ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলায় বিশ্বকাপ ফুটবলের খেলা দেখতে ল্যাপটপ ও প্রজেক্টর না দেয়ায় এক স্কুলশিক্ষককে চড়থাপ্পড় মেরে লাঞ্ছিত করেছেন এক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য ও তার সহযোগীরা। আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার শিমলা রোকনপুর ইউনিয়নের তিল্লা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
লাঞ্ছিত ওই শিক্ষকের নাম আনোয়ার হোসেন। তিনি তিল্লা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষক বাদী হয়ে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য রাকিব হাসানসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
শিক্ষক আনোয়ার হোসেন বলেন, বেলা ১১টার দিকে তিনি বিদ্যালয়ের কার্যালয়ে বসে বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল তৈরি করছিলেন। এ সময় স্থানীয় ইউপি সদস্য রাকিব হোসেনের নেতৃত্বে কয়েকজন তাঁর কার্যালয়ে যান। তারা বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলা দেখার জন্য বিদ্যালয়ের প্রজেক্টর ও ল্যাপটপ দাবি করেন। তখন তিনি তাঁদের বলেন, ল্যাপটপে পরীক্ষার ফলাফল তৈরির কাজ চলছে, এখন দেয়া যাবে না। তা ছাড়া প্রধান শিক্ষকের অনুমতির ব্যাপার আছে। এ নিয়ে তারা প্রথমে গালমন্দ করেন। একপর্যায়ে ইউপি সদস্য রাকিব তাঁর জামার কলার ধরে টেনেহিঁচড়ে চড়থাপ্পড় মারতে থাকেন। তখন ইউপি সদস্যের সঙ্গে থাকা হামিদুল ইসলাম, সাদ্দাম হোসেন ও মাসুম উপর্যুপরি মারতে মারতে তাঁকে বিদ্যালয়ের বাইরে নিয়ে যান।
অভিযোগের বিষয়ে ইউপি সদস্য রাকিব হাসান বলেন, প্রধান শিক্ষক তাঁকে ল্যাপটপ ও প্রজেক্টর দিতে চেয়েছিলেন। তাই তারা বিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু শিক্ষক আনোয়ার হোসেন দিতে চাননি। এরপর তারা চলে আসেন। তাঁকে মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
তিল্লা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘যখন ঘটনা ঘটে, তখন আমি বিদ্যালয়ে ছিলাম না। ঘটনার পর বিদ্যালয়ে পৌঁছাই। গিয়ে দেখি, ওই শিক্ষক বিদ্যালয়ের বাইরে। তখন আমি শিক্ষক আনোয়ারকে বিদ্যালয়ে নিয়ে আসি।’
উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) শাহিন আক্তার বলেন, ওই শিক্ষককে লাঞ্ছিতের ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বলে তিনি আশাবাদী।
কালীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবু জাফর বলেন, দুপুরে ওই শিক্ষক থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।