সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে চলমান আন্দোলনের মাঝেই মধ্যরাত থেকে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ক্যাম্পাস। রোববার (১৪ জুলাই) দিনগত মধ্যরাত থেকেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া একটি বক্তব্য ঘিরে উত্তাল হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস।
‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার-রাজাকার’ এই স্লোগানে হল থেকে বেরিয়ে এসে বিক্ষোভ করতে থাকেন শিক্ষার্থীরা।
রাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে বের হয়ে বটতলায় জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা কোটা বিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।
এক পর্যায়ে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলে দুই শিক্ষার্থীকে আটকে রাখা হয়েছে- এমন খবর ছাড়িয়ে পড়লে অন্যান্য হলের শিক্ষার্থীরা বটতলা থেকে মিছিল নিয়ে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের সামনে জড়ো হন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার, রাজাকার’ স্লোগানে উদ্বুদ্ধ হয়ে নিজেদের হলে এমন স্লোগান দেওয়ার পরিকল্পনা করেন ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা৷ পরে হলের একটি কক্ষ থেকে স্লোগান পুরো হলে ছড়িয়ে পড়ে৷ এ সময় শিক্ষার্থীরা সমস্বরে স্লোগান দিতে শুরু করলে পলিটিক্যাল ব্লক থেকে ৪৮তম ব্যাচের সিনিয়ররা এসে তাদের সবাইকে ডেকে হলের ডাইনিংয়ে নিয়ে যান।
এরপর শিবির সন্দেহে শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন তল্লাশি করা হয়। পরে হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক নাজমুল হাসান তালুকদারের উপস্থিতিতে ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা ক্ষমা চাইলে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
এই খবর ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন শিক্ষার্থীরা।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা জানান, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনের মধ্যেই বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের শিবির বানিয়ে মোবাইল তল্লাশি করার ঘটনা ন্যাক্কারজনক। এর প্রতিবাদেই বিক্ষোভের মাত্রা বেড়ে যায় শিক্ষার্থীদের।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক নাজমুল হাসান তালুকদার বলেন, আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছি।
অবশ্য এর আগে থেকেই বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীরা সমস্বরে ‘আমি কে, তুমি কে, রাজাকার, রাজাকার’ স্লোগান দিতে থাকেন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দিতে থাকেন।
সাম্প্রতিক চীন সফর নিয়ে গতকাল রোববার (১৪ জুলাই) প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে সংবাদ সম্মেলন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-নাতনিরা চাকরি পাবে, না কি রাজাকারের নাতি-নাতনিরা চাকরি পাবে?