দৈনিক শিক্ষাডটকম, চবি : চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আইন ১৯৭৩ লঙ্ঘন করে এবং প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও বাংলা ও আইন বিভাগসহ বিভিন্ন বিভাগে শিক্ষক নিয়োগে ব্যাপক অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে টানা অবস্থান কর্মসূচিতে নেমেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি।
সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চত্ত্বরের সামনে এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন চবি শিক্ষক সমিতি। কর্মসূচিতে উপস্থিত আছেন সভাপতি অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আব্দুল হক।
চবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আব্দুল হক বলেন, উপাচার্য ও তার পন্থির লোকেরা নিজে থেকে বিজ্ঞপ্তি দিচ্ছেন নিজে থেকে বোর্ড বসাচ্ছেন। শিক্ষকগণ যখন তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেছে তখন সে সভাপতি মহোদয়ের সাথে অনেক রুঢ় আচরণ করেছেন। তিনি পরে আমাদের সাথে দেখা করার জন্য ছয় জনকে ডেকে নিয়েছেন। তিনি আমাদের এক ঘন্টা বসিয়ে রেখে এরপর বলেন উনাদের সাথে আমি কথা বলতে রাজি নই আমি অপমানিত বোধ করেছি। যেখানে তিনি নিজে অপমান করেছেন সেখানে তিনি অপমানিত বোধ করেছেন বলে আর কোনো কথা বলেননি। যথারীতি সিলেকশন বোর্ডের যে সদস্যগণ কিছু প্রার্থীদের নিয়ে গোপনে প্রক্টরের গাড়িতে করে একটি জায়গায় গিয়ে সিলেকশন বোর্ডের প্রক্রিয়াটি চলমান রেখেছেন বলে আমাদের কাছে খবর আছে।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী বলেন, উপাচার্য উনার কয়েকজন প্রার্থীকে নিয়ে চুপে চুপে বাংলোতে নিয়ে গেছেন। এরকম নজিরবিহীন ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয়ে আর কখনও ঘটেনি। এই অবস্থায় আমরা উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করছি।
গতকাল শিক্ষক সমিতির অবস্থানের মুখে পড়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে চবি উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যসহ নির্বাচনী বোর্ডের সদস্যরা উপাচার্য কার্যালয় ত্যাগ করে। অভিযোগ উঠেছে, অজ্ঞাত স্থানে নির্বাচনী বোর্ডের সভা বসে। এদিন দ্বিতীয় দফায় উপাচার্যের সাক্ষাৎ পেতে ব্যর্থ হয় শিক্ষক সমিতি। এরপর সন্ধ্যা ৬ টায় সংবাদ সম্মেলন করে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণা করেন চবি শিক্ষক সমিতি।
সম্প্রতি বাংলা বিভাগে ৭ জন ও আইন বিভাগে ২ জন শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। অভিযোগ উঠেছে, শিক্ষক নিয়োগের প্রয়োজন নেই মর্মে দুই বিভাগের পরিকল্পনা কমিটি থেকে দেওয়া সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আপত্তির মুখে উপাচার্যের একক ক্ষমতাবলে এ বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। এ প্রক্রিয়াকে ১৯৭৩-এর অধ্যাদেশ এর লঙ্ঘন বলছে চবি শিক্ষক সমিতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষকরা।