উজান থেকে ভাটির দেশে পানি ছাড়ার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক যে নিয়ম রয়েছে ভারত সেটা প্রতিপালন করেনি বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
শুক্রবার (২৩ আগস্ট) হবিগঞ্জের বন্যা কবলিত মশাজান খোয়াই নদীর ব্রিজ এলাকা পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন তিনি।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, উজানের দেশে যদি অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হয় এবং পানি ছেড়ে দেওয়ার প্রয়োজন হয় তাহলে ভাটির দেশকে আগে থেকেই জানানোর প্রয়োজন হয়। যাতে করে ভাটির দেশের লোকজন প্রস্তুতি নিতে পারে। কিন্তু এবার এই জানানোর বিষয়টি ভারত প্রতিপালন করেনি। ভারতের সঙ্গে আমাদের চুক্তিতেও এমনটি বলা হয়েছে।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, এবারের বিষয় থেকে শিক্ষা নিয়ে যত অভিন্ন নদী রয়েছে সেগুলোর সবকয়টার ব্যাপারেই পানি ছেড়ে দেওয়ার প্রশ্ন দেখা দিলে, যাতে আগাম সতর্কতা বাংলাদেশকে জানানো হয়, সেই বার্তা ভারতকে দেওয়া হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস ভারতীয় দূতাবাসকে বিষয়টি জানিয়েছেন। ভবিষ্যতে যাতে এমন অবস্থা না হয় তার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করছে।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, প্রাকৃতিক সমস্যা আসবেই, কিন্তু এটি না জানানোর কারণে যাতে মনুষ্যসৃষ্ট সমস্যা না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। দেশকে বন্যামুক্ত রাখতে নদীকে নদীর মতো রাখা উচিত। বাঁধগুলো সুরক্ষিত রাখা উচিত।
উপদেষ্টা ওই এলাকার গোপায়া ও রাঙ্গারগাও গ্রামের পাশে খোয়াই নদীর বাঁধ পায়ে হেটে দেখেন। এ সময় শত শত লোক তাকে বালু ও মাটি উত্তোলনের কারণে বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়টি অবগত করেন। তিনি সবার কথা মনযোগ সহকারে শোনেন।
এর আগে তিনি জেলার সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের প্রধান ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন হবিগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক প্রশান্ত সোম মহান, পুলিশ সুপার আক্তার হোসেন, সেনাবাহিনীর লে. কর্নেল নাজির ও মেজর ইশরাত। সকলের কাছ থেকে পরিবেশ উপদেষ্টা বন্যার বিষয়ে হবিগঞ্জের অবস্থা অবগত হন।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান তার পৈত্রিক গ্রাম চুনারুঘাট উপজেলার সদর ইউনিয়নের নরপতি হাবিলিতে উপস্থিত হয়ে তার পিতা সাবেক মন্ত্রী সৈয়দ মহিবুল হাসানের কবর জিয়ারত করেন। পরে মুড়ারবন্দ সিপাহসালার সৈয়দ নাসির উদ্দীনের মাজার জিয়ারত করেন তিনি।