দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক : রাজধানীর বেইলি রোডের বাণিজ্যিক ভবনে অগ্নি নির্গমন পথ (ফায়ার এক্সিট) না থাকায় ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমরা অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রের ব্যবস্থা করেছি, তবুও মানুষ এতটা সচেতন নয়। আপনি একটি বহুতল ভবনে আগুন দেখেছেন যার কোনো অগ্নি নির্গমন পথ ব্যবস্থা নেই। শুক্রবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘জাতীয় বীমা দিবস-২০২৪’ উদযাপন অনুষ্ঠানে তিনি এ ক্ষোভপ্রকাশ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভবন বা স্থাপনা তৈরির সময় আমি সবসময় স্থাপত্যবিদদের অনুরোধ করি যেন খোলা বারান্দা বা ভেন্টিলেশন ও অগ্নি নির্বাপণের ব্যবস্থা রাখা হয়। কিন্তু স্থাপত্যবিদরা সেভাবে নকশা করেন না আবার মালিকরা এক ইঞ্চি জায়গাও ছাড়তে চায় না। ৪৬ জন মানুষ মারা গেছেন। এর চেয়ে দুঃখ ও কষ্টের আর কী হতে পারে। অথচ আমরা ফায়ার এক্সটিংগুইশার (নির্বাপক) লাগানোসহ অগ্নি নির্বাপণ পথের ব্যবস্থা রাখার নির্দেশ বার বার দিচ্ছি। সেটা কিন্তু তারা মানে না।
শেখ হাসিনা অভিমত ব্যক্ত করেন যে, দেখা যাবে এখানে কোনো বীমাও করা ছিল না। কাজেই বিনিময়ে কিছু পাবেও না। এসব ক্ষেত্রে সচেতনতা আসলে খুব বেশি প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে আরো ব্যাপকভাবে যেন মানুষ সচেতন হয় সেই জন্য আপনারা (বীমা সংশ্লিষ্ট মহল) চেষ্টা করবেন, আমাদের পক্ষ থেকে আমরা করে যাচ্ছি।
সরকারপ্রধান বলেন, আমাদের দেশের সাধারণ মানুষ যেন আরো বীমার দিকে এগিয়ে আসে সে বিষয়ে আপনারা আরো যত্নবান হবেন। মানুষ যেন বীমার দাবিগুলো সহজে পেতে পারে।
তিনি বলেন, যারা অসদুপায় অবলম্বনকারী তাদের কথা আমি বলছি না। প্রকৃতপক্ষে যাদের প্রাপ্য তারা যেন সহজে পেতে পারে। এদিকে একটু দৃষ্টি দিতে হবে। কারণ, দেখা যায় যারা দুইনম্বরি করে তারা আবার পার পেয়ে যায়। কারণ, তারা ম্যানেজ করে ফেলে। কাজেই কেউ যেন ম্যানেজ করতে না পারে আর সত্যিকার অর্থে যাদের প্রাপ্য তারা যেন সঠিকভাবে অল্পসময়ের মধ্যে বীমার টাকা পায় সেটাও ব্যাংকের মাধ্যমে আপনারা করে দিতে পারেন। এখন তো সুবিধা হয়ে গেছে। কাজেই সেদিকে আপনারা একটু দৃষ্টি দেবেন।
শেখ হাসিনা আরো বলেন, আমরা সবাইকে সচেতন করতে ‘বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন ও বীমা নিয়ন্ত্রণ সংস্থা আইডিআরএ’কে আরো জোরালো ভূমিকা রাখার জন্য আমি আহ্বান জানাচ্ছি।
অনুষ্ঠানে ব্যাংকের মাধ্যমে বীমা, অর্থাৎ ব্যাংকের গ্রাহকরা প্রয়োজনানুযায়ী ব্যাংক থেকেই বিমা পলিসি যাতে নিতে পারেন সেইজন্য প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে ‘ব্যাংকাস্যুরেন্স’ এর উদ্বোধন করেন।
প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে জাতীয় বীমা দিবস-২০২৪ উপলক্ষে বীমা দাবি পরিশোধের ভিত্তিতে চারটি প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা স্মারক দেন। তিনি দিবসটি উপলক্ষে স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যেও পুরস্কার বিতরণ করেন।
অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। স্বাগত বক্তব্য দেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ। বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জয়নুল বারী ও বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইএ) সভাপতি শেখ কবির হোসেনও অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে বিমাশিল্পের ওপর এবং ‘ব্যাংকাস্যুরেন্স’ এর ওপর নির্মিত পৃথক দু’টি প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের উদ্যোগে উদযাপিত দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে- ‘করবো বিমা গড়বো দেশ, স্মার্ট হবে বাংলাদেশ।’