমবার (১৭ জুলাই) সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিএনপির যদি বোধশক্তি থাকে, তাহলে তারা কোনো বিধ্বংসী কর্মসূচির দিকে যাবে না। আর এমন কোনো কর্মসূচিতে যদি তারা যান তাহলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বসে থাকবে না। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দেশবিরোধী কর্মকাণ্ড প্রতিরোধ করা হবে।
বিএনপি বলেছিল শান্তিপূর্ণভাবে সভা-সমাবেশ করবে এবং হরতাল দেবে না। কিন্তু রোববার বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুলইসলাম আলমগীর বলেছেন, যে ‘সরকারের সব দপ্তর আমরা দখল করবো এবং রাজপথেই ফয়সালা হবে’। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছে, দেখা করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে যখন বৈঠক করেন তারা, তখন ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত স্পষ্টত তাদের বলেছেন, হরতাল, অবরোধ এগুলো গণতন্ত্রকে দুর্বল করে।’
ইইউ প্রতিনিধিদলের সঙ্গে এনজিও ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সাক্ষতের বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এরা নাগরিক সমাজের খণ্ডিত অংশ। তারা পুরো নাগরিক সমাজকে প্রতিনিধিত্ব করে না।’
‘নাগরিক বা সুশীল সমাজ—তারা অনেক বড়। যারা সবসময় সরকারের সমালোচনায় ব্যস্ত, তারা দেন-দরবার করে ইউরোপীয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করেছে। তারা এ কথাগুলো হরহামেশাই বিভিন্ন সভা-সেমিনারে, টকশোতে বলে আসছে। একই কথাগুলো সেখানেও বলেছে। তারা যেহেতু পুরো নাগরিক সমাজকে প্রতিনিধিত্ব করে না, তাই তাদের বক্তব্য দেশের নাগরিক সমাজের বক্তব্য নয়।
ইইউ ও মার্কিন প্রতিনিধিদল সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায়, কোনো কারণে সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে তারা কোনো বার্তা দিয়েছে কি না- প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘তাদের সঙ্গে আমাদের বিভিন্ন পর্যায়ে বৈঠক হয়েছে। কোনো পর্যায়ের বৈঠকে তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যু কিংবা নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়ে আলোচনা হয়নি।’
‘সংবিধানের আলোকে নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সাম্প্রতিক নির্বাচনগুলো প্রমাণ করে নির্বাচন কমিশন অত্যন্ত শক্তিশালী এবং সরকারি দলের তোয়াক্কা করে না। সরকারি দলের তোয়াক্কা যদি করতো এবং সরকারকে সমীহ করতো, তাহলে গাইবান্ধা-৫ আসনের নির্বাচনটা বাতিল করতো না।’
আওয়ামী লীগের এ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘তারা পুরো নির্বাচন বাতিল করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে স্থানীয় সরকারের যেসব নির্বাচন হয়েছে, সেগুলো অত্যন্ত সুষ্ঠু, অবাধ এবং জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণ ছিল। শুধু একজন প্রার্থীকে একজন ঘুসি মেরেছে, সেটি উচিত হয়নি। কিন্তু সেটিকেই বড় করে দেখানো হয়েছে।’