একুশে পদক ও বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ, ভাষাবিদ, গবেষক ও প্রাবন্ধিক অধ্যাপক ড. মাহবুবুল হক মারা গেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক প্রকাশ দাশ গুপ্ত বলেন, ‘ড. মাহবুবুল হক দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগ ও কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন। বুধবার (২৪ জুলাই) দিবাগত রাতে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
২৫ জুলাই দুপুরে তার মরদেহ রাজধানীর ভাটারার বাসায় নেওয়া হবে। এরপর জানাজা শেষে নেওয়া হবে চট্টগ্রামে। সেখানেই ২৬ জুলাই তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
ড. মাহবুবুল হক প্রবন্ধে অবদানের জন্য ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন। এ ছাড়া গবেষণায় অবদান রাখায় ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে একুশে পদকে ভূষিত হন।
তিনি ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দের ৩ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। জন্মস্থান ফরিদপুরের মধুখালি। শৈশব থেকে বেড়ে ওঠা চট্টগ্রামে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৯ খ্রিষ্টাব্দে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক (সম্মান) এবং ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দে একই বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।
শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন মাহবুবুল হক। শিক্ষকতা করেছেন চট্টগ্রামের রাঙ্গুনীয়া কলেজ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে। পরে প্রভাষক হিসেবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে যোগদান করেন। অধ্যাপক হিসেবে অবসরে যান।
শিক্ষকতার পাশাপাশি প্রায়োগিক বাংলা ও ফোকলোর চর্চা, গবেষণা, সম্পাদনা, অনুবাদ ও পাঠ্যবই রচনা করে পরিচিতি লাভ করেছেন মাহবুবুল হকের। বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, বাংলা একাডেমি, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডসহ বিশেষজ্ঞ হিসেবে নানা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করেছেন।
প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের বেশ কয়েকটি বাংলা পাঠ্যবইয়েরও রচয়িতা তিনি। আহ্বায়ক হিসেবে নতুন শিক্ষানীতি অনুযায়ী ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের বাংলা শিক্ষাক্রম ও বাংলা পাঠ্যবই প্রণয়নে দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রমিত বাংলা বানানের নিয়ম প্রণয়নে সক্রিয় ভূমিকা রয়েছে তার।
তার চল্লিশটির বেশি বই প্রকাশিত হয়। উল্লেখযোগ্য বইয়ের মধ্যে: বাংলা বানানের নিয়ম, রবীন্দ্র সাহিত্য রবীন্দ্র ভাবনা, ইতিহাস ও সাহিত্য, সংস্কৃতি ও লোকসংস্কৃতি এবং বাংলার লোকসাহিত্য: সমাজ ও সংস্কৃতি প্রভৃতি।