দীর্ঘদিন ধরে চলমান স্বৈরাচারী মাফিয়াতন্ত্রের অপরাজনীতিকে উৎখাত করে দুর্নীতি ও শোষণমুক্ত এবং বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আত্মপ্রকাশ করেছে ‘ছাত্র-জনতা ঐক্যমঞ্চ’।
মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে এ নতুন জোটের আত্মপ্রকাশ ঘটে।
ছাত্র-জনতা ঐক্যমঞ্চের আহ্বায়ক মো. আব্দুল্লাহ আল হোসাইন বলেন, স্বৈরাচার উৎখাতে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তি সব শ্রেণি পেশার মানুষকে একত্রিত করে অন্তর্ভুক্তিমূলক এ ঐক্যমঞ্চের যাত্রা শুরু হলো।
এ ঐক্যমঞ্চের কমিটিতে কারা থাকবেন সেটি পরবর্তীতে জানানো হবে বলে জানান মো. আব্দুল্লাহ আল হোসাইন।
তিনি বলেন, ঐক্যমঞ্চের সদস্যরা বিশ্বাস করে যে, ছাত্র-জনতার অংশগ্রহণে দেশে অসাধারণ একটি বিপ্লব হয়েছে। হাজারো তাজা প্রাণের বিনিময়ে আমাদের এ অর্জন। এখনো প্রতিদিন আহত শহীদদের মৃত্যুর সংবাদ আসছে। হাজারো ছাত্র জনতা পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন, অন্ধ হয়েছেন। এ অসীম আত্মত্যাগের সঙ্গে কোনো ধরনের রাজনৈতিক বেঈমানি বাংলাদেশের জনগণ মেনে নেবে না।
তিনি আরও বলেন, দেশে দীর্ঘদিন ধরে বৈষম্য, শোষণ এবং রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার দানবীয় অপব্যবহার চলেছে। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী দিয়ে প্রতিবাদী মানুষের কণ্ঠস্বর রুদ্ধ করা হয়েছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরে এখন মানুষ তাদের মত প্রকাশ করতে শুরু করেছে। কেমন বাংলাদেশ গড়তে চায় সেই অভিপ্রায় প্রকাশ করতে শুরু করেছে। অপরপক্ষে, খুনি হাসিনা সরকারের সুবিধাপ্রাপ্ত দালালরা সক্রিয় হয়েছে নানা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে। কিন্তু বাস্তবতা হলো এই যে, ছাত্র-জনতা এখনো ঐক্যবদ্ধ আছে যেন ভবিষ্যতে এ বাংলাদেশে আর কোনো রাজনৈতিক দল, ব্যক্তি বা দালালগোষ্ঠী ক্ষমতায় গিয়ে পুনরায় ফ্যাসিবাদী কায়েম করতে না পারে।
তিনি বলেন, পুরোনো সুবিধাবাদী, সমভালোভী রাজনৈতিক গোষ্ঠী ও রাজনীতি বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা প্রত্যাখ্যান করেছে। এখন প্রয়োজন বাংলাদেশপন্থি, সৎ ও দেশপ্রেমিক সফল শ্রেণি-পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ থাকা। রক্তাক্ত গণঅভ্যুত্থানের রক্তের দামে গঠিত হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার যার উদ্দেশ্য ছাত্র-জনতার জান-জবানের স্বাধীনতার ম্যান্ডেট পূরণ করা, রাষ্ট্রের সংবিধান ও গণতন্ত্র পরিপন্থি সব নীতিমালা সংস্কার করে জনগণকে সত্যিকার একটি স্বাধীন দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশের নব যাত্রা শুরু করা। তার জন্য প্রয়োজনীয় সবধরনের সহযোগিতার হাত প্রসারিত আছে। একই সঙ্গে এ প্রক্রিয়ার কোনো ব্যত্যয় হলে, দুর্নীতিবাজ ও স্বৈরাচারের দালালদের পুনর্বাসিত করা হলে, আমলাতান্ত্রকে পালন করতে চাইলে ছাত্র-জনতা আবারো সোচ্চার হবে।