দৈনিক শিক্ষাডটকম, কিশোরগঞ্জ: কিশোরগঞ্জের ভৈরবে জিল্লুর রহমান স্কুল অ্যান্ড কলেজের ম্যানেজিং কমিটি নিয়ে ও বাজারের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আগানগর গ্রামের দু'পক্ষের মাঝে ফের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে ঘরবাড়ি, দোকানপাট ও আওয়ামী লীগের কার্যালয় ভাংচুর করা হয়।
আজ বুধবার (৮ মে) সকালে আগানগর গ্রামের উওর পাড়া ও দক্ষিণ পাড়ার মাঝে ফের এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের প্রায় ৫০ জন আহত হয়। খবর পেয়ে ভৈরব থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আহতরা হলেন- আসাদ মিয়া, রতন মিয়া, শাহ আলম, শাওন, সাইকুল ইসলাম, খোকন, মানিক মিয়া, সায়মন, জয়নাল আবেদীন, রফিকুল ইসলাম, মোরাদ, ফুরকান, আমিনুল, সজিব, আরিয়ার, জমসেদ, বাচ্চু মিয়া, আক্কাছ মিয়া, শহিদ মিয়া, আলী হোসেনসহ প্রায় ৫০ জন ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন। এর মধ্যে ১ জনকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রাখা হয়েছে। আর গুরুতর অবস্থায় ৮ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করা হয়।
স্থানীয়রা জানায়, ভৈরব উপজেলার আগানগর গ্রামে জিল্লুর রহমান স্কুল অ্যান্ড কলেজের ম্যানেজিং কমিটি নিয়ে ও স্কুলের পাশে একটি বাজার রয়েছে। ওই বাজারে আধিপাত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গতকাল মঙ্গলবার বিকালে উপজেলার আগানগর ইউনিয়নের আনন্দ বাজারে আগানগর গ্রামের দক্ষিণপাড়া এলাকার সরুল্লা বাড়ি ও উত্তরপাড়া এলাকার আফিল উদ্দিন মিয়ার বাড়ি ও ব্যাপারী বাড়ির লোকজনের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এ সময় দুই পক্ষের সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়। এই ঘটনায় পুরো গ্রাম দুটি পক্ষে বিভক্ত হয়ে যায়। তাদের মধ্য আগানগর গ্রামের দক্ষিণপাড়ার সরুল্লা বাড়ির নেতৃত্ব দেন আগানগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি মমতাজ উদ্দিন। এছাড়া উত্তরপাড়ার ব্যাপারি বাড়ির নেতৃত্ব দেন ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম সুমন।
উত্তরপাড়ার এলাকার ব্যাপারি বাড়ির সাইফুল ইসলাম সুমন বলেন, জিল্লুর রহমান স্কুল অ্যান্ড কলেজের ম্যানেজিং কমিটি নিয়ে গত ৩ মাস যাবত দক্ষিণ পাড়ার লোকজন আমাদের সাথে ঝগড়া বাধানোর চেষ্ট করছে। স্কুলের বার্ষিক ক্রীয়া প্রতিযোগিতায় ও আমাদের এলাকার ছেলেদের মারধর করে তারা। মঙ্গলবার আমাদের এলাকার আক্কাছ মিয়াকে আনন্দ বাজারে দক্ষিণ পাড়ার লোকজন হঠাৎ মারধর করলে একটা বিবাদের সৃষ্টি হয়। পরে ওসি সাহেব এসে বিষয়টি সমাধান করে দিয়ে যায়। কিন্তু আজ সকালে আমাদের এলাকার লোকজন বাজারে যাওয়ার সময় দক্ষিণ পাড়ার লোকজন হঠাৎ দা, বল্লম, লাঠি, শোঠা নিয়ে তাদের ওপর অতর্কিত হামলা করে।
এ দিকে দক্ষিণপাড়া এলাকার সরুল্লা বাড়ি হিরা মিয়া বলেন, সকালের দিকে আমাদের পক্ষের লোকজন বাজারে যাওয়ার সময় উত্তরপাড়ার লোকজন হঠাৎ দেশীয় অস্ত্রসহ আমাদের হামলা করে মারধোর করে। পরে খবর পেয়ে উভয় পক্ষের লোকজন ফের সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
এ বিষয়ে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালের পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বুলবুল আহম্মদ জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় আজ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রায় ৫০ জন রোগী হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে ১ জনকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রাখা হয়েছে। আর গুরুতর অবস্থায় ৮ জনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, গতকাল সন্ধ্যায় আগানগর গ্রামে আধিপাত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দু'পক্ষের মাঝে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। পরবর্তীতে আজ বুধবার সকালে একই ঘটনার জেরে ফের দু'পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষের খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।