আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর মৃত্যুবার্ষিকী আজ।
মওলানা ভাসানী ১৮৮০ খ্রিষ্টাব্দের ১২ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জের ধানগড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। সিরাজগঞ্জে জন্ম হলেও মওলানা ভাসানীর জীবনের বড় অংশ কেটেছে টাঙ্গাইলের সন্তোষে। তিনি কৈশোর-যৌবন থেকে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। দীর্ঘদিন তিনি তৎকালীন বাংলা-আসাম প্রদেশ মুসলিম লীগের সভাপতি ছিলেন।
মওলানা ভাসানী অধিকার বঞ্চিত অবহেলিত মেহনতি মানুষের অধিকার ও স্বার্থ রক্ষায় আজীবন নিরবচ্ছিন্নভাবে সংগ্রাম করে গেছেন। জাতীয় সংকটে জনগণের পাশে থেকে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতেন তিনি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে আদর্শিক ঐক্য ও রাজনৈতিক ঘনিষ্ঠতা ছিল তার। বাঙালি জাতিসত্তা বিকাশে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন মওলানা ভাসানী।
মওলানা ভাসানী ১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট গঠনকারী প্রধান নেতাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন। তিনি ১৯৬৪, ১৯৬৫, ১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দের আন্দোলন এবং ১৯৬৯ খ্রিষ্টাব্দের গণঅভ্যুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে মহান মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে মওলানা ভাসানী ভারতে চলে যান এবং প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের উপদেষ্টামণ্ডলীর সভাপতি হন। ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দের ২ এপ্রিল ঢাকায় পল্টনের জনসভায় চোরাচালানের বিরুদ্ধে আপসহীন মনোভাব ব্যক্ত করেন। ১৯৭৬ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়ারিতে ভারত গঙ্গার পানি একতরফাভাবে প্রত্যাহার এবং মরণফাঁদ ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণের প্রতিবাদে ১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা মিছিলের নেতৃত্ব দিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেন।
১৯৭৬ খ্রিষ্টাব্দের এইদিনে ঢাকার পিজি হাসপাতালে (বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। পরে টাঙ্গাইলের সন্তোষে তাকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়।