পশ্চিমবঙ্গের একমাত্র কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বভারতীতে বাংলাদেশসহ দেশবিদেশের বহু ছাত্র ছাত্রী প্রতিবছর পড়শোনা করতে আসেন। সেই বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীও বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরো তিন আধিকারিকের বিরুদ্ধেও এফআইআর করা হয়েছে।
শুক্রবার শান্তিনিকেতন থানায় এ এফআইআর দায়ের করেছেন প্রশান্ত মেশরাম নামে বিশ্ববিদ্যালয়েরই এক আধিকারিক। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক অ্যান্ড রিসার্চ বিভাগের ডেপুটি রেজিস্ট্রার পদে ছিলেন তিনি। এখন তিনি লিয়েন নিয়ে ওড়িশার কোরাপুট কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়েরর কন্ট্রোলার অব একজামিনেশন (পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক) পদে নিযুক্ত রয়েছেন।
প্রশান্ত মেশরামের অভিযোগ, পদোন্নতি আটকাতে চারজন একসঙ্গে কাজ করেছিলেন। এই চারজন হলেন, উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী, ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায়, ডেপুটি রেজিস্ট্রার তন্ময় নাগ, ইন্টার্নাল অডিট অফিসার প্রশান্ত ঘোষ। এরা সবাই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন বলে অভিযোগ তুলেছেন ওই অধিকারিক।
কর্মক্ষেত্রে পদোন্নতি আটকাতে ষড়যন্ত্র এবং তপসিলি সম্প্রদায়ের অন্তর্গত হওয়ায় অপমানজনক মন্তব্য ও হেনস্থা করার দুটি অভিযোগ তুলে বিশ্বদ্যিালয়ের উপাচার্যসহ চার জনের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছে। অভিযোগকারী আরো জানিয়েছেন, বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ তাঁকে কিছুতেই লিয়েনসহ ছাড় দিচ্ছিলো না। বরং টালবাহানা করে আটকে রাখা হচ্ছিলো। আবার পুরনো অভিযোগকে সামনে নিয়ে এসে অপদস্থ করা শুরু হয়েছিলো।
জানা গেছে, অভিযোগকারী জাতীয় তপসিলি জাতি কমিশনেও অভিযোগ জানিয়েছিলেন। কমিশন অভিযোগ পেয়ে উপাচার্য এবং ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব সঞ্জয় ঘোষকে তলব করেছিলো। নয়াদিল্লিতে গিয়ে কমিশনের দপ্তরে দেখাও করেছেন তারা। তারপর কমিশনের নির্দেশে প্রশান্ত মেশরামকে বিশ্বভারতী রিলিজ করে দেয়। তবে তাকে নানাভাবে হেনস্থা করা হচ্ছিলো।
বিশ্বভারতীর উপাচার্যসহ চারজনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়েরের ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসতেই বিশ্ববিদ্যালয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যেই নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে যে ভাষায় আক্রমণ করেছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ তাতে অনেকেই প্রতিবাদে সরব হয়েছেন। বৃহস্পতিবারই বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ অমর্ত্যসেনকে আশালীন আক্রমণ করে বিবৃতি জারি করেছে। বেশ কিছুদিন ধরে অমর্ত্য সেন বিশ্বভারতীয় ১৩ ডেসিমেল জমি দখল করে রেখেছেন বলে অভিযোগ তুলে বিশ্বভারতীর উপাচার্য শেষ দেখে নেবেন বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন। অবশ্য অমর্ত্য সেন এর বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে আদালতের দারস্ত হয়েছেন।