আমরা মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি’তে আছি। আর মহাশূন্যে এই গ্যালাক্সির সঙ্গে রয়েছে দুটি স্যাটেলাইট গ্যালাক্সি, যেগুলো বয়ে চলেছে মহাশূন্যের ম্যাজেলানিক মেঘের মধ্য দিয়ে। এর মধ্যে ঘটে চলেছে নানা ঘটনা যা অবাক করেছে বিজ্ঞানীদের।
ওই বিশাল ম্যাজেলানিক মেঘের মধ্যে ‘আর১৩৬’ নামে পরিচিত এক তারাগুচ্ছ আছে, যা নিয়ে জল্পনার শেষ নেই।
সম্প্রতি একদল জ্যোতির্বিদ এমন ৫৫টি উচ্চগতির তারার খোঁজ পেয়েছেন, যেগুলো ওই তারাগুচ্ছ থেকে বেরিয়েছে।
এইসব তারার খোঁজ মিলেছে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির ‘গাইয়া’ মহাকাশ মানমন্দির ব্যবহার করে, যেখানে সম্ভবত এক তৃতীয়াংশ তারাই গত শতাব্দীতে বেরিয়েছে।
‘লার্জ ম্যাজেলানিক ক্লাউড (এলএমসি)’র মধ্যে অবস্থিত ‘টারানটুলা’ নীহারিকার বিশাল এক তারাগুচ্ছ হল ‘আর১৩৬’। এলএমসি একটি স্যাটেলাইট গ্যালাক্সি, যা আমাদের ছায়াপথ থেকে প্রায় এক লাখ ৬০ হাজার আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত।
মহাকাশের অন্যতম বিশাল তারাগুচ্ছ হিসেবে আর১৩৬’র বিশেষ পরিচিতি আছে। পাশাপাশি, এখন পর্যন্ত দেখা সবচেয়ে বড় কিছু তারা রয়েছে এতে।
তারাগুলো একেবারেই নতুন। মাত্রই কয়েক লাখ বছর পুরোনো, যেগুলো সম্ভবত ওই নীহারিকার গ্যাস থেকে গঠিত হয়েছে।
কোনো তারাগুচ্ছ গঠনের সময় গ্যাসের এলোমেলো গতিবিধি থেকে তৈরি হয় বিভিন্ন তারা।
গুচ্ছটিতে সেইসব তারা আড়াআড়িভাবে চলতে থাকায় সেখান থেকে তারা বেরিয়ে যাওয়ার ঘটনা অস্বাভাবিক কিছু নয়। এ বিষয়টিই গাইয়া টেলিস্কোপ দিয়ে পর্যবেক্ষণ করেছেন জ্যোতির্বিদরা।
২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে গাইয়া স্পেস অবজারভেটরি চালু করেছিল ইউরোপীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ‘ইএসএ’। এর পর থেকেই নিখুঁতভাবে মহাকাশ ম্যাপিংয়ের কাজ করে যাচ্ছে টেলিস্কোপটি।
ইউনিভার্সিটি অফ অ্যামস্টারডামের পিএইচডি শিক্ষার্থী মিচেল স্টুমের নেতৃত্বে একদল জোতির্বিদ এ অনুসন্ধানে দেখেছেন, সেইসব বেরিয়ে যাওয়া তারার গতি ঘণ্টায় এক লাখ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে।
৫০ ও ৬০’র দশকে রক সংস্কৃতিতে একদা প্রচলিত প্রবাদ ছিল ‘লিভ ফাস্ট, ডাই ইয়াং!” এটা মানুষের বেলায় সত্য কি না, তা নিয়ে বিতর্ক থাকলেও এইসব তারার বেলায় বিষয়টি নিশ্চিতভাবেই সত্য বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিজ্ঞানভিত্তিক সাইট নোরিজ।