ভোট কারচুপি করে কেউ পার পাবে না : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী - দৈনিকশিক্ষা

ভোট কারচুপি করে কেউ পার পাবে না : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

ভোট কারচুপি করে কেউ পার পাবে না এবং এ ধরনের মনোবৃত্তি আমাদের রাজনৈতিক দলের নেই বলে মার্কিন প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দলকে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

বুধবার (১১ অক্টোবর) সচিবালয়ে পর্যবেক্ষক দলের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।  

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমি তাদের (পর্যবেক্ষক দলকে) বলেছি, আমাদের মিডিয়া পিপল একদম ফ্রি। তারা যে কোনো সংবাদ যে কোনো সময় ছাপিয়ে দেন। সেই ব্যাপারে আমরা কারও কণ্ঠরোধ করি না।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের তিন হাজারেরও বেশি দৈনিক সংবাদপত্র রয়েছে। এরপর রয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া। সেখানে তো নানা ধরনের সংবাদ দেওয়া হয়। কাজেই এখানে দুর্নীতি করে কিংবা ভোট কারচুপি করে কেউ পার পাবে বলে আমার মনে হয় না। সেই ধরনের মনোবৃত্তি আমাদের রাজনৈতিক দলের আর নেই।’

‘সবাই মনে করে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচন কমিশন তাদের তত্ত্বাবধানে একটা সুন্দর নির্বাচন উপহার দেবে, এই ছিল কথা’, যোগ করেন আসাদুজ্জামান খান কামাল।

মন্ত্রী বলেন, ‌‘তারা আমাদের কাছে নানা বিষয়ে জানতে চেয়েছেন। আমরা বলে দিয়েছি ভায়োলেন্স আমরা অনেক ফেইস করেছি। এখন প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ভায়োলেন্স ও টেররিস্ট ফ্রি এবং শান্তির সুবাতাস দেখছি আমাদের দেশে। প্রধানমন্ত্রী আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করেছেন। প্রধানমন্ত্রী রোল অব ল প্রতিষ্ঠা করেছেন।’

তিনি বলেন, ‘দেশের লোক সবসময় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ চায়, কোনোরকম মারামারি দেশের মানুষ পছন্দ করে না। এখানে ভায়োলেন্স হবে বলে আমরা মনে করি না।’

এই নির্বাচন কমিশন ৫ হাজার ৩০০টি নির্বাচন করেছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচন আয়োজনের জন্য আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী নির্বাচনের দায়িত্বে থাকে। নিরাপত্তা বাহিনী নির্বাচন কমিশনের অধীনে থেকে নির্বাচন সম্পন্ন করেছে।’

‘পুলিশ যথেষ্ট প্রশিক্ষিত, কীভাবে নির্বাচন ফেস করতে হয় সেই জ্ঞান তাদের রয়েছে। একই রকমভাবে বিজিবি, কোস্টগার্ড, আনসার নির্বাচনে ভূমিকা পালন করে। নির্বাচনে ছয় লাখের ওপর আনসার সদস্য পুলিশের পাশাপাশি মূল ভূমিকা পালন করবে। প্রয়োজন মতো নির্বাচন কমিশন সেনাবাহিনীও সহযোগিতা নেয়, আমরা তাদের সেটিও মনে করিয়ে দিয়েছি।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এই নির্বাচন আয়োজন করতে নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর সক্ষমতা আছে কি না, তারা তা জানতে চেয়েছিলেন। আমরা তাদের বিস্তারিত বলে দিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘তাদের জানিয়েছি আগে যেরকম সহিংসতা হতো এখন সেই সহিংসতা হবে না। আমরা মনে করি আমাদের উপমহাদেশে নির্বাচন আসলেই উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়।’

নির্বাচনে যারা অংশ নেবেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা তাদের নিরাপত্তা দিতে পারবে কি না এবং বিরোধী দল নির্বাচনে এলে সঠিকভাবে প্রচারণা চালাতে পারবে কি না- স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে এমন প্রশ্ন করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল।

জবাবে মন্ত্রী তাদের বলেন, ‘আমরা বলে দিয়েছি নির্বাচনের সময় রিটার্নিং অফিসার হচ্ছে সর্বময় ক্ষমতাধর ব্যক্তি, তার নেতৃত্বে তার এলাকার নির্বাচন হবে। নির্বাচনের সময় পুলিশ বাহিনী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়। ৯৯৯ নম্বরে ফোন করলে পুলিশ বাহিনী তৎপর থাকে। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী প্রশিক্ষিত, এখানে কোনো অসুবিধা হবে বলে আমরা মনে করি না। ৮০-৯০ এর দশকে সহিংসতা হতো, এখন আর এগুলো হয় না।’

বিএনপি নির্বাচনে না এলে সহিংসতা হবে কি না- জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমি তো মনে করি তারা নির্বাচনে আসবে। আমি মনে করি বাংলাদেশে সরকার বদল করতে হলে ইলেকশনে আসতে হবে। ইলেকশন ছাড়া বাংলাদেশে সরকার বদল করার কোনো উপায় নেই। ইলেকশনে তাদের আসতেই হবে, আমরা এটি মনে করি।’

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য তারা সংলাপে বসার জন্য প্রস্তুত আছেন। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সংবিধান আছে, সংবিধানের বাইরে আমাদের কথা বলার কোনো সুযোগ নেই।’

এর আগে দুপুর ১টা ৩৫ মিনিটে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বৈঠক শুরু হয়। মার্কিন প্রাক-নির্বাচন বিষয়ক পর্যবেক্ষক প্রতিনিধিদলের মধ্যে ছিলেন- যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি অর্থায়নে পরিচালিত ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের (আইআরআই) প্রতিনিধি বনি গ্লিক, জামিল জাফের, জোহানা কাউ ও কার্ল রিক এবং ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউটের (এনডিআই) মারিয়া চিন বিনতি আব্দুল্লাহ, মনপ্রিত সিং আনন্দ ও ক্রিগ হলস্টেড।

দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে উপস্থিত হয় প্রতিনিধির দল। পাঁচ মিনিট পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সভাকক্ষে প্রবেশ করেন তারা। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে পরিস্থিতি যাচাই করতে গত ৭ অক্টোবর ঢাকায় আসেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দলের সাত সদস্য।

আইআরআই ও এনডিআইয়ের হয়ে যৌথভাবে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ প্রাক-নির্বাচন সমীক্ষা মিশন পরিচালনা করবেন তারা। সাত সদস্যের প্রতিনিধিদল এবং তাদের সহায়তাকারীদের ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশে অবস্থান করার কথা রয়েছে।

দলটি বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন, সরকারি সংস্থা, রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ, নারী সমাজ, সুশীল সমাজ, বিভিন্ন সংস্থা এবং বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এবং ঢাকার বিদেশি মিশনের কূটনীতিকদের সঙ্গে কথা বলছে।

বিলুপ্ত হচ্ছে এনটিআরসিএ, নতুন আইনের খসড়া দেখুন - dainik shiksha বিলুপ্ত হচ্ছে এনটিআরসিএ, নতুন আইনের খসড়া দেখুন থানায় হামলা: দুই দিনের রিমান্ডে ১২ শিক্ষার্থী - dainik shiksha থানায় হামলা: দুই দিনের রিমান্ডে ১২ শিক্ষার্থী জাতীয় শোক দিবসে ভিডিয়োচিত্র তৈরি প্রতিযোগিতা - dainik shiksha জাতীয় শোক দিবসে ভিডিয়োচিত্র তৈরি প্রতিযোগিতা কোটা আন্দোলনে সহিংসতা: ১৪ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষতি প্রায় ৩২ কোটি টাকা - dainik shiksha কোটা আন্দোলনে সহিংসতা: ১৪ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষতি প্রায় ৩২ কোটি টাকা কোটা আন্দোলনে সংঘর্ষে নিহতদের স্মরণে দেশব্যাপী শোক আজ - dainik shiksha কোটা আন্দোলনে সংঘর্ষে নিহতদের স্মরণে দেশব্যাপী শোক আজ ফের বেসরকারি শিক্ষকদের বেতন ইএফটিতে দেয়ার উদ্যোগ - dainik shiksha ফের বেসরকারি শিক্ষকদের বেতন ইএফটিতে দেয়ার উদ্যোগ দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0036909580230713