অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত পেনশন সংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদেরকে প্রতিশ্রুত সুপার গ্রেডে অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তনের দাবিতে অর্ধদিবস কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন সারা দেশের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা।
পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত এ কর্মবিরতি পালন করেন তারা। এ সময় জুলাইয়ের মধ্যে দাবি আদায় না হলে সর্বাত্মক কর্মবিরতির হুঁশিয়ারি দেন শিক্ষক নেতারা। সারা দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে একই কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। আজ বুধবার ও আগামীকাল বৃহস্পতিবারও একই কর্মসূচি পালন করবেন শিক্ষকেরা।
শিক্ষকরা বলেন, দাবি আদায় না হলে ১ জুলাই থেকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালিত হবে।
কলা ভবনের মূল ফটকের সামনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির ব্যানারে দুপুরে এক ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
ঢাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিনাত হূদা বলেন, অর্থমন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন ষড়যন্ত্রমূলক। এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসনের ওপর হস্তক্ষেপের শামিল। আমরা শিক্ষকেরা সর্বোচ্চ পরিশ্রম করি। যেটার নায্য পারিশ্রমিক আমরা পাই না। তারপরেও বিদ্যমান পেনশন ব্যবস্থায় আমরা সন্তুষ্ট ছিলাম।
ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও বাংলাদেশ শিক্ষক ফেডারেশনের মহাসচিব নিজামুল হক ভুঁইয়া বলেন, গত মার্চ মাসে ঘোষিত সর্বজনীন পেনশন সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন স্পষ্টতই বৈষম্যমূলক, সংবিধান পরিপন্থি। আমাদের সঙ্গে ৩৫টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের একাত্মতা পোষণ করে কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও নোবিপ্রবির সাবেক উপাচার্য ড. ওহিদ্দুজ্জামান বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা সীমিত বেতনের চাকরি করি। কিন্তু এই প্রজ্ঞাপন আমাদের পথে বসাবে। বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে এটা সংবিধান পরিপন্থি একটা প্রজ্ঞাপন।
কর্মসূচিতে আরো বক্তব্য দেন শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. সামাদসহ অন্যান্য শিক্ষক নেতারা।
এদিকে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার চত্ত্বরে এ অবস্থান কর্মসূচিতে শিক্ষকরা বলেন, আমাদের এ আন্দোলন সরকারবিরোধী আন্দোলন নয়। এটা আমাদের শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবি। এই আন্দোলন অর্থের জন্য নয়, আমাদের মর্যাদার জন্য। এতে শিক্ষকদের মর্যাদা ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে।
কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আবুল কালাম মোহাম্মদ লুৎফর বলেন, আমরা আমাদের পেশার সুযোগ-সুবিধার কথা বলছি। শ্রীলঙ্কা ও নেপালের মতো দেশেও শিক্ষকদের জন্য রয়েছে সম্মানজনক পে-স্কেল।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সহযোগী অধ্যাপক ড. শেখ মাশরিক হাসান বলেন, এই কর্মসূচিতে আমরা কোনো প্রশাসনিক ও দাপ্তরিক কোনো কাজ করবো না।