দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক: সাভারের আশুলিয়ার বৃষ্টির কারণে মাদরাসায় উপস্থিত না হতে পারায় আরাফাত ইসলাম রায়হান (১২) নামে এক শিক্ষার্থীকে বেধরক পিটিয়েছেন এক শিক্ষক। এ ঘটনায় আশুলিয়া থানায় অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবার।
বুধবার (২৯ মে) অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আশুলিয়া থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মাজহার।
এর আগে সোমবার (২৭ মে) ওই শিক্ষার্থীকে পেটানোর পর মঙ্গলবার (২৮ মে) রাতে এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবা কামরুল ইসলাম।
ভুক্তভোগী আরাফাত আশুলিয়ার কান্দাইল নয়াপাড়া এলাকার গার্মেন্টস শ্রমিক কামরুল ইসলামের ছেলে। সে পরিবারের সঙ্গে থেকে স্থানীয় কান্দাইল হাকিম মার্কেট এলাকার কান্দাইল আবরার কাউনিয়া মাদরাসায় পড়তো।
অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের নাম নাঈম। তবে তার বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবা কামরুল ইসলাম বলেন, ওই মাদরাসায় আবাসিক ও অনাবাসিক ব্যবস্থা আছে। আমার ছেলেকে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ আবাসিকে রাখতে চাইলে ছেলে রাজি হয়নি। সে দেড় বছর ধরে বাসায় থেকে ওই মাদরাসায় লেখাপড়া করতো। গত সোমবার সকালে রায়হানকে মাদরাসায় দিয়ে আমি কাজে যাই। রাতে বাসায় ফিরে দেখি ছেলে হাঁটতে পারছে না। পরে দেখি তার কোমরের নিচে থেকে পা পর্যন্ত জখমের দাগ। ছেলের কাছে জানতে চাইলে সে মারধরের বর্ণনা দেয়। পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করি।
তিনি আরও বলেন, মঙ্গলবার সকালে ছেলেকে নিয়ে মাদরাসায় গিয়ে মারধরের কারণ জানতে চাইলে উলটো তারা আমার ছেলেকেই অপরাধী বানায়। আমার ছেলে নাকি শিক্ষককে ধাক্কা দিয়েছে। তাই তাকে শাসন করা হয়েছে। এ সময় মাদরাসার সভাপতি মনির, প্রিন্সিপাল ও পিয়ার আলীর উপস্থিতিতে আমার ছেলেকে ওই শিক্ষকের কাছে ক্ষমা চাইতে হয়। বিচার না পেয়ে মঙ্গলবার রাতেই আশুলিয়া থানায় আমি লিখিত অভিযোগ করি। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ মাদরাসায় গেলেও অভিযুক্ত শিক্ষক নাঈমকে আটক করতে পারেনি। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
শিক্ষার্থী রায়হান বলে, রোববার বৃষ্টির কারণে মাদ্রাসায় যেতে পারিনি। সোমবার বাবা আমাকে মাদরাসায় দিয়ে কাজে যান। পরে আগেরদিন মাদরাসায় না আসার কারণে হুজুর আমাকে পিটিয়ে আটকে রাখেন। সন্ধ্যার দিকে সবাই মাগরিবের নামাজ পড়তে গেলে আমি পালিয়ে বাসায় যাই।
এ ব্যাপারে অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা ও আশুলিয়া থানার এএসআই মাজহার বলেন, আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। ভুক্তভোগীরা বিষয়টি মীমাংসা করে নিয়েছেন। বর্তমানে ওই শিক্ষার্থী স্থানীয় নারী ও শিশু হাসপাতালে ভর্তি আছে। তবে ভুক্তভোগীর বাবা কামরুল ইসলাম মীমাংসা বিষয়টি অস্বীকার করে ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন।