কুড়িগ্রামের চিলমারীতে সরকারি নিদের্শনার তোয়াক্কা করছেন না মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। মনগড়া সময়ে অফিসে আসছেন তারা। এতে সেবাবঞ্চিত সাধারণ মানুষ। এজন্য দেশপ্রেম আর দায়িত্বজ্ঞানহীনতাকে দুষছেন সেবাগ্রহীতারা।
গতকাল সোমবার সকাল ৯ টা ১১ মিনিটে চিলমারী উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল কর্মকর্তার অফিস তালাবদ্ধ দেখা যায়। দুই একটি কক্ষে পরিচ্ছন্নকর্মী আর অফিস সহকারী ছাড়া বেশিরভাগ কর্মকর্তাদের অফিসে দেখা যায়নি।
অথচ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মাঠ পর্যায় সব কর্মকর্তাদের জরুরি পরিস্থিতি ছাড়া সকাল ৯ টা হতে ৯ টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত স্ব-স্ব অফিসে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। সরকারের এই নির্দেশনা শুধু কাগজ কলমেই সীমাবদ্ধ বাস্তবে উপজেলার সরকারি অফিসগুলো সরকারের সেই নিদের্শনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মনগড়া সময়ে অফিস করছেন। উপস্থিত কর্মচারীরা কর্মকর্তাদের উপস্থিতির ব্যাপারে কোন সদুত্তোর দিতে পারেননি। তবে কর্মকর্তাদের রক্ষা করতে বিভিন্ন অযুহাত দেন তারা। কর্মকর্তাদের দায়িত্বজ্ঞানহীনতায় দারিদ্র পীড়িত এ অঞ্চলের সেবা গ্রহীতারা সঠিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
সেবাগ্রহীতারা বলছেন, উপজেলার সিংহভাগ কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার মধ্যে অফিস ছেড়ে বেরিয়ে যান। আবার রোববার ১০ টা থেকে ১১টার দিকে প্রবেশ করেন কার্যালয়ে।
উপজেলার তথ্য কেন্দ্রের কর্মকর্তা শারমিন রহমান দেরিতে অফিসে আসার কথা স্বীকার করে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমি দশটার আগে অফিসে উপস্থিত হয়েছি।
উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা শাহানুর ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমি কুড়িগ্রাম থেকে অফিসে আসি তাই আমার আসতে দেরি হয়। এই বিষয়টি যদি আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে বলতে চান, বলতে পারেন সমস্যা নেই।
উপজেলা জনস্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা উত্তম কুমার সিং দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, নির্দেশনা আছে, জেলা অফিস থেকে বিষয়টি আমাকে জানিয়েছেন। আমি সবার সাথে বসে মিটিং করে হাজিরা খাতা তৈরি করছি। তবে নিজে দেরিতে আসার বিষয়ে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি তিনি।
জানতে চাইলে চিলমারীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুবুর রহমান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, সঠিক সময়ে অফিসে উপস্থিত থাকার নির্দেশনার বিষয়টি আমি জেনেছি এবং আমার উপজেলার সব কর্মকর্তা কর্মচারীদের জানানো হয়েছে। কিন্তু এরপরেও কেনো অফিসে দেরিতে আসছেন তা আমি অবশ্যই খতিয়ে দেখবো।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক সাইদুল আরীফ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, জেলার সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সকাল ৯ টা থেকে ৯ টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত বাধ্যতামূলক উপস্থিতি নিশ্চিত করতে মনিটরিং জোরদার করা হচ্ছে।