দৈনিক শিক্ষাডটকম কুমিল্লা: কুমিল্লার বরুড়ায় নাগিরপাড় মাস্টার মমতাজ উদ্দীন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি দখল করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে পার্শ্ববর্তী জমির মালিক কাজী জিল্লুর রহমানের বিরুদ্ধে। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা তাকে উক্ত জায়গা দখলমুক্ত করার অনুরোধ জানালে তিনি উল্টো হুমকি-ধামকি দিতে থাকেন। জমি পুনরুদ্ধারের আবেদন জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবগত করা হলেও এক মাসেও কোনো অগ্রগতি হয়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নাগিরপাড় মৌজার ৪৬নং দাগে ১০৩নং নাগিরপাড় মাস্টার মমতাজ উদ্দীন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে স্থানীয় শাহ এমরান পাটোয়ারী বিদ্যালয় স্থাপনের জন্য দানপত্র দলিলের মাধ্যমে ৩০ শতক জমি দান করেন। পরবর্তীতে ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে ওই ভূমিতে স্কুলের অনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু এরপর থেকে বিদ্যালয় সংলগ্ন পার্শ্ববর্তী জমির মালিক কাজী জিল্লুর রহমান বিভিন্নভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে আসছেন এবং বিদ্যালয়ের উত্তর পূর্ব অংশে প্রায় ১ শতক জায়গা জোরপূর্বক দখল করে নেন। পরবর্তীতে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা তাকে উক্ত জায়গা দখলমুক্ত করার অনুরোধ জানালে তিনি উল্টো হুমকি-ধামকি দিতে থাকেন।
এক পর্যায়ে অভিযুক্ত কাজী জিল্লুর রহমান জনসাধারণের কৃষি জমিতে যাতায়াতে ব্যবহৃত বিদ্যালয় সংলগ্ন ২১ নং দাগের সরকারি খাস জমিতে পাকা সীমানা প্রাচীর দিয়ে অবৈধভাবে নিজ দখলে নিয়ে নেন। এছাড়াও স্কুলের পেছনের অংশে সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত ২ শতক জায়গা জোরপূর্বক দখল করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করেন। এতে বিদ্যালয়ের সম্পত্তি বেহাত ও স্থানীয় জনসাধারণের কৃষি জমিতে যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। বিপাকে পড়েন কৃষকরা।
জায়গাটি পুনরুদ্ধারে বিদ্যালয়ের সভাপতি মো. ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী গত ২০ মার্চ বাদী হয়ে বরুড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নু-এমং মারমা মং বরাবর আবেদন করেন।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী বলেন, কাজী জিল্লুর রহমান স্কুলের প্রায় ১ শতক জায়গা এবং স্কুলের পেছনের অংশে সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত ২ শতক জায়গা জোরপূর্বক দখল করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করেছেন। প্রশাসনের কাছে আমাদের একটাই দাবি স্কুল এবং খাসের জায়গা উদ্ধারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করবেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত কাজী জিল্লুর রহমান বলেন, স্কুল কিংবা স্থানীয়দের যাতায়াতের রাস্তায় কোনো দেওয়াল নির্মাণ করিনি। যেখানে সীমানা প্রাচীর দেওয়া হয়েছে সেটি একান্তই আমার জায়গা। স্কুল কর্তৃপক্ষ বা সরকার যদি কোনোভাবে প্রামাণ করতে পারেন এ জায়গার মালিক আমি না, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে আমি দখল ছেড়ে দেবো।
বরুড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নু-এমং মারমা মং বলেন, বিষয়টি উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখে ভূমির প্রকৃত মালিক নির্ণয় করবেন। এর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আহমেদ হাসান বলেন, এই ফাইল সম্পর্কে আমি অবগত নয়। এ বিষয়ে আপনাকে রোববার আপডেট দিতে পারবো।