বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছে না রাজধানীর স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের। এ প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির একজন দাতা সদস্য একাদশ শ্রেণির ছাত্রীকে বিয়ে করা নিয়ে তোলপাড়, যা শেষ পর্যন্ত গড়িয়েছে আদালতে। এর মধ্যেই এবার বিয়ের দাবিতে আরেক ছাত্রী শিক্ষকের বাসায় গিয়ে ওঠেন। কয়েকজন শিক্ষক ও এলাকাবাসীর মধ্যস্থতায় ছাত্রীকে তার পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হয়। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর বাবা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। বিষয়টি নিয়ে বিব্রত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-অভিভাবকরা।
অভিযুক্ত ওই শিক্ষক হলেন- মুরাদ আহম্মদ। তিনি মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের মূল (মতিঝিল) শাখার ইংরেজি ভার্সনের দিবা শাখার ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক। অন্যদিকে ওই ছাত্রী বর্তমানে একটি কলেজে স্নাতক তৃতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত।
ভুক্তভোগী ছাত্রী ও তার পরিবারের অভিযোগ, বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও বিয়ের প্রলোভনে ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন শিক্ষক মুরাদ আহম্মদ। কিন্তু এখন আর বিয়ে করতে চাইছেন না তিনি। এজন্য ওই ছাত্রী গত ২৩ আগস্ট রাত ৯টার দিকে রাজধানীর শাহজাহানপুরে শিক্ষকের বাসায় গিয়ে ওঠেন।
এদিকে, এ ঘটনায় শাহজাহানপুর থানায় একটি জিডি করেছেন ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবা। জিডিতে তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘প্রায় ৭-৮ বছর আগে তার মেয়ে (ছাত্রী) শিক্ষক মুরাদ আহম্মদের কাছে কোচিং করতেন। মুরাদ বিবাহিত ও দুই সন্তানের জনক হওয়া সত্ত্বেও তার মেয়েকে প্রেমের সম্পর্ক করতে প্রলুব্ধ করেন। বিভিন্ন সময়ে নানা রকম প্ররোচনার প্রেক্ষিতে গত ২৩ আগস্ট ছাত্রীকে ওই শিক্ষক তার বাসায় যেতে বলেন।’
এতে আরও বলা হয়, ‘ওইদিন রাত ৯টায় আমার মেয়ে শিক্ষকের পাতা ফাঁদে পা দিয়ে কাউকে কিছু না বলে শিক্ষকের বাসায় চলে যান। খবর পেয়ে আমরা শিক্ষকের বাসা থেকে মেয়েকে উদ্ধার করতে যাই। এসময় ওই শিক্ষক আমাদের বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও হুমকি দেন। পরে শিক্ষক বাসা থেকে পালিয়ে যান এবং মেয়েকে উদ্ধার করে নিয়ে যাই আমরা।’
শিক্ষক মুরাদ আহম্মদ যেকোনো সময় ওই ছাত্রীর ক্ষতি করতে পারে বলেও আশঙ্কা করছে তার পরিবার।
অন্যদিকে মুরাদ আহম্মদের বিরুদ্ধে এর আগেও ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছিল। ২০১৩ সালে চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠায় তাকে মতিঝিল শাখা থেকে বনশ্রী শাখায় বদলি করা হয়। পরে তিনি আবার মূল শাখা ফিরে যান।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে মুরাদ আহম্মদের মোবাইল নম্বরে কয়েক দফা কল দেওয়া হলেও রিসিভ করেননি তিনি।
এ বিষয়ে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ (চলতি দায়িত্বে) মিজানুর রহমান বলেন, ‘ঘটনাটি কিছুটা শুনেছি। বিস্তারিত জানি না। উনি (মোরাদ) স্কুলেও আসেননি। এটা নিয়ে আমরা আলাপ-আলোচনা করে দেখবো।’