ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম (এসএম) হলের অর্ধশতাধিক বৈধ শিক্ষার্থীর আবাসনের বিকল্প ব্যবস্থা না করেই ৩৬টি ঝুঁকিপূর্ণ কক্ষ ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে হল প্রশাসন। সংক্ষিপ্ত নোটিশে অল্প সময়ের মধ্যে এসব শিক্ষার্থী কোথায় যাবেন, এ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন।
গত ১৬ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মো. ইকবাল রউফ মামুন স্বাক্ষরিত এই নোটিশে হলটির ৩৬টি কক্ষের প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থীকে কক্ষ খালি করার নির্দেশ দেয়া হয়। এর মধ্যে ৫০-এর অধিক বৈধ কার্ডধারী শিক্ষার্থী রয়েছে। এসব শিক্ষার্থীর মধ্যে অধিকাংশের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা থাকায় তারা উভয় সঙ্কটে পড়েছে।
এসএম হল প্রভোস্টের সাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিকে বলা হয়, হলটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার কারণে শিগগির সংস্কার কাজ শুরু হবে বিধায় আগামী ১৯ নভেম্বরের মধ্যে কক্ষসমূহ খালি করার জন্য নির্দেশ দেয়া হলো।
এসব কক্ষের মধ্যে রয়েছে- ৪, ৬, ৮, ৯, ১০, ১১, ১২, ১৩, ১৪, ১৫, ১৬, ১৭, ১৮, ১৯, ২০, ২১, ২২, ২৩, ২৪, ২৫, ২৬,৪৯,১৫০, ১৫১ ১৫২, ১৫৩, ১৫৪, ১৫৬, ১৫৮, ১৬০, ১৬১, ১৬২, ১৬৩, ১৬৪, ১৬৫ ও ১৬৬।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই হলের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমি আবাসিক শিক্ষার্থী হওয়া সত্ত্বেও আমার জন্য বিকল্প ব্যবস্থা না করে হল ছাড়ার দিয়েছেন নির্দেশ দিয়েছে। আমার সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা চলছে, এখন হল ছেড়ে কোথায় উঠবো? এ মুহূর্তে আমার হল ছাড়াও সম্ভব নয়। আর্থিক সমস্যার কারণে বাইরে মেস নিয়ে থাকা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে সময় পার করছি।
তবে এই বৈধ কার্ডধারী অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীর জন্য বিকল্প কোনো কক্ষ বরাদ্দ দেয়া হয়নি বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। হল থেকে দেয়া নোটিশেও তাদের বিকল্প কোন কক্ষের কথা উল্লেখ করা হয়নি।
তবে হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল রউফ মামুন বলেন, কার্ডধারী হলের আবাসিক কোন শিক্ষার্থীকে কক্ষ ছাড়ার নির্দেশ দেয়া হয়নি। যারা হলের বৈধ শিক্ষার্থী রয়েছেন তাদের তালিকা করে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে মেয়াদোত্তীর্ণ ও বহিরাগত শিক্ষার্থীকে হল ছাড়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। হল ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সংস্কার করার জন্য তাদেরকে হল ছেড়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে।
এর আগে দীর্ঘদিন ধরে সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের বারান্দাগুলো ‘গণরুম’ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ১৫ বছর ধরে চলা এই বারান্দার ‘গণরুম’ সংস্কৃতি সম্প্রতি উচ্ছেদ করেছে হল প্রশাসন।
প্রসঙ্গত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন হলের মধ্যে একটি সলিমুল্লাহ মুসলিম হল। শতবর্ষী এই হলের বিভিন্ন কক্ষে ফাটল দেখা দেয়ায় সম্প্রতি হল প্রশাসন থেকে কক্ষগুলো থেকে শিক্ষার্থী সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে।