ঢাকার ভাসানটেক সরকারি কলেজে শুক্রবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মদিন ও জাতীয় শিশুদিবস যথাযথ মর্যাদায় উদযাপন করা হয়। দিনের অনুষ্ঠানসূচির মধ্যে ছিলো সূর্যোদয়লগ্নে যথাযথ সম্মানের সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি এবং ‘বাংলাদেশের হৃদয় হতে’ স্মারক ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণ, শেখ রাসেল দেয়ালিকায় দেয়াল পত্রিকা উন্মোচন। এছাড়াও কলেজের স্বাধীনতা মিলনায়তনে আয়োজন করা হয় আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের।
সভার শুরুতে সকলে দাঁড়িয়ে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন। অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের বক্তব্য এবং কবিতা আবৃত্তি, সংগীত ও নৃত্য পরিবেশনা, শিক্ষকদের আলোচনা ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ করা হয়। দ্বিতীয় পর্বে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ছিলো দেশাত্মবোধক সংগীত ও নৃত্য পরিবেশনা।
সবশেষে বঙ্গবন্ধু এবং তাঁর পরিবারের শহীদ সদস্যসহ দেশ ও জাতির কল্যাণে দোয়াও করা হয়। আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকার ভাসানটেক সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মাহমুদা খাতুন। বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক মোহাম্মদ মামুন রেজা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কমিটির আহ্বায়ক এবং দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. বজলুর রহমান রফিক।
শিক্ষার্থীরা ছাড়াও আলোচনা পর্বে বঙ্গবন্ধুর জীবনের নানা দিক নিয়ে গঠনমূলক বক্তৃতা করেন বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আতিয়া খন্দকার, উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আব্দুল হাই।
আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তারা বলেন, বাঙালি এবং বাংলাদেশের কল্যাণ কামনাই ছিল বঙ্গবন্ধুর সারাজীবনের আরাধ্য। বাংলাদেশের পটভূমিকায় তিনি একক কোন ব্যক্তি নন,শুধু একটি নামও নন,সমগ্র বাঙালির সমষ্টি তিনি,সমগ্র বাংলার ইতিহাসও তিনি। বাঙালি এবং বাংলাদেশকে তিনি ধারণ করেছিলেন তাঁর সমস্ত সত্বায়। তাই তো হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। একই সঙ্গে নিপীড়িত মানুষের নেতা,গণমানুষের নেতা হিসেবে বঙ্গবন্ধুর নাম বিশ্বব্যাপী অত্যন্ত সমাদৃত। স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম দিয়ে তার খ্যাতি ছড়িয়ে আছে বিশ্বময়। বিশ্বনেতাদের চোখে তিনি হিমালয়সম।
অধ্যক্ষ অধ্যাপক মাহমুদা খাতুন বলেন, বঙ্গবন্ধু হলেন সেই নেতা যিনি বাঙালির অতীত, বর্তমান এবং ভবিষৎকে তাৎপর্যমণ্ডিত করেছেন। ঐতিহ্যে স্থির থেকে বাঙালির আধুনিক পরিচয়কে বহুমাত্রিক পূর্ণতা দান করেছেন বঙ্গবন্ধু। তাই বাঙালি,বাংলাদেশ আর বঙ্গবন্ধুকে আলাদা করে দেখার সুযোগ নেই। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ সমার্থক শব্দের নাম।তিনি আরো বলেন, মনেপ্রাণে খাঁটি বাঙালি ছিলেন বঙ্গবন্ধু। তাঁর যাপিত জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে পরিচয় রয়েছে বাঙালিয়ানার। জীবনব্যাপী বাঙালিয়ানারই সাধনা করে গেছেন বঙ্গবন্ধু। জীবন যাপনের মধ্য দিয়েও বাঙালি হিসেবে তাঁর নিজস্বতার পরিচয় সুস্পষ্ট হয়। আমাদের বাঙালিত্বের জীবন সাধনায়ও তিনি তাই নিত্য অনুসরণীয়, অনন্য অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব।