বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে দেশের মানুষ স্বৈরশাসকের হাত থেকে মুক্তি পেয়েছে । সবাই এখন ন্যায় বিচার পাবে, থাকবে না কোনো ভেদাভেদ। এমনটাই প্রত্যাশা কোটি মানুষের মনে। তবে এবার তাহলে দূর হোক কলেজ শিক্ষকদের পদবি বৈষম্য।
হ্যাঁ যেটা বলছিলাম। একই যোগ্যতা নিয়ে কলেজে শিক্ষকতা শুরু হয়। সবার প্রথম পদবি প্রভাষক। এরপর অনুপাতের বেড়াজালে অর্থাৎ মোট প্রভাষকের (৫:১) সংখ্যক সৌভাগ্যবান প্রভাষক সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি লাভ করতেন। অবশিষ্টরা প্রভাষক হিসেবেই অবসরে যেতেন। তবে এইযে প্রভাষক থেকে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি লাভে বিশেষ কোনো যোগ্যতার প্রয়োজন নেই।
তবে গত মার্চ-২০২১ এ জারিকৃত সর্বশেষ জনবল কাঠামোতে এই প্রথার কিছুটা উন্নতি ঘটেছে। এখানে প্রভাষক পদে ১৬ বছরের অভিজ্ঞতা হলেই সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতির ব্যবস্থা করা হয়েছে। অপরদিকে মোট প্রভাষকের ৫০ শতাংশ নির্ধারিত ১০০ নম্বরের মূল্যায়নের মাধ্যমে সহকারী অধ্যাপক হবেন।
এখানেই করা হয়েছে পদবির বৈষম্য। নীতিমালায় বলা হয়েছে প্রভাষক যদি ডিগ্রি কলেজের হয় তাহলে তার পদবি হবে সহকারী অধ্যাপক। আর প্রভাষক যদি হয় উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ অথবা স্কুল অ্যান্ড কলেজের তাহলে তাদের পদবি হবে জ্যেষ্ঠ প্রভাষক। অথচ উভয় ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা, বেতন-ভাতাসহ সব একই।
আরো উল্লেখ্য, উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ অথবা স্কুল অ্যান্ড কলেজে ২০২১ এর নীতিমালা জারির পূর্বে যারা সহকারী অধ্যাপক হয়েছেন। তাদের পদবি বহাল থাকবে। শুধু নতুন করে যারা পদোন্নতি পাবেন তাদের পদবির ক্ষেত্রেই এই বৈষম্য।
আমরা হাজারো কলেজ শিক্ষক বৈষম্যবিরোধী এই সকারের কাছে পদবি বৈষম্যের জোর দাবি জানাচ্ছি। অযৌক্তিক অজ্ঞাত কারণে এই পদবি বৈষম্য করে তাদেরকে অপমান/অবমূল্যায়ন করা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা বিশ্ব বরেণ্য ড. মুহম্মদ ইউনূস, শিক্ষানুরাগী সাবেক শিক্ষক শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ স্যার নিশ্চয়ই আমাদের মনোকষ্ট বুঝবেন। আমরা একান্ত প্রত্যাশা করছি। আপনাদের উদ্যোগে দ্রুততম সময়ে অযৌক্তিক এই বৈষম্যের অবসান চাই। বিশ্ব শিক্ষক দিবসে আমাদের এই ক্ষুদ্র চাওয়া থেকে বঞ্চিত করবেন না নিশ্চয়ই।
লেখক: শিক্ষক