দৈনিক শিক্ষাডটকম, রাবি: উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের ভর্তি ও ছাত্রত্ব থাকাকালীন ডোপ টেস্ট করানোর দাবি জানিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহমুদুর রহমান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বার্তায় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়, ইউজিসি ও সরকারের কাছে এ দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে মাহমুদুর রহমান বলেন, ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছিল, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের জন্য ‘ডোপ টেস্ট আইন’ হচ্ছে। কিন্তু সে আইন আলোর মুখ দেখেনি। শিক্ষার্থীরা যদি মাদকে আসক্ত হয়ে যায়, তারা দেশের সেবা কীভাবে করবে? তারা পিতা-মাতার স্বপ্নও পূরণ করতে পারবে না। তারাই তো ভবিষ্যৎ।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজী ভবনের তৃতীয় তলায় রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অবস্থান। বিভাগের চেয়ারম্যানের অফিসের পাশেই শিক্ষার্থীদের ওয়াশরুম। গত এক সপ্তাহ আগে সেখান থেকে ৮-১০টি ফেনসিডিলের বোতল উদ্ধার করেন এ অধ্যাপক।
এরপর গত বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তিনি লিখেন, ডোপ টেস্টের মাধ্যমে উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি ও ছাত্রত্ব থাকাকালীন ডোপ টেস্ট করানোর বিষয়টা কি আলোর মুখ দেখবে না? ভর্তির সময়ে শিক্ষার্থীর রক্তের গ্রুপের বিষয়টা যেমন গৃহীত হয়েছে, তেমনি ডোপ টেস্টের বিষয়টাও ভেবে দেখা দরকার।
নিজ বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে মাদকাসক্তির শঙ্কা প্রকাশ করে তিনি জানান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ আগে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ অ্যাকাডেমিক ভবনে ছিল। সেখান থেকে ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে এ (সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজী) ভবনে আসি। তখন থেকেই এখানের শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করা ওয়াশরুমটি অপরিষ্কার ছিল। সবাই তাদের অপ্রয়োজনীয় আসবাবপত্রসহ এখানে ফেলে রাখত।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের আবদারে আমি চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেয়ার পর দীর্ঘদিন ধরে অযত্নে পড়ে থাকা ওয়াশরুমটা পরিষ্কার করার চিন্তা করি। এ ওয়াশরুমের ছাদ পরিষ্কার করার সময় যারা কাজ করছিলেন, তারা এখানে মাদকের আলামত পান। আমি তখন অবাক হয়ে যাই।
‘অফিসের পিয়ন তারেকুর রহমান জানান, গত সপ্তাহে পরিষ্কার করার সময় সেখানে ৮-১০টা ফেনসিডিলের বোতল দেখতে পান। এগুলো সরিয়ে জায়গা পরিষ্কার করেছেন।’, যোগ করেন এ অধ্যাপক।
মাহমুদুর রহমান আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মানসিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রফেশনাল ও সার্বক্ষণিক লোক রাখতে হবে। সেখানে শিক্ষার্থীদের সহজ প্রবেশাধিকার থাকবে। কেন্দ্রের নির্দিষ্ট ডাটাবেইজ থাকবে। যেন র্যান্ডম সিলেকশন করে শিক্ষার্থীদের চেক করা যেতে পারে। সময়ে সময়ে আপডেট নিতে হবে।
উল্লেখ্য, ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের ২৬ জুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ভর্তির সময় ডোপ টেস্ট করার জন্য আইন তৈরি হচ্ছে (সংশোধন)। কিন্তু সে আইন আলোর মুখ দেখেনি। তবে ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য ডোপ টেস্ট কার্যক্রম চালু করেছিল।
গত রোববার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনস কমিটির সভায় ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের ডোপ টেস্টের মাধ্যমে ভর্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছে।