২০১২ খ্রিষ্টাব্দে জালিয়াতির মাধ্যমে প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ পাওয়া এক শিক্ষকের বিষয়ে জানতে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। ওই শিক্ষকের নাম তাবিউর রহমান প্রধান। তিনি গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। তিনি দুই দফায় পদোন্নতি পেয়ে সহযোগী অধ্যাপক পদে কর্মরত আছেন। অনিয়মের অভিযোগ আছে তার পদোন্নতি নিয়েও ।
নিয়োগ বঞ্চিত শিক্ষক মাহমুদুল হকের করা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এই চিঠি দিয়েছে ইউজিসি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলমগীর চৌধুরী ।
গত ৮ জানুয়ারি ইউজিসির উপসচিব মো. গোলাম দস্তগীর স্বাক্ষরিত এক পত্রে অভিযোগের বিষয়ে দালিলিক প্রমাণাদিসহ দফাওয়ারী লিখিত বক্তব্য ও উক্ত বিষয়ে উচ্চ আদালতে রিট পিটিশনের বিপরীতে উচ্চ আদালতের জারিকৃত রুল ও আদেশ অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের গৃহীত পদক্ষেপের হালনাগাদ তথ্য সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রেরণ করতে বলা হয়।
ইউজিসিকে দুর্নীতি দমন কমিশনের পাঠানো চিঠি মারফত জানা যায়, ২০১২ খ্রিষ্টাব্দে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক পদে তাবিউর রহমান প্রধানের ‘অবৈধ’ নিয়োগের কারণে নিয়োগ বঞ্চিত হন মাহামুদুল হক। ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে সাত বছর আইনি লড়াইয়ের পর হাইকোর্টের রায়ে প্রভাষক পদে মাহামুদুল হক নিয়োগ পান। কিন্তু তিনি ঐ রায় অনুযায়ী জ্যৈষ্ঠতা ও চাকরির অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা না পাওয়ায় ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে আবার তিনি হাইকোর্টে রিট মামলা করেন।
মাহামুদুল হকের রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ১৪ মার্চ ২০২২ হাইকোর্ট জালিয়াতির কারণে কেন তাবিউর রহমানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়েছে। অন্যদিকে ২০১৩ সালের হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী কেন মাহামুদুল হককে ২০১২ সালের বাছাই বোর্ডের সুপারিশ অনুযায়ী নিয়োগ কার্যকর করে তাকে জ্যেষ্ঠতা ও চাকরির
অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা (বেতন-ভাতা) দেওয়া হবে না তাও ঐ রুলে জানতে চেয়েছে হাইকোর্ট। এরপর হাইকোর্টের আগের রায় এবং চলমান রুল অনুযায়ী গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তাবিউর রহমান প্রধানকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বরখাস্ত ও তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়, দুদক ও ইউজিসিতে পাঠানো এক চিঠিতে অনুরোধ করেন মাহমুদুল হক। এর পরিপ্রেক্ষিতে দুদক ইউজিসির নিকট এ ব্যাপারে জানতে চায়। দুদকের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে বেরোবি কর্তৃপক্ষকে ইউজিসি চিঠি পাঠিয়েছে।