বিশ্বসেরা হতে চান দাবা প্রতিযোগিতায় জাতীয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়া পাবনার সাঁথিয়ার স্কুল ছাত্রী মেহজাবিন আক্তার জুবাইদা। জাতীয় স্কুল, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গ্রীষ্মকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় পাবনার সাঁথিয়া উপজেলা পরিষদ উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী জুবাইদা দাবা খেলায় অংশগ্রহণ করে জাতীয় পর্যায়ে দেশসেরা হয়েছেন। জুবাইদা সাঁথিয়া পৌরসভাধীন দৌলতপুর গ্রামের ব্যবসায়ী মোক্তার হোসেন এবং গৃহিনী সিমা খাতুন দম্পতির তৃতীয় সন্তান।
জানা গেছে, সিলেট আবুল মাল আব্দুল মুহিত ক্রীড়া কমপ্লেক্সে গত ২৭ সেপ্টেম্বর (বুধবার) থেকে শুরু হয়ে ৩০ সেপ্টেম্বর (শনিবার) এ প্রতিযোগিতার জাতীয় পর্যায়ের দাবা খেলা চলে। জুবাইদা প্রতিটি রাউন্ডে প্রথম হয়ে এ বিজয় অর্জন করে। গত রোববার সিলেটে সে পুরস্কার হিসেবে ট্রফি, মেডেল ও সনদপত্র গ্রহণ করে।
জুবাইদা প্রথম ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে সাঁথিয়া উপজেলা পর্যায়ে এবং পাবনা জেলা পর্যায়ে প্রথম স্থান অর্জন করে। পরবর্তীতে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে পর্যন্ত প্রতিবছর রাজশাহী বিভাগীয় পর্যায়ে সে প্রথম স্থান হওয়ার গৌরব অর্জন করে। আর এ বছর সে জাতীয় পর্যায়ে চ্যম্পিয়ন হলো।
জুবাইদা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমি শখ করে দাবা খেলা শুরু করি। এরপর চেষ্টা করেছি ভালো কিছু করার। আমার স্বপ্ন আমি দাবা খেলায় বিশ্বসেরা হতে চাই এবং বাংলাদেশকে উন্নত শিখরে তুলে ধরতে চাই। সেজন্য সবার দোয়া ও সহযোগিতা চাই।
জুবাইদার মা সিমাখাতুন বলেন, আমার মেয়ে দেশ সেরা হবে এটা ভাবতেই পারিনি। মেয়ের বিজয়ে আমরা অনেক খুশি। আমার মেয়েকে এ পর্যায়ে নিয়ে আসতে অনেক কষ্ট ও ত্যাগ শিকার করতে হয়েছে। আশা করি আমার মেয়ে শুধু দেশসেরা নয় একদিন বিশ্বসেরাও হবে।
জুবাইদার বাবা মোক্তার হোসেন জানান, জুবাইদাকে আমি নিজেই দাবা খেলা শিখিয়েছি। তৃতীয় শ্রেণি থেকেই সে দাবা খেলে। আমার বড় ছেলে বুয়েটে এবং মেজ মেয়ে ঢাকা বদরুন্নেছা সরকারি মহিলা কলেজে পড়ালেখা করে। জুবাইদা সবার ছোট এবং লেখাপড়ায় সে অনেক ভালো। পড়ালেখার পাশাপাশি সে দাবা খেলা অনুশীলন করে। ওর সফলতায় আমরা অনেক খুশি। মেয়েকে নিয়ে আমার স্বপ্ন সে যেন আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সেরা দাবারু হয়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) শিহাব উদ্দিন বলেন, জুবাইদা আমার বিদ্যালয়ের একজন মেধাবী ছাত্রী। তার এই অর্জনে আমরা খুশি। সে আমার প্রতিষ্ঠানের মুখ উজ্জ্বল করেছে। সে আমাদের এলাকার গর্ব। জুবাইদার খেলার ব্যাপারে আমরা তাকে বিভিন্ন সময় উৎসাহ দিয়েছি। ভবিষ্যতে আরো ভালো করার জন্য দোয়া রইলো।
বিদ্যালয়ের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মাসুদ হোসেন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, জুবাইদার সফলতায় আমাদের উপজেলা পরিষদের সব দপ্তর তথা সাঁথিয়াবাসী গর্বিত। তার সফলতার বিষয়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং আমাদের কিশোরকিশোরী ক্লাবের শিক্ষার্থীদের মাঝে উৎসাহ দেয়া হচ্ছে যাতে তারাও জুবাইদার মত প্রতিভার স্বাক্ষর রাখতে পারে। জুবাইদা আন্তর্জাতিক পর্যায়েও যেনো বাংলাদেশের গৌরবময় সাফল্য বয়ে আনতে পার এবং কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখতে পারে সে জন্য তাকে বিদ্যালয় এবং উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।