বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের বক্তব্য ইঙ্গিতপূর্ণ এবং উসকানিমূলক বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর রামপুরায় ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ আয়োজিত অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের কাছে এ মন্তব্য করেন তিনি। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে নিহত রিকশাচালক সাগরের পরিবারকে আর্থিক অনুদান দিতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে রিজভী বলেন, ‘একটি বিষয় আমি অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ভারতের সেনাবাহিনীর কমান্ডারদের সঙ্গে বৈঠকে বলেছেন যুদ্ধের মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত থাকতে হবে। এটা তাদের দেশের ব্যাপার, তাদের দেশের নিরাপত্তার ব্যাপার।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের উদ্বেগের বিষয় যা আমাদের আশঙ্কার কারণ তৈরি করেছে, তিনি বলেছেন- রাশিয়া, ইউক্রেন, হামাস ও বাংলাদেশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। বাংলাদেশে তো কোনো যুদ্ধ হচ্ছে না। এখানে শতাব্দীর সেরা গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচার সরকারের পতন ঘটানো হয়েছে। এটা আমাদের নিজেদের বিষয়, আমাদের ওপর দানব চেপে বসে আমাদের রক্ত চুষে খাচ্ছিল। জনগণের পকেট কেটে তারা হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে। সেই দানব সরকারকে হটাতে ছাত্র-জনতা আন্দোলনের মাধ্যমে তাদের রক্ত দিয়ে লড়াই করেছে, আন্দোলন করেছে। সেই আন্দোলনের মুখে দানব সরকারের প্রধান পালিয়ে গেছেন।’
বিএনপির এ সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশে এখন স্বাভাবিক পরিস্থিতি বিদ্যমান। বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। রাজনাথ সিং রাশিয়া, ইউক্রেন, ইসরায়েল, হামাসের সঙ্গে বাংলাদেশের নাম বলা ইঙ্গিতপূর্ণ এবং উসকানিমূলক। এ বিষয়ে বাংলাদেশের সব ছাত্র-জনতাকে সতর্ক থাকতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘নানান ধরনের দুরভিসন্ধি এখনো চলছে। যারা পরাজিত হয়েছে তাদের আছে বিপুল পরিমাণ কালো টাকা, বিগত ১৬ বছরে এই কালো টাকা তারা কামিয়েছে। এখন তারা এই কালো টাকা ব্যবহার করে নানান ষড়যন্ত্র করছে। পোশাকশ্রমিকদের তারা নানাভাবে ব্যবহার করার চেষ্টা করছে। গোটা দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য তারা গভীর ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে দেশকে দুর্যোগের মধ্যে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করছে। দেশবাসীকে এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। আশুলিয়ায় শ্রমিকদের উসকানি দিচ্ছে এই অশুভ শক্তি। আবার এই ছাত্র-জনতা-শ্রমিকরা মিলে তাদের প্রতিরোধ করতে হবে।’
রিজভী আরও বলেন, ‘বিগত ১৬ বছরে প্রায় ১০০ টির মতো বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন হয়েছে। ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে খসড়া চুক্তি বা শর্ত সই করে তাদের সঙ্গে হাজার হাজার কোটি টাকা লেনদেন করেছে। কারণ, তাদের মধ্যে পারসেন্টের ব্যাপার আছে, টেবিলের নিচ দিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। কোনো প্রকার শর্ত না দেখেই তারা চুক্তি করেছে।’
এসময় উপস্থিত ছিলেন- আমরা বিএনপি পরিবারের আহ্বায়ক সাংবাদিক আতিকুর রহমান রুমন, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা জাহিদুল কবির, যুবদল নেতা মেহবুব মাসুম শান্ত, ডা. আব্দুল আউয়াল, আরিফুর রহমান তুষার প্রমুখ।