রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বতী উপাচার্য হিসেবে সাবেক বিচারপতি শুভ্রকমল মুখোপাধ্যায় শুক্রবার দায়িত্বভার বুঝে নিয়েছেন। কিন্ত তার নিয়োগ নিয়ে শিক্ষকমহল প্রবল ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। চলছে জোরদার বিতর্ক।
শিক্ষাবিদ ও অধ্যাপক সমিতিগুলোর মতে, ইউজিসির নিয়ম অনুযায়ী বিচারপতির উপাচার্যের চেয়ারে বসার যোগ্যতাই নেই। তবে বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকার চুপ থাকায় সমালোচনায় মুখর হয়েছেন অনেকে।
রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য পবিত্র সরকার বলেন, রাজ্যেও উচ্চশিক্ষার ভবিষ্যৎ নিয়েই উদ্বেগে রয়েছি। শিক্ষা দপ্তরকে এড়িয়ে রাজ্যপালের একতরফা উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে সরবার আদালতে না গিয়ে চুপচাপ বসে রয়েছে কেনো সেটাই বুঝতে পারছি না।
পশ্চিমবঙ্গ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (ওয়েবকুটা) এই নিয়োগ নিয়ে তীব্র আপত্তি জানিয়ে বলেছে, শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে কোনোভাবেই যুক্ত নন এমন সাবেক বিচারপতিকে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের বিধির পরিপন্থি। এটা সম্পূর্ণভাবে অনৈতিক পদক্ষেপ।
এই অধ্যাপক সংগঠনের বক্তব্য, রাজ্যের শিক্ষা দপ্তর এবং রাজ্যপালের দ্বৈরথে বেশ কিছুকাল যাবৎ উচ্চশিক্ষা জগতে যে নৈরাজ্য ও অচলাবস্থা চলেছে তাতে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো উপাচার্য নেই। তাদের অভিযোগ, ইতোমধ্যেই বহু বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউজিসির যোগ্যতা মান লঙ্ঘন করে একতরফাভাবে অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করা হয়েছে।
ওয়েবকুটার সভাপতি শুভোদয় দাশগুপ্ত এবং সম্পাদক কেশব ভট্টাচার্য আবেদন জানিয়ে বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষাকে সুপরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করার অপচেষ্টার বিরুদ্ধে নাগরিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা জরুরি।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সম্পাদক সনাতন চট্টোপাধ্যায় বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিসরের বাইরের কোনো ব্যক্তিকে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ করার উদ্দেশ্য ঠিক বোঝা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, শিক্ষা জগতের মানুষের কি খুব অভাব? আমরা উচ্চশিক্ষা বিরোধী এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছি।
এদিকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি পার্থপ্রতিম বিশ্বাস এবং সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায়ের বক্তব্য, স্থায়ী উপাচার্র্যের বদলে উপাচার্য হলেও সেই পদে বসার আবশ্যিক যোগ্যতার মান ভিন্ন হতে পারে না। এই প্রেক্ষিতে বর্তমান অস্থায়ী উপাচার্যের নিয়োগ বিধি ভঙ্গেরই সামিল।
তারা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, এমন নিয়োগ প্রাত্যহিক নিয়মে পরিণত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মানের অধোগতি হবে। এই নিয়োগের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে কল্যানী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, সারা ভারত সেভ এডুকেশন কমিটি, রাইট টু এডুকেশন ফোরাম প্রভৃতি সংগঠন।