ভুয়া সনদেও বহাল তবিয়তে প্রধান শিক্ষক মালেক গাজী - দৈনিকশিক্ষা

ভুয়া সনদেও বহাল তবিয়তে প্রধান শিক্ষক মালেক গাজী

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক : ভুয়া সনদে চাকরি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পরেও বহাল তবিয়তে চাকরি চালিয়ে যাচ্ছেন সাতক্ষীরা সদরের নবারুণ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল মালেক গাজী। যশোর শিক্ষা বোর্ডের এক কর্মকর্তা ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গড়িমসি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় শিক্ষানুরাগীরা বিষয়টি নিয়ে ভীষণভাবে ক্ষুব্ধ বলে জানা গেছে।   

দৈনিক আমাদের বার্তার হাতে আসা তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল মালেক গাজীর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করেছেন তারই সহকর্মীরা। তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম ভূঁইয়া অনিয়ম তদন্তের দায়িত্ব দেন উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা সঞ্জিব কুমার দাশকে। তদন্ত শেষে তিনি অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার কথা প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, মালেক গাজী ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দের জুনে কারিমা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কম্পিউটার বিষয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান। ওই পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নীতিমালার জনবল কাঠামো ১৯৯৫ অনুযায়ী প্রার্থীকে এসএসসি, এইচএসসি ও স্নাতক শ্রেণিতে দ্বিতীয় বিভাগে পাস থাকতে হবে।

কিন্তু অভিযুক্ত গাজীর স্নাতক ডিগ্রি ছিলো ৩য় শ্রেণির। উপরন্তু, নিয়োগের ৬ মাস পরে  সাতক্ষীরার কম্পিউটার পয়েন্ট নামে যে প্রতিষ্ঠানের সনদ তিনি দাখিল করেন সেটি সরকার অনুমোদিত বা নিবন্ধিত কোনো প্রতিষ্ঠান নয়। তারপরও ওই প্রতিষ্ঠানের সনদসহ সব পরীক্ষায় ২য় বিভাগে পাস উল্লেখ করে ২ হাজার ৫৫০ টাকার স্কেলের পরিবর্তে ৩ হাজার ৪০০ টাকার সরকারি বেতন-ভাতা নেয়া শুরু করেন তিনি। 

পরে ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দের সেপ্টেম্বরে সাতক্ষীরা সদরের নবারুণ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। যোগদানের সময় প্রধান শিক্ষক হতে সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ (টিটিসি) থেকে বিএড সনদ অর্জন করার বাধ্যবাধকতা থাকলেও তিনি তা করেননি।    

শিক্ষক নিয়োগের পর আবেদন সাপেক্ষে বিষয় অনুমোদনের পর এমপিওভুক্তি হতে হয়। কিন্তু ২০০১ খ্রিষ্টাব্দের ২০ নভেম্বর স্কুল কর্তৃপক্ষ কম্পিউটার বিষয় খোলার আবেদন করেন। ২০০২ খ্রিষ্টাব্দের ৩১ জুলাই যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বোর্ডের উপপরিচালক নবম ও দশম শ্রেণিতে কম্পিউটার বিষয় খোলার চিঠিতে সাক্ষর করেন। এর আগেই নিয়ম বহির্ভূতভাবে ২০০১ খ্রিষ্টাব্দের পহেলা অক্টোবর আব্দুল মালেক গাজী এমপিওভুক্ত হন। কম্পিটার বিভাগ খোলার আগেই তিনি কীভাবে এমপিওভুক্ত হলেন তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।

২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে বিদ্যালয়টি সেকেন্ডারি এডুকেশন কোয়ালিটি অ্যান্ড অ্যাকসেস এনহান্সমেন্ট প্রজেক্ট (সেকায়েপ) থেকে ১ লাখ টাকা উদ্দীপনা পুরস্কার পায়। নীতিমালা অনুসারে এ টাকা নির্ধারিত শিক্ষকদের মধ্যে শতকরা হিসাবে বণ্টনের শর্ত ছিলো। সেকায়েপ নীতিমালা বহির্ভূতভাবে এ টাকা শিক্ষকদের মধ্যে বণ্টন না করে প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নমূলক কাজে ব্যয়ের জন্য ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের এক সভায় উল্লেখ করা হয়। কোন উন্নয়নকাজে এ টাকা ব্যয় হয়েছে তদন্তের সময় প্রধান শিক্ষক তা উপস্থাপনে ব্যর্থ হয়েছেন। ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে গাজী এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যোগদানের পরে কোনো অর্থ কমিটি করার উদ্যোগ নেননি। যার ফলে প্রতিষ্ঠানের আয়- ব্যয়ের কোনো হিসাব নেই বলে অভিযোগ রয়েছে।

এ ছাড়াও এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অভিযুক্ত গাজী প্রতি শ্রেণিতে দুইটি শাখার অনুমোদন থাকলেও আরো বাড়তি দুইটি শাখা খুলেছেন। যার কোনো অনুমোদন নেই। এই শাখা চালানোর জন্য খণ্ডকালীন ২৫ জন শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রেও কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা করেননি তিনি। 

তাই তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর তার বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। কিন্তু, বেপরোয়া মালেক গাজী বহাল তবিয়তে চাকরি চালিয়ে যাচ্ছেন। বেতন-ভাতা তুলছেন। 

এ ব্যাপারে যশোর শিক্ষা বোর্ডের স্কুল পরিদর্শক মো. সিরাজুল ইসলাম দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, বিষয়টি আমাদের এখতিয়ার বহির্ভূত। তদন্ত প্রতিবেদনটি আমরা মাউশি অধিদপ্তরে পাঠাবো। পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবে। এ ছাড়াও এ বিষয়ে একটি মামলা চলমান রয়েছে বলে আমরা দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নিতে পারছি না।

তবে অভিযোগকারী এক শিক্ষকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মামলার বিষয়টি সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়। মামলা এবং প্রধান শিক্ষকের দুর্নীতির বিষয়টি এক নয় বলে জানান তিনি।  

তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করে দৈনিক আমাদের বার্তাকে মালেক গাজী বলেন, আমার কাগজপত্র সবই ঠিক আছে। এ বিষয়ে বারবার প্রতিপক্ষ অভিযোগ দিলে তদন্ত হয়। তদন্তে কোনো অসামঞ্জস্যতা পায়নি কমিটি।

পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আইইউটির ৩ ছাত্রের মৃত্যু - dainik shiksha পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আইইউটির ৩ ছাত্রের মৃত্যু অনার্স কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণি বাদ দেয়া উচিত - dainik shiksha অনার্স কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণি বাদ দেয়া উচিত ভিকারুননিসা নূন স্কুলে ১ম থেকে ৯ম শ্রেণিতে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha ভিকারুননিসা নূন স্কুলে ১ম থেকে ৯ম শ্রেণিতে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রাথমিকে ২০ হাজার শিক্ষকের পদ সৃষ্টি হচ্ছে - dainik shiksha প্রাথমিকে ২০ হাজার শিক্ষকের পদ সৃষ্টি হচ্ছে স্কুল শিক্ষাকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বর্ধিত করা উচিত - dainik shiksha স্কুল শিক্ষাকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বর্ধিত করা উচিত নতুন পাঠ্য বইয়ে থাকছে শহীদ আবু সাঈদ ও মুগ্ধের বীরত্বগাথার গল্প - dainik shiksha নতুন পাঠ্য বইয়ে থাকছে শহীদ আবু সাঈদ ও মুগ্ধের বীরত্বগাথার গল্প শিক্ষাক্ষেত্রে আমরা পিছিয়ে আছি - dainik shiksha শিক্ষাক্ষেত্রে আমরা পিছিয়ে আছি ইএফটিতে বেতন দিতে এমপিও আবেদনের সময় এগোলো - dainik shiksha ইএফটিতে বেতন দিতে এমপিও আবেদনের সময় এগোলো কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে গুচ্ছভুক্ত ২৪ বিশ্ববিদ্যালয়ে পঞ্চম পর্যায়ের ভর্তি আজকের মধ্যে - dainik shiksha গুচ্ছভুক্ত ২৪ বিশ্ববিদ্যালয়ে পঞ্চম পর্যায়ের ভর্তি আজকের মধ্যে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0044300556182861